ক্যান্সার নির্ণয়ের টেস্ট

পৃথিবীতে প্রায় 200 ধরনের ক্যান্সার আছে। এই 200 ধরনের ক্যান্সার প্রত্যেকেই প্রত্যেকের থেকে আলাদা। এগুলোর রগ নির্ণয় করতে যেমন আলাদা আলাদা পরীক্ষা করতে হয় ঠিক তেমন চিকিৎসা পদ্ধতি ও আলাদা আলাদা। তাই যদি একযোগে কেউ জানতে চায় ক্যান্সারের সঠিক চিকিৎসা কি তাহলে বলব তার প্রশ্নটিই ভুল হয়েছে। সঠিকভাবে আলাদা করে জিজ্ঞাসা করলে ভালো হয় যে ওই ক্যান্সারের চিকিৎসা কি। আজকে আমরা জানার চেষ্টা করব বিভিন্ন ক্যান্সারের জন্য কোন কোন টেস্ট করাতে হয়।মূলত ২০০ টির বেশি ক্যান্সার বর্তমানে পৃথিবীতে আছে তবে আমাদের কাছে যে ক্যান্সার গুলো একেবারেই পরিচিত এবং যে ক্যান্সারের কারণে আমাদের প্রিয় জনকে আমরা হারিয়েছি সেই ক্যান্সারের টেস্ট সম্পর্কে আমরা জানব। এগুলো জানা অত্যন্ত জরুরি ব্যাপার তার কারণ হচ্ছে এগুলো যদি আমাদের মাথায় থাকে তাহলে বিপদের সময় অনেক কিছু আমাদের কাছে সহজ হয়ে যাবে।

ফুসফুস ক্যান্সারে কি কি পরীক্ষা করতে হয়

সাধারণত প্রাথমিক লক্ষণ গুলোর মাধ্যমে যখন চিকিৎসক এবং রোগী উভয়ে বুঝতে পারে তার ফুসফুসের ক্যান্সার হয়েছে তারপরে কিছু টেস্টের মাধ্যমে সেটা নিশ্চিত হতে হয়। ফুসফুস ক্যান্সারের ক্ষেত্রে সবার প্রথমে যে টেস্ট করানো হয় সেটা হচ্ছে এক্সরে। এটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং সবথেকে বেশি কার্যকরী একটি পরীক্ষা ফুসফুস ক্যান্সারের ক্ষেত্রে। এরপরে সিটি স্ক্যান করানো হয় এবং অধিকতর সূক্ষ্মভাবে ক্যান্সারে কোষ নির্ণয়ের জন্য এই সিটি স্ক্যান ব্যবহার করা হয়। এরপরে যেটা করা হয় সেটা হচ্ছে স্পটাম সাইটোলজি টেস্ট করানো হয়। রোগীর কফ এর স্যাম্পল নেওয়া হয় এবং সেখান থেকে পরীক্ষা করা হয় সেখানে ক্যান্সারের ভাইরাস আছে কিনা।

প্রোস্টেট ক্যান্সারে কি কি পরীক্ষা করতে হয়

প্রোস্টেট ক্যান্সার এর পরিমাণ আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বর্তমানে এমন রোগীর সংখ্যা অনেক। যারা এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার করা দরকার আছে। সাধারণত ডিজিটাল রেক্টাল একটামিনেশন বা ডিআরই রোগীর মলদ্বারে গ্লাভস পরিণত আঙ্গুল প্রবেশ করিয়ে যেকোনো অস্বাভাবিকতা আছে কিনা সেটা নিম্নের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হয়। এরপরে করা হয় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা যেখানে রক্তের মাধ্যমে রোগের এন্টিজেন পরীক্ষা করা হয় এতে ক্যান্সারের অবস্থান কেমন আছে সেই সম্পর্কে অবগত হওয়া যায়। এরপরে করা হয় ট্রান্সরেক্টাল বাক্সি অর্থাৎ সেখানে উপস্থিত টিস্যু বা কোষে কি পরিমানে ক্যান্সারের ভাইরাস আছে সেটা নির্ণয় করতেই মূলত এটা করা হয়।

কোলন ক্যান্সারে কি কি পরীক্ষা করতে হয়

কলম ক্যান্সারের সবার প্রথমে করতে হয় কোলোনোস্কপি। এটা মলদার দিয়ে প্রবেশ করানো একটি পরীক্ষা যার মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গাতে বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন চিহ্নিত করা হয় এবং বিভিন্ন ক্ষত নিশ্চিত করা হয়। এরপরে করা হয় ব্লাড টেস্ট যেটাকে সহজ ভাষায় বলতে গেলে সাধারণ মানুষকে অন্তত তিন বছর অন্তর অন্তর একবার করানো উচিত। এরপরে বায়োপসি টেস্ট করানো হয়।

জরায়ুর মুখের ক্যান্সার হলে কি কি পরীক্ষা করতে হয়

বর্তমানে মেয়েদের জন্য অত্যন্ত সাংঘাতিক একটি রোগের নাম হচ্ছে জরায়ুর মুখের ক্যান্সার। প্রাথমিক পর্যায়ে এই ক্যান্সারের লক্ষণ গুলো দেখা দিলে একজন চিকিৎসক অবশ্যই এইচপিভি টেস্ট করতে বলবেন। এখানে জরায়ুর মুখের ক্যান্সারের জন্য দায়ী হিউম্যান পাপিলোমা ভাইরাস পরীক্ষার মাধ্যমে এই ক্যান্সারকে সনাক্ত করা হয়। এরপরে রোগীকে শুইয়ে স্পেকুলামের সাহায্যে জরয় মুক্তি একটু দেখা হয় এবং এখান থেকে অল্প একটি রস নিয়ে মাইক্রোস্কোপের মাধ্যমে পরীক্ষা করে দেখা হয় ক্যান্সারের কোচ আছে কিনা এবং এটি হচ্ছে পেপ টেস্ট। এর পাশাপাশি কলোনস্কপি করানো হয় অর্থাৎ জরায়ু ও জরায়ুর মুখে পরিবর্তন বোঝা যায় এই টেস্টের মাধ্যমে।ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে সব থেকে বড় বিষয় হচ্ছে সঠিক সময় চিকিৎসা করা। যেটা অধিকাংশ রোগীর ক্ষেত্রেই সম্ভব হয় না তাই আমরা চেষ্টা করব যেকোনো ধরনের লক্ষণ বুঝতে পারার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যেতে ‌।