চন্দ্রগ্রহণ ২০২৩ বাংলাদেশ সময় গর্ভবতী

চন্দ্রগ্রহণ এবং সূর্য গ্রহণ নিয়ে আমাদের সমাজে কিছু কুসংস্কার প্রচলিত রয়েছে। আমাদের সমাজের বেশিরভাগ মানুষেরা এই কুসংস্কার গুলো মেনে চলে এবং কিছু কিছু মানুষ রয়েছে যারা এ সম্পর্কে বিশেষভাবে জ্ঞান অর্জন রয়েছে তারা এগুলো এড়িয়ে চলেন।

আমাদের সমাজের বিশেষ করে আগের যুগের লোকেরা বিশ্বাস করেন যে চন্দ্র বা সূর্যগ্রহণের সময় গর্ভবতী মা যদি কিছু কাটাকাটি করেন তাহলে গর্ভস্থ সন্তান কান কাটাবার ঠোঁট কাটা অবস্থায় জন্মগ্রহণ করেন। এছাড়াও তারা আরও বিশ্বাস করেন যে এ সময়ে গর্ভবতী নারীদের ঘুম বা পানাহার থেকে বিরত থাকতে হয়।

আসলে এগুলো যে সবই কুসংস্কার এবং এগুলো মানার কোন প্রশ্নই ওঠে না সেটি সম্পর্কে আমাদের মধ্যে অনেকেই জানেন না। আমরা আজকে আমাদের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের সাথে আলোচনা করতে এসেছি চন্দ্রগ্রহণ ২০২২ বাংলাদেশ সময় গর্ভবতী সম্পর্কে বিশেষ কিছু তথ্য নিয়ে।

চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণ নিয়ে কোরআন ও হাদিসে এ ধরনের বিশ্বাসের অস্তিত্ব ঠিক কতটুকু সে সম্পর্কেও আমরা আজকে আমাদের আর্টিকেলের মাধ্যমে আলোচনা করব। প্রতিনিয়ত মহান আল্লাহ তায়ালার অস্তিত্বের জানান দিতে থাকা সৃষ্টিগুলোর বড় দুটি হলো চন্দ্র ও সূর্য। এগুলো আল্লাহর দেয়া নিয়ামত।চাঁদের আলোর উৎস হল সূর্য তেরো লাখ ৯৪ হাজার কিলোমিটার ব্যাসের এ নক্ষত্রের সঙ্গে পৃথিবী ও জীবজগতের সম্পর্ক সুনিবিড় ভাবে জড়িয়ে রয়েছে।

পৃথিবীতে সূর্যের তাপ ও আলো না আসলে তাহলে বিপন্ন হতো প্রাণী কুলের জীবন। পুরো পৃথিবী হয়তো পরিণত হতো একখণ্ড বরফে। ঠিক সেরকমই সূর্য যদি তার ভেতরকার সব তাপ পৃথিবীর উপর ছড়িয়ে না দিত তাহলে পৃথিবী পরিণত হতো অন্ধকার শ্মশানে। যাই হোক চলুন আমরা চন্দ্রগ্রহণ এবং সূর্যগ্রহণ সম্পর্কে গর্ভবতী মায়েদের জন্য কি করা উচিত সেগুলো সম্পর্কে জেনে নিই।

কোরআনের আলোকে চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণ

পবিত্র কোরআনের আলোকে গুরুত্বের সঙ্গে স্থান পেয়েছে চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণ সম্পর্কে কিছু আলোচনা। পবিত্র কুরআনুল কারীমে এরশাদ হয়েছে তিনি সত্তা যিনি সূর্যকে কিরণ উজ্জ্বল ও চাঁদ কে স্নিগ্ধ আলোয় আলোকিত করেছেন। অনত্র এরশাদ হয়েছে আর আমি সৃষ্টি করেছি একটি প্রচলিত বাতি। এছাড়াও সূর্যের আলোচনায় কুরআনুল কারীমে সব জায়গাতেই প্রচলিত বাতিল তেজো দীপ্ত উজ্জ্বল জ্যোতি চমকবাজ হলক শিখা বলা হয়েছে।

এসবের অর্থ হল সূর্য নিজে দহন ক্রিয়ার মাধ্যমে প্রচন্ড তাপ ও আলো উৎপন্ন করে থাকে পক্ষান্তরে চাঁদের আলোচনায় বলা হয়েছে যে স্নিগ্ধ আলো। বিজ্ঞান ও গবেষণা করে ঠিক তাই বলেছে বিজ্ঞান বলেছে সূর্য তার কেন্দ্রভাগে নিউক্লিয় সংযোজন বিক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতি সেকেন্ডে ৬২ কোটি মেট্রিক টন হাইড্রোজেন পুড়িয়ে হিলিয়াম উৎপাদন করে থাকে। অর্থাৎ বিজ্ঞানের বক্তব্য সূর্যই তাপশক্তির ও আলোর প্রধান উৎস।

সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ হল আল্লাহ তাআলা কর্তৃক নির্ধারিত একটি প্রক্রিয়া মাত্র। এতে কারোর কোন হাত নেই। কেউ ইচ্ছা করলেও যখন তখন সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ করাতে পারবে না একমাত্র আল্লাহ ছাড়া।চাঁদ যখন পরিভ্রমণ অবস্থায় কিছুক্ষণের জন্য পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ে তখন পৃথিবীর কোন দর্শকের কাছে কিছু সময়ের জন্য সূর্য আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হয়ে যায়। এটাই সূর্যগ্রহণ বা কুসুফ। আর পৃথিবী যখন তার পরিভ্রমণ অবস্থায় চাঁদ ও সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ে তখনই পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে চাঁদ কিছুক্ষণের জন্য অদৃশ্য হয়ে যায় এটাকে চন্দ্রগ্রহণ বা খুসুফ বলা হয়।

চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণে গর্ভবতী মা

চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণ নিয়ে গর্ভবতী মায়েদের যেসব নিষেধাজ্ঞা রয়েছে আমাদের সমাজে সেটি সম্পূর্ণ একটি কুসংস্কার। গর্ভবতী মায়েরা এই সময় যা করেন তার প্রভাব সন্তানের উপর পড়ে চন্দ্র বা সূর্যগ্রহণ এর সময় যদি গর্ভবতী নারী কিছু কাটাকাটি করেন তাহলে গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতি হয় এটি একেবারে ভ্রান্ত এবং ভুল ধারণা। তাই এ সময় একজন গর্ভবতী মায়ের উচিত বেশি বেশি আল্লাহর ইবাদত করা এবং আল্লাহ জিকির করা। আর অবশ্যই এসব কুসংস্কার থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়া।