এলার্জির প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে হলে সবার প্রথমে যে জিনিসটা আপনাকে জানতে হবে সেটা সাধারণত এলার্জি সম্পর্কে। আপনারা জানলে অবাক হবেন যে এলার্জির জন্য দায়ী আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম। হ্যাঁ একেবারে ঠিক ধরেছেন যে ইমিউনিটি সিস্টেম আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং যে ইমিউনিটি সিস্টেম আমাদের বেঁচে থাকতে সাহায্য করে সেই ইমিউনিটি সিস্টেমের কিছু ভুলের কারণেই এই এলার্জির তৈরি হয়।
আমরা সহজ ভাষাতে আপনাদের এলার্জি সম্পর্কে বোঝাতে চাচ্ছি। মনে করুন যারা এলার্জিতে আক্রান্ত হয় তারা বিশেষ কিছু জিনিসে অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হন। এলার্জির ধরণের মধ্যে খাদ্যের মাধ্যমে যেই সমস্যাগুলো হয় সেগুলো সব থেকে বেশি। দেখুন অনেক সুন্দর একটি সবজি এবং বেগুন খাওয়ার ফলে এখান থেকে অনেক পুষ্টিগুণ আমাদের শরীরে অনেক কাজে আসে। কিন্তু কারো কারো শরীরের এমিউনিটি সিস্টেমে এই বেগুনকে খারাপ হিসেবে দেখা হয় অর্থাৎ বেগুন যখন সে খায় তখন বেগুনের যে গুনাগুন বা উপাদান গুলো শরীরে থাকে তার প্রত্যেকটি উপাদানগুলোকে সেই ইউনিটি সিস্টেম শরীরের জন্য খারাপ উপাদান হিসেবে চিহ্নিত করে।
এটা মূলত হয়ে থাকে ইমিউনিটি সিস্টেম এর ভুল বোঝার কারণে এবং যার কারণে সেই ইউনিটি সিস্টেম সেই বেগুনের থেকে যে উপাদান গুলো বের হয়েছে প্রত্যেকটি উপাদানকে নিঃশেষ করা পর্যন্ত লড়াই করতে থাকে। যার কারণে প্রত্যেকটি জায়গাতে এলার্জির তৈরি হয় এবং সেখান থেকে চুলকানি হতে পারে বা গোটা গোটা চুলকানি হতে পারে। এটা হচ্ছে এলার্জি আর এটা থেকে বাঁচার জন্য প্রাথমিকভাবে কি করা উচিত সে সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব।
এলার্জির ঘরোয়া চিকিৎসা পদ্ধতি
এলার্জির ঘরোয়া চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে একটি কথা সহজেই বলা যায় সেটা হচ্ছে সঠিক নিয়ম মানা। সঠিক নিয়ম মেনে আপনি যদি কোন কিছু করতে চান তাহলে সেটাতে সফল হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম থাকে। আর এই নিয়মের কথা যদি এলার্জির ক্ষেত্রে বলা হয় সেটা তো আরো বড় ব্যাপার। আপনি যদি এলার্জিকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে নিয়ম গুলো পুঙ্খানুপু রূপে পালন করতে হবে।সত্যি কথা বলতে ১০০% এলার্জি নির্মূল করার কোন ঔষধ বা পদ্ধতি এখন পর্যন্ত বের হয়নি তবে আপনি ৫০% থেকে ৮০% পর্যন্ত এলার্জি দূরে রাখতে পারবেন যদি নিজের সঠিক নিয়ম মেনে চলে। সবার প্রথমে সঠিক নিয়ম হচ্ছে যে জায়গাতে আপনি অবস্থান করবেন অর্থাৎ আপনার সোহাগ রুম থাকতে হবে সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং যে কাপড় গুলো আপনি পরিধান করবেন সেগুলো নিয়মিত পরিষ্কার এবং সেগুলোতে যাতে কোন ধরনের ধুলাবালি না থাকে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
অনেকের ক্ষেত্রে শোয়ার বালিশ এলার্জি হওয়ার মূল কারণ তাই তাদের ক্ষেত্রে শোয়ার বালিশ কে নিয়মিত পরিষ্কার এবং প্রতিবছর বালিশ পরিবর্তন করতে হবে। এর পাশাপাশি অনেকের ক্ষেত্রে খাবার পানি এলার্জি বৃদ্ধির অনেক বড় লক্ষণ তাই চেষ্টা করতে হবে সব সময় ফিল্টারের পানি বা মিনারেল পানি পান করতে এর মাধ্যমে ৫০% পর্যন্ত এলার্জি কমে যেতে পারে। এছাড়াও খাবারের অভ্যাসের পরিবর্তন । যে খাবারগুলো খেলে আপনার অ্যালার্জি বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই খাবারগুলো সম্পর্কে অবশ্যই আপনার ধারণা আছে।
তাহলে আজকে থেকে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করুন যে খাবারগুলো খেলে সমস্যা হচ্ছে সেই খাবারগুলো কখনোই খাবেন না আর এইভাবে আপনি যদি তিন মাস থেকে ছয় মাস নিয়ম মেনে চলেন তাহলে দেখবেন আপনার এলার্জি 50% থেকে ৮০ পার্সেন্ট এমনিতেই কমে গেছে কোন ধরনের ঔষধ ছাড়া। এরপরে আপনি একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন এর বাইরে কি করা যায় সে সম্পর্কে জানতে।
বর্তমানে আমাদের খাদ্যে প্রচুর পরিমাণে ভেজাল এবং আমাদের পরিবেশ প্রচুর পরিমাণে দূষিত হওয়ার কারণে আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেমের কিছু দিক পরিবর্তন হচ্ছে যার কারণে এই এলার্জির আবির্ভাব হচ্ছে। এখানে সবসময় সচেতন থাকা উচিত প্রত্যেকে যাতে করে এই এলার্জি শুরু থেকেই কম হয়।