ক্যান্সার কি ছোঁয়াচে

আমি যতটুকু জেনেছি ক্যান্সার কোন ছোঁয়াচে রোগ নয় এটা সংক্রমণের মাধ্যমে মানব শরীরের অভ্যন্তরে সৃষ্টি হয়। এটা মূলত অনিয়ন্ত্রিত কোষ যেটা বহন করে অত্যন্ত ক্ষতিকারক জীবাণ ু যে জীবাণু মানব শরীরের ভালো কোষগুলোকে ধ্বংস করতে পারে। যারা ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হন তাদের সাধারণত এই রোগের বিরুদ্ধে প্রচুর যুদ্ধ করতে হয় বেঁচে থাকার জন্য। খুব কম মানুষই এই যুদ্ধে জয়ী হতে পারেন তাছাড়া যারা আছেন তারা আস্তে আস্তে এই যুদ্ধে পরাজিত হয়ে একদিন মৃত্যুবরণ করেন।

তবে যারা ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের স্বজন এবং পাড়া-প্রতিবেশী আছেন তাদেরকে বলব ক্যান্সার কোন ছোঁয়াচে রোগ নয়। অর্থাৎ আপনারা যদি ভয় পান ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে যেতে তাহলে বলব এটা একেবারেই ভুল হবে তার কারণ হচ্ছে তার রোগ কোন ছোঁয়াচে রোগ নয় যেটা আপনি তার সংস্পর্শে গেলে আপনার হবে। তাই আপনি চাইলেই ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর সেবা করতে পারেন এবং তার সংস্পর্শে যেতে পারেন এতে আপনার ওই রোগীর শরীর থেকে কোন ধরনের ছোঁয়াচে রোগ হবে না এটা নিশ্চিত।

ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত রোগীদের প্রচুর যত্নের প্রয়োজন হয় তাই এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের পরিবারের সদস্যদের প্রচুর পরিমাণে মনোবালের প্রয়োজন পড়ে। অবশ্যই মৃত্যু নিশ্চিত জানার পরেও অনেকেই বেঁচে থাকতে চায় এবং অনেকেই আঁকড়ে ধরে থাকতে চাই নিজের পরিবারকে কিন্তু সেটা পরিশেষে সম্ভব হয় না। নিচে আমরা ক্যান্সারের আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করব।

 

বাংলাদেশ ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা

ক্যান্সার রোগের চিকিৎসায় সরাসরি কোন ঔষধ নেই সেটা আমরা সকলেই জানি। বেশ কয়েকটি চিকিৎসার সমন্বয়ে গোটা বিশ্বে ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা করা হয় এবং এখান থেকে সুস্থ হওয়ার পার্সেন্টেজ খুব কম থাকে। তারপরেও যারা সুস্থ হয়ে ফিরে আসতে পারেন তারা আল্লাহ তাআলার অশেষ রহমতে সুস্থ হয়ে জীবন যাপন করতে পারেন। বাংলাদেশে ক্যান্সারের প্রচলিত যে চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে সেই চিকিৎসা ব্যবস্থাতে সবার প্রথমে গুরুত্ব বহন করে ক্যান্সারের স্টেজ।

এখানে যদি প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সারের স্টেজ ধরা পড়ে তাহলে তিনটি চিকিৎসার সমন্বয়ে ক্যান্সারের চিকিৎসা প্রদান করা হয়। প্রথম এবং প্রাথমিক চিকিৎসা হচ্ছে কেমোথেরাপি সেটা কোন কোন রোগীর ক্ষেত্রে একবার দেওয়া লাগতে পারে আবার কোন কোন রোগীর ক্ষেত্রে কয়েকবার দেওয়া লাগতে পারে। কেমোথেরাপি দেওয়ার পরে জেতার প্রয়োজন পড়ে সেটা হচ্ছে রেডিওথেরাপি তবে প্রত্যেকটি রোগের ক্ষেত্রে রেডিও থেরাপির প্রয়োজন নাও করতে পারে।

কেমোথেরাপি যাওয়ার পরে রোগীদের অপারেশন করা হয় অর্থাৎ যে অঙ্গে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়েছে বা যে অংশে ক্যান্সারের কোষ আছে সেই অংশটুকু শরীর থেকে অপসারণ করানোর অপারেশন।তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে এমন এমন অঙ্গে যদি ক্যান্সার আক্রান্ত হয় যেটা অপারেশন করা সম্ভব নয় তাহলে সে রোগীর ক্যান্সার থেকে মুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম থাকে।

সফল অপারেশনের পরে সেই রোগীকে পুনরায় কেমো থেরাপি দেওয়া হয়। এগুলো অত্যন্ত ব্যয়বহুল চিকিৎসা এবং সবথেকে বড় ব্যাপার হলো ব্যয়বহুল চিকিৎসার পাশাপাশি এগুলো রোগীর শরীরকে এতটাই দুর্বল করে দেয় যে শক্তিশালী রোগী না হলে দুর্বলতার কারণেও তার শরীর থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে যাবে। তাই এই সকল কেমোথেরাপি দেওয়ার পূর্বে রোগীকে শক্তিশালী হতে হবে এবং প্রয়োজন পড়লে রোগীকে রেডিও থেরাপি দেওয়া হয়। ক্যান্সারের চিকিৎসায় বাংলাদেশের রেডিওথেরাপি হচ্ছে সর্বশেষ ধাপ এবং আশা করা যায় এই তিনটি ধাপ অতিক্রম করার পর একজন ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরতে পারবেন।

ক্যান্সার রোগের চিকিৎসার খরচ বাংলাদেশ

যারা ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়, সেই সকল রোগীদের চিকিৎসার খরচ প্রচুর পরিমাণে করতে হয়। বেশিরভাগ পক্ষেই পরিবারের সকল সদস্য মিলেও ক্যান্সার রোগীর চিকিৎসা করাতে পারে না তাদের প্রয়োজন হয় সাহায্যের। তা আপনার আশেপাশে যদি এমন ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী আপনি পান তাহলে সব সময় নিজের সাধ্যমত চেষ্টা করবেন তাদের পাশে থাকতে।