লিভারের যে বড় ধরনের সমস্যা আছে তার মধ্যে একটি সমস্যা হচ্ছে লিভার সিরোসিস। এটা এমন একটি রোগ যদি কারো শরীরে এই সমস্যা দেখা যায় তাহলে সেটা অত্যন্ত ভয়ানক একটি সমস্যা। সারা জীবন ধরে এই সমস্যা অনেকে বয়ে বেড়াতে হয় এবং অনেকেই এই সমস্যার কারণে মৃত্যুবরণ করে। এই মরণঘাতি রোগ সম্পর্কে আমরা বেশিরভাগই অজ্ঞাত তবে আজকের এই আর্টিকেল থেকে আমরা অবশ্যই এই সম্পর্কে জানতে পারব এবং নিজের পরিবার ও সমাজকে জানাতে পারবো।
সাধারণত মানব দেহের যে লিভার আছে তাদের কোষ কলা অত্যন্ত নরম এবং মসৃণ হয়ে থাকে এবং এর ফলে কোষগুলো শক্ত ও দানাদার হয়ে ওঠে। আস্তে আস্তে এটা লিভারের কার্যক্ষমতাকে কমাতে থাকে এবং এইভাবেই লিভারকে পুরোপুরি অক্ষম করে দিতে পারে এই লিভার সিরোসিস নামের রোগ। এটা অত্যন্ত ভয়ানক একটি রোগ তাই এই রোগ থেকে মুক্তি পাবার জন্য অবশ্যই আমাদের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে এবং এই সম্পর্কে সকলকে জানান দিতে হবে।
লিভার সিরোসিস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়
লিভার সিরোসিস থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে প্রতিরোধ। আমি বলছিনা লিভার সিরোসিসের কোন চিকিৎসা নেই তবে চিকিৎসার আগে যে জিনিসটা আমরা পড়তে পারি সেটা হচ্ছে প্রতিরোধ তবে চিকিৎসা সম্পর্কে যদি আপনারা জানতে চান তাহলে অবশ্যই আমরা আপনাদের সেই তথ্য দেব। এটা অনেক জটিল একটি প্রক্রিয়া এবং এই চিকিৎসার যে ফলাফল আসে সেটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হতাশার। সাধারণত বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এর যে চিকিৎসা দেওয়া হয় সেটা উপসর্গ ভিত্তিক চিকিৎসা যেমন পেটের পানি অপসারণ করা হয় বা রক্ত বমি রোধ করার জন্য চিকিৎসা দেওয়া হয়।
তবে লিভার সিরোসিস সুনির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা যদি থাকে সেটা হচ্ছে লিভার প্রতিস্থাপন এবং এই লিভার প্রতিস্থাপন সাধারণ মানুষের পক্ষে করানো কখনোই সম্ভব নয়। এবং এই লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য যে লিভার গ্রহণ করা হয় সেটা আমাদের দেশের মানুষের পক্ষে এই লিভার দাতা খুঁজে পাওয়া অত্যন্ত কষ্টকর। এ বিষয়গুলো অত্যন্ত জটিল তবে আপনি যদি আগে থেকেই লিভার সিরোসিস সম্পর্কে সচেতন থাকেন এবং তার প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেন তাহলে সেটা সবথেকে ভালো পদ্ধতি।
লিভার সিরোসিস কেন হয়
আমাদের প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য অবশ্যই জানতে হবে লিভার সিরোসিস হওয়ার কারণ। আমরা একটি তথ্যচিত্র দেখেছি যেখানে এই সম্পর্কে ভালো একটি ধারণা দেওয়া আছে আশা করব আপনারা আমাদের এখান থেকে সেই ধারণার আলোকে কিছু হলেও জানতে পারবেন। যদি উন্নত বিশ্বের কথা বলা হয় তাহলে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার রোগীদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা ছিল অ্যালকোহলিক। প্রচুর পরিমাণে মদ্যপানের কারণে তারা লিভারকে এইভাবে নষ্ট করে দিয়েছে এবং আস্তে আস্তে মৃত্যুবরণ করেছে।
এখন আসি আমাদের দেশের কথা বা আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশ এর কথা যেখানে লিভার সিরোসিসের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে হেপাটাইটিস বি ও হেপাটাইটিস সি এবং হেপাটাইটিস ডিভাইরাস এর দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণের কারণে। সাধারণত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরে আমাদের যে কাজটি করতে হবে সেটা হচ্ছে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে কিন্তু আমরা সেই কাজটি না করে বসে থাকি যার কারণে এটা আস্তে আস্তে আমাদের লিভার সিরোসিসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
লিভার সিরোসিস রোগী কত দিন বাঁচে
আপনারা একটি প্রশ্ন করেছেন লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত রোগী কত দিন বাঁচতে পারে এই প্রসঙ্গে। আমরা আপনাদের জানিয়ে রাখি সাধারণত লিভার সিরোসিসি আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে বিষয়টি সরাসরি মৃত্যু ডেকে আনে এমন নয় এখানে উপসর্গমূলক যে চিকিৎসা প্রদান করা হয় সেখানে রোগী দীর্ঘদিন বাঁচতে পারে। কবে মৃত্যুবরণ করবে এটা কেউ বলতে পারেনা তবে যতদিন বাঁচবে অনেক কষ্ট করে তাকে বাচতে হবে এবং যেকোনো অবস্থাতেই চিকিৎসা ছাড়া সে থাকতে পারবে না এটা নিশ্চিত।