ছোটবেলাতে তোতা পাখিকে ছোলা খেতে দেখতাম। সত্যি সেটা দেখতে খুব সুন্দর লাগতো কেন জানিনা তোতা পাখি গুলো খুব সুন্দর ভাবে কাঁচা ছোলা ছিলে খেয়ে ফেলত। সেই দেখাটার মধ্যে আলাদা একটা আকর্ষণ ছিল এবং যার কারণে এখন পর্যন্ত চোখের সামনে সেই দৃশ্যগুলো ভেসে ওঠে। তোতা পাখির সেই কাঁচা ছোলা খাওয়া তখন অতটা না বুঝলেও এখন বুঝতাম কেন কাঁচা ছোলা তার এত প্রিয় ছিলমানুষের ক্ষেত্রেও কাঁচা ছোলা খাওয়া অত্যন্ত উপকারী একটি জিনিস এবং সেটা খাওয়ার পেছনে কি যুক্তি আছে সে সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেল আপনাকে সাহায্য করবে। অবশ্যই আপনারা হয়তো ইতিপূর্বে কাঁচা ছোলার বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে অবগত হয়েছেন তবে আজকের এই আর্টিকেলে কাঁচা ছোলার বিভিন্ন গুনাগুন এবং খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে একত্রে অনেক তথ্য দেওয়া হবে।
সকালে এক মুঠো কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা
সাধারণত ১০০ গ্রাম ছোলা আছে প্রায় ১৭ গ্রাম আমিষ ও প্রোটিন। এখানে যদি বলতে হয় তাহলে আরো বলতে হয় যে এই সোলাতে প্রায় ৬৪ গ্রাম শর্করা এবং কার্বোহাইড্রেট রয়েছে পাঁচ গ্রাম । এইসব পুষ্টিগুণ যখন শুধুমাত্র ১০০ গ্রাম ছোলাতে আছে তাহলে সেই 100 গ্রাম ছোলা কেনই বা আমরা খাব না। এখানে যে পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট রয়েছে সেটা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য অত্যন্ত কার্য করে। তাই যারা ডায়াবেটিসের উপকারিতা পেতে চান তারা প্রতিদিন খালি পেটে ছোলা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এছাড়াও এই ছোলাতে আপনি ক্যালসিয়াম ও লৌহ পাবেন এছাড়াও ভিটামিন এ পাওয়া যাবে এই কাঁচা ছোলার মধ্যে।
কাচা ছোলা যৌনশক্তি বৃদ্ধিতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। জনশক্তি বৃদ্ধি করার জন্য কাঁচা ছোলার জুড়ি নেই তাই নিয়মিত কাঁচা ছোলা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এছাড়াও শ্বাসনালীতে জমে থাকা পুরনো কাশি বা কফ ভালো হওয়ার জন্য কাজ করে শুকনো ছোলা ভাজা। শুধুমাত্র যে কাঁচা ছোলার উপকারিতা আছে আর এর অন্য কিছুর উপকারিতা নেই এমন নয় ছোলা ও বুটের শাক শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কাঁচা ছোলা অত্যন্ত বড় ভূমিকা পালন করে। একটু প্রতিবেদন থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখানো হয় যে সকল অল্প বয়সী নারী বেশি পরিমাণে ফলিক এসিযুক্ত খাবার খান তাদের হাইপারটেনশন প্রবণতা কমে যায়। এক্ষেত্রে ছোলাতে প্রচুর পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড থাকে সেহেতু ছোলা খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ে আনা যায় খুব সহজে।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে কাঁচা ছোলা মেরুদন্ডের ব্যথা দূর করতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও ক্যান্সার প্রতিরোধেও কাঁচা ছোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যেটা কোরিয়ান গবেষকদের মতে প্রমাণিত হয়েছে। অতিরিক্ত ফলিক এসিড গ্রহণের মাধ্যমে নারীদের কোলন ক্যান্সার এবং রেক্টর ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে আসে কাঁচা ছোলা সেবনের মাধ্যমে।
কাঁচা ছোলা খাওয়ার নিয়ম
কাঁচা ছোলা খাওয়ার ধরা বান্ধা কোন নিয়ম নেই শুধুমাত্র চেষ্টা করতে হবে যে সময়ে আপনি একটু অবসর সময় কাটাচ্ছেন এবং আপনার পেট ফাঁকা আছে তখন আপনি এই কাঁচা ছোলা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলবেন। এছাড়াও ব্যায়াম করার পূর্বে অথবা ব্যায়াম করার পর্বে আপনি যদি কাঁচা ছোলা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন তাহলে সেটা আপনার শরীরের জন্য অনেক ভালো এবং উপকারী হবে।
কাঁচা ছোলা খেলে কি মোটা হওয়া যায়
অনেকে জানতে চেয়েছেন কাঁচা ছোলা খাওয়ার কারণে মোটা হওয়া যায় কিনা মূলত মোটা হওয়া বলতে এখানে সুস্থ শরীরের অধিকারী হওয়াকে বোঝানো হয়েছে। নিয়মিত কাঁচা ছোলা সেবনের ফলে অবশ্যই যাদের ওজন কম আছে তাদের ওজন বৃদ্ধিতে এই কাঁচা ছোলা অনেক বড় ভূমিকা পালন করবে। আপনারা যারা নিয়মিত কাঁচা ছোলা সেবন করতে চাচ্ছেন তারা অবশ্যই এই অভ্যাস গড়ে তুলুন এটা আপনাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী হবে।