টাইফয়েড জ্বর অত্যন্ত সাংঘাতিক একটি রোগ। সাধারণত বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টাইফয়েড রোগীদের অনেক বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এবং এই টাইফয়েডের জীবাণু যাদের রক্তে পাওয়া যায় তাদের রক্ত থেকে এই টাইফয়েডের জীবাণু খুব সহজে যেতে চায়না। আজকে আমরা জানার চেষ্টা করব এই টাইফয়েডের ক্ষতিকারক দিকগুলো যেগুলো একজন টাইফয়েডে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে হতে পারে। এছাড়াও এই টাইফয়েড হলে কিভাবে লক্ষণ দেখে সেটা বুঝতে পারবেন এবং টাইফয়েড রোগের জন্য কিভাবে চিকিৎসা করতে হবে সে সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব।
সাধারণত টাইফার রোগে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে যে ক্ষতিগুলো হয়ে থাকে সেগুলো হচ্ছে পরিপাকতন্ত্র থেকে রক্তক্ষরণ। টাইফার রোগের জন্য রোগীদের শরীরের অভ্যন্তরে অনেক সমস্যা হয় যেগুলো বাইরে থেকে বোঝা যায় না। অনেক সময় রোগীদের অগ্নাশয় প্রদাহ শুরু হয় এবং মেরুদন্ডের বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ তৈরি হতে পারে টাইফয়েডের কারণে। এছাড়া টাইফয়েডের কারণে মস্তিষ্কের প্রদাহ এবং পিত্তথলিতে সংক্রমণ তৈরি হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোড়া এবং স্নায়বিক সমস্যা তৈরি হতে পারে এই টাইপ হোয়েডের কারণে। অনেক রোগীদের ক্ষেত্রে কিডনিতে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
টাইফয়েড এর লক্ষণ
সাধারণত টাইফয়েড কি আমরা জ্বর হিসেবে চিনি এবং এই টাইফয়েড জ্বর যে কোন বয়সের যেকোনো রোগীদের শরীরেই হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে টাইফয়েডে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি তার কারণ হচ্ছে এই অবস্থাতে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। এমন কিছু লক্ষণ আছে যার মাধ্যমে টাইফার্ট চিহ্নিত করা যায় চলুন সেই টাইফয়েডের লক্ষণগুলো সম্পর্কে আমরা জানার চেষ্টা করি।সাধারণত টাইফয়েড এর জীবাণু শরীরে প্রবেশ করার ১০ থেকে ১৪ দিনে পরেই লক্ষণগুলো দেখা যায় তবে অত্যন্ত সূক্ষ্মতার সঙ্গে এবং তীক্ষ্ণতার সঙ্গে এই লক্ষণগুলো চিহ্নিত করতে হবে রোগীকে তাহলে শুরু দিকে টাইফার ধরা পড়বে।
টাইফয়েড রোগীদের ক্ষেত্রে হঠাৎ করেই জ্বর আসবে এবং জ্বরে তাপমাত্রা এতটা বেশি হবে যে সেটা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত টানা জ্বর হতে পারে। যার শুধুমাত্র আসবে এমন নয় ঝড়ের সঙ্গে আপনি মাথা ব্যথা এবং শরীর ব্যথা এছাড়াও শারীরিক দুর্বলতা দেখতে পাবেন টাইফয়েডে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে।টাইফয়েড আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক সমস্যা হচ্ছে ক্ষুধা মন্দা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য অর্থাৎ খাবারের প্রতি আগ্রহ কমে যাবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যর সৃষ্টি হবে। যে সকল শিশুরা টাইফয়েডে আক্রান্ত হয় তাদের ক্ষেত্রে ডায়রিয়া হওয়া এবং বমি হওয়ার স্বাভাবিক ব্যাপার।
টাইফয়েডের আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণের মধ্যে রয়েছে দ্য ম্যাজমেস করা সহ রোগীর কফ ও কাশি হতে পারে এবং হঠাৎ করে শরীরের গিরায় গিরায় প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হতে পারে।টাইফয়েড রোগের একটি বড় লক্ষণ হচ্ছে রোগীর পেটে এবং পিঠে গোলাপি গোল আকার বের হওয়া। এটা যদি কারো ক্ষেত্রে হয় তাহলে নিশ্চিত ভাবে তার টাইফয়েড হয়েছে আপনি ধরে নিতে পারেন আবার অনেকের ক্ষেত্রে জ্বরের সঙ্গে কাশি হওয়া এবং হার্ট রেট কমে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে। আশা করছি এই ধরনের উপসর্গ যদি কারো শরীরে দেখা দেয় তাহলে তিনি বাড়িতে বসে না থেকে একজন ভালো চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন।
টাইফয়েড হলে করণীয়
টাইফার রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি বেশ কয়েকটি রয়েছে। বর্তমানে টাইফয়েড নিয়ে আরো গবেষণা চলছে চেষ্টা করা হচ্ছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই রোগকে নির্মল করা যায় ততটাই ভালো কিন্তু এখন পর্যন্ত এমন কোন পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়নি। তবে বাংলাদেশের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী প্রধানত এন্টিবায়োটিক এর মাধ্যমে ডাক্তারগণ টাইফয়েডের চিকিৎসা করেন। সাধারণত নির্দিষ্ট সময় চিকিৎসা শুরু করার পরে এই টাইফয়েড এর জ্বর কমতে পাঁচ দিন লাগতে পারে। এছাড়াও রোগীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত জ্বর হলে গার্মেন্টস করে দেওয়া অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। কোনভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে দেওয়া যাবে না রোগীকে।