৮ মাসের গর্ভবতী মায়ের যত্ন

আপনাদের সকলকে স্বাগতম জানাই আমাদের আজকের এ আর্টিকেলে। আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করতে যাচ্ছি ৮ মাসের গর্ভবতী মায়ের যত্ন সম্পর্কে। মায়ের দেহ থেকে পুষ্টি গ্রহণ করেই একটি গর্ভের ভ্রূণ ও ধীরে ধীরে বৃদ্ধি লাভ করে এবং মানব শিশুকে পরিণত হয়। তাই এ সময়ে একজন মায়ের প্রচুর পরিমাণে যত্নের প্রয়োজন হয়।

মনে রাখতে হবে একজন সুস্থ মা জন্ম দিতে পারে একজন সুস্থ সন্তানকে। একটি শিশু প্রায় ২৮০ দিন পর তিন থেকে ৩.৫ কেজি ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করে থাকে। মাতৃগর্ভে ভ্রূণের বৃদ্ধিতে মায়ের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার ইতিবাচক ও নই ইতিবাচক প্রভাব পড়ে থাকে। এর কারণ হলো সকল গর্ব অবস্থায় কম বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।

মা তার নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও একটি সুস্থ সন্তানকে জন্ম দিতে চান। তাই গর্ভধারণের পর থেকে গর্ভবতী মায়ের শারীরিক ও মানসিক বিশেষ পরিচর্যার প্রয়োজন হয়। এতে করে মা শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকেন এবং নির্দিষ্ট সময় কোন জটিলতা ছাড়া একটি সুস্থ শিশুর জন্ম দিতে সফল হন।

গর্ভবতী মায়ের যত্ন

বেশিরভাগ গর্ভবতী মাকে তার স্বাস্থ্য সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। শিশু জন্ম মুহূর্ত থেকে শুরু করে জন্মগ্রহণ পর্যন্ত মাতৃ গর্ভে অবস্থান করে থাকে। এ সময় একটি ভ্রুনকোষ একটি পূর্ণাঙ্গ শিশুকে পরিণত হয় মায়ের গর্ভের মধ্যেই। তাই এ সময়ে মায়ের বিশেষ ভাবে যত্ন নিতে হবে।

মায়ের যত্ন এবং পুষ্টিকর খাবারদাবারের মধ্য দিয়ে একটি শিশু সুস্থ স্বাভাবিক ভাবে জন্ম নিতে পারে। এ সময়টিতে মা নিজে ছাড়াও পরিবারের সকলের উচিত গর্ভবতী মায়ের সেবা যত্ন করা।

মায়ের খাদ্য

গর্ভবতী মায়ের খাদ্য সুষম হওয়া আবশ্যক। শারীরিকভাবে যত্নের পাশাপাশি মায়ের খাদ্য তালিকা ও একটি যত্নের অংশ। কারণ মা যদি সঠিকভাবে পুষ্টিকর খাবার না খায় তাহলে সে কখনোই সুস্থ একটি সন্তানের জন্ম দিতে পারবে না। তাই মায়ের যত্নের পাশাপাশি খাদ্যের দিকটাও খেয়াল রাখা প্রয়োজন।

সুষম খাদ্যের সব কয়টি খাদ্য উপাদান পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে এবং পরিবেশনের পরিমাণও থাকে। তাই গর্ভবতী মায়ের খাদ্যে যে উপাদানটি যে পরিমাণে থাকা আবশ্যক তা এখন আমরা আলোচনা করব।

প্রোটিন

৮ মাসের গর্ভবতী মায়ের জন্য প্রোটিনের বিশেষভাবে প্রয়োজন। গর্ভবতী মায়ের জরায়ু প্লাসেন্টা আম্বেলিকাল কর্ড স্তনের বৃদ্ধি হিমোগ্লোবিন রক্ত রস ভ্রুনের বিকাশ মান অঙ্গ কলায় প্রোটিন সংশ্লেষণ ও সঞ্চয়ের কারনে গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিকের তুলনায় অধিক পরিমাণে প্রোটিনের প্রয়োজন পড়ে। সাধারণত মাছ মাংস ডিম দুধ ডাল থেকে আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে পারবো।

ক্যালোরি

একজন গর্ভবতী মায়ের জননো অঙ্গের বৃদ্ধি বিকাশ এবং ভ্রূণের বিপাক হার মায়ের সাথে যুক্ত হওয়ায় মৌল বিপাক হার বৃদ্ধি পায় এসব কারণে গর্ভধারণের তিন মাস পর থেকে অতিরিক্ত তিনশ ক্যালরি খাদ্য গ্রহণ করা আবশ্যক। ক্যালরিযুক্ত খাবার আমরা সাধারণত ভাত রুটি চিনি গুড় ইত্যাদি থেকে পেয়ে থাকি।

খনিজ লবণ

ভ্রুনের হাড়ের গঠন ও দৃঢ়তার জন্য ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস দরকার হয়। গর্ভাবস্থায় দৈনিক ১০০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম আবশ্যক যার জন্য দৈনিক এক গ্লাস দুধ ৫০ গ্রাম ছোট মাছ খেতে হবে।

পানি

একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য দৈনিক 10 থেকে 12 গ্লাস পানি পান করা আবশ্যক।

পোশাক

একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য সুতি কাপড়ের ঢিলে ঢালা পোশাক ব্যবহার করতে হবে। এছাড়াও এ সময়ে হিল জুতা পরিহার করতে হবে।

ভ্রমণ

একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য গর্ভধারণের প্রথম এবং শেষ তিন মাসে ভ্রমণ করা একেবারেই উচিত নয়। ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমন থেকেও বিরত থাকতে হবে। তবে ভ্রমণ করার যদি বিশেষ প্রয়োজন হয় তাহলে গর্ব অবস্থায় ৪ থেকে ৬ মাস এ সময়টাতে ভ্রমণ করা ভালো।

গোসল

একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য প্রতিদিন হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করা আবশ্যক।

আশা করি আপনারা আমাদের আর্টিকেল থেকে জেনে নিতে পেরেছেন আট মাসের গর্ভবতী মায়ের যত্ন সম্পর্কে যাবতীয় সকল তথ্যগুলো।