ডায়াবেটিসের নরমাল রেঞ্জ

সাধারণ সুস্থ মানুষের শরীরে ব্লাড সুগার থাকে। আরো যে খাবারগুলো খেয়ে থাকি সেই খাবারগুলোর মধ্যে যে শর্করা থাকে সেই শর্করাগুলো পাচন প্রক্রিয়া ভেঙে চিনিতে রূপান্তর হয়। এবং চিনি রক্তে প্রবেশ করে এবং রক্তে বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে এবং আস্তে আস্তে সেটা আমাদের শরীরের বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়। এবং অতিরিক্ত চিনি চর্বি আকারে আমাদের শরীরে মজুদ থাকে।

কিন্তু যখন এই চিনি পরিমাণ খুব বেশি হয়ে যায় তখন সেটা ডায়াবেটিসের রূপান্তর নিতে পারে। অর্থাৎ আমাদের শরীরে যদি ব্লাড সুগারের পরিমাণ অত্যাধিক হয়ে যায় তাহলে সেটা ডায়াবেটিস যদি নরমাল থাকে তাহলে সেটা কোন ডাইবেটিস নয়। এখন অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন ডায়াবেটিস সাধারণত কত হলে নরমাল। আমার জানা মতে বাংলাদেশে প্রায় পাঁচ ধরনের পদ্ধতি আছে যার মাধ্যমে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা হয় এবং প্রত্যেকটি পদ্ধতিতে ডায়াবেটিসের নরমাল রেঞ্জ আলাদা আলাদা। তাই এখানে আলাদাভাবে বলা যাচ্ছে না নরমাল রেঞ্জ কত তবে আমি আপনাকে একটি উদাহরণ দিচ্ছি মনে করুন খাওয়ার আগে যদি কেউ ডায়াবেটিস পরীক্ষা করে তাহলে তার কত হলে সেটা নরমাল রেঞ্জ।

আমেরিকার ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশনের একটি তথ্য মতে এইচ বি এ ওয়ান সি যেটা ডায়াবেটিসের ঘর মাপার একটি টেস্ট সেখানে যদি এর মান ৫.৭ এর নিচে থাকে তাহলে স্বাভাবিক ধরা যায়। যদি এর মান ৬.৫ এর বেশি থাকে তাহলে ডায়াবেটিস আছে বলে ধরা হয়। তাছাড়া প্রথম বার ডায়াবেটিস মাপাচ্ছেন তারা এ বিষয়টি খেয়াল করবেন আপনাদের এই ডায়াবেটিসের মান ৫.৭ এর নিচে থাকে কিনা। যদি এর মান ৫.৭ এর নিচে থাকে তাহলে স্বাভাবিক ধরা যায় যদি এর মান ৬.৫ এর বেশি থাকে তাহলে ডায়াবেটিস হতে পারে। তবে এখানে এইচ বি এ১ সি টেস্ট সকলে করার না যার কারণে সঠিক তথ্য পান না সবার প্রথমে এইচ বি এ ওয়ান সি টেস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায় ডায়াবেটিস সম্পর্কে।

ডায়াবেটিস হয়েছে কিভাবে বুঝবেন

সাধারণত বিভিন্ন উপসর্গের মাধ্যমে ডায়াবেটিস সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়। সবার প্রথমে লক্ষ্য রাখতে হবে এই উপসর্গগুলো মানব শরীরে আছে কিনা যদি উপসর্গ গুলো মানব শরীরে থাকে তাহলে তাকে পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হবে ডায়াবেটিস আছে কিনা। আমরা সচরাচর একটা ভুল করে থাকি ডায়াবেটিস প্রথমবার মাপতে গেলে যে পরীক্ষাটি করাতে হয় সেটা আমরা করি না। আমরা এমন পরীক্ষা করি যে পরীক্ষাগুলো ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের করা উচিত কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ে এবং প্রথম দিকে HBA1C টেস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত ভাবে বলা যায় সেই রোগীর শরীরে ডায়াবেটিস আছে কিনা। আমরা এই টেস্ট না করে অন্য টেস্ট করে যার কারণে আমাদের ডায়াবেটিস পরিমাপের গরমিল থাকে।

ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণ গুলো কি কি

ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া একটি লক্ষণ হতে পারে। এর পাশাপাশি অতিরিক্ত ক্ষুধা পাওয়া অনেকের ক্ষেত্রে আবার ক্ষুধার প্রতি অনীহা অর্থাৎ খাবারের প্রতি অনীহা সৃষ্টি হতে পারে। হঠাৎ করে ওজন কমে যেতে পারে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে এবং হঠাৎ করে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের উচ্চ রক্তচাপ তৈরি হতে পারে। কোন কাজ করতে গেলে অল্পতে ধকে যাওয়ার প্রবণতা তৈরি হতে পারে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের। এছাড়া ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের প্রচুর পরিমাণে পিপাসা পায়। এই উপসর্গগুলো যদি একসঙ্গে আপনারা দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই আপনাকে ডায়াবেটিস পরীক্ষার জন্য HBA1C টেস্ট করাতে হবে।

টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস এর চিকিৎসা

সাধারণত এই ডায়াবেটিস হচ্ছে নিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস এবং এই ডায়াবেটিস চিকিৎসায় সামান্য পরিমাণে ঔষধ এবং প্রতিদিন নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও পরিশ্রম প্রয়োজন। এই অবস্থাতে রোগী যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার খায় এবং প্রতিদিন অন্তত এক থেকে দুই ঘন্টা শারীরিক পরিশ্রম এবং হাঁটাহাঁটি করে এবং অল্প পরিমাণে ঔষধ খায় তাহলে সুস্থ থাকতে পারবে।