আমরা সকলে অবগত আছি যে আমাদের শরীরে যে কোন অঙ্গে বা যে কোন অংশে ক্যান্সারের ভাইরাস থাকতে পারে। গলার ক্যান্সার হওয়া অনেক আগের একটি রোগ এবং বর্তমানে এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বহু মানুষ মৃত্যুবরণ করছেন। সাধারণত বিশেষ কিছু কারণ এর মধ্যে সবথেকে বেশি দায়ী গলার ক্যান্সারের কারণে ধূমপান এবং মদ্যপান। যারা জীবনে দীর্ঘ সময় ধরে ধূমপান করেছেন এবং মদ্যপান করেছেন তাদের বয়স শেষের দিকে গলায় ক্যান্সার ধরা পড়ে।
সব থেকে বড় ব্যাপার হলো এই ক্যান্সার গুলো খুব সহজেই বোঝা যায়। এমন কিছু লক্ষণ আছে যে লক্ষণ গুলো ফলো করলেই যে কেউ বুঝতে পারবে তার গলায় ক্যান্সার হয়েছে কিনা। তবে এই ক্যান্সার যদি প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়ে তাহলে অপারেশন এবং কেমোথেরাপির মাধ্যমে সেখান থেকে পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে সঠিক সময় যদি এটা ধরা না পড়ে তাহলে কোন উপায় নেই আস্তে আস্তে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সেই রোগী।
গলার ক্যান্সার হলে কিভাবে বুঝবেন
যাদের গলায় ক্যান্সার হয় তাদের অবশ্যই কিছু লক্ষণ দেখা দিবে। এই লক্ষণ গুলো দেখলে বোঝা যাবে যে গলাতে ক্যান্সার হয়েছে কিনা। অনেক সময় দেখা যায় যে অনেকদিন ধরে গলা ব্যথা হওয়া গলার ক্যান্সারের অন্যতম একটি লক্ষণ। এছাড়াও শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে অনেক কষ্ট হওয়া এবং খাবার খেলতে অসুবিধা হওয়া গলার ক্যান্সারের আরো কিছু লক্ষণ।কণ্ঠস্বর ভেঙ্গে যাওয়া অর্থাৎ যেই কন্ঠে কথা বলছেন হঠাৎ করে সে কণ্ঠস্বর ভেঙ্গে যাওয়া বা পরিবর্তন হওয়া গলায় ক্যান্সার হওয়ার অন্যতম লক্ষণ । অনেক রোগীদের ক্ষেত্রে শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় গলায় গড়গড় আওয়াজ ইত্যাদি লক্ষণ হচ্ছে গলায় ক্যান্সারের বড় লক্ষণ। এগুলো ছিল প্রাথমিক লক্ষণ যে লক্ষণ গুলোর মাধ্যমে ধারণা করে নেয়া হয় গলাতে ইনফেকশন হয়েছে এবং সে ইনফেকশন পরীক্ষা করতে গিয়ে ক্যান্সার ধরা পড়তে পারে। এর পাশাপাশি আরও বড় কিছু সমস্যা আছে যেই সমস্যাগুলোর কারণে গলার ক্যান্সার আরো বেশি বৃদ্ধি পেতে পারে।
যেমন গলায় কাশি বা বমির সঙ্গে রক্ত ওঠা গলার ক্যান্সারের অন্যতম একটি লক্ষণ। অনেক সময় গলার ভেতরে এবং বাইরে চাকা দেখা যায় যা দ্রুত ওজন কমতে বাধ্য করে অর্থাৎ এই অবস্থাতে রোগী ঠিকঠাক ভাবে খাবার খেতে পারে না এবং খাবার প্রতি অরুচি সৃষ্টি হয় যার কারণে রোগীর ওজন দ্রুত কমতে শুরু করে। অনেক সময় গলা ব্যথা বা কর্কশর এক সপ্তাহের বেশি থাকতে পারে এবং কফ বা লালার সঙ্গে রক্ত এলে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে রোগীকে আর বসে থাকলে চলবে না অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
গলার ক্যান্সারের চিকিৎসা
বাংলাদেশ ক্যান্সারে যে চিকিৎসা রয়েছে সেই চিকির সাথে তিনটি পদ্ধতিকে একত্রিত করে চিকিৎসা চালানো হয়। সবার প্রথমে এটা নিশ্চিত হতে হবে সেই রোগীর সত্যিই গলায় ক্যান্সার হয়েছে কিনা যদি হয় তাহলে সেখানে চিকিৎসা শুরু করতে হবে প্রাথমিকভাবে ঔষধের মাধ্যমে। তারপরে কেমোথেরাপীর মাধ্যমে সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এরপরে মেইন যে ধাপ আছে সেটা হচ্ছে সার্জারি। যে অংশে ক্যান্সারের ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে সেই অংশ সম্পূর্ণ কেটে ফেলে দিতে হবে।অপারেশনের সময় অনেক সময় রেডিও থেরাপি দেওয়া হতে পারে। অপারেশনের পরে পুনরায় কেমোথেরাপি দিতে হবে এইভাবেই মূলত বাংলাদেশে বিভিন্ন ক্যান্সারের চিকিৎসা করা হয় ঠিক গলার ক্যান্সারের চিকিৎসাও একইভাবে করা হয়।
গলার ক্যান্সার কেন হয়
গলার ক্যান্সার কেন হয় এ প্রসঙ্গে বলতে গেলে একটি গবেষণা থেকে পাওয়া গেছে যে গলায় ক্যান্সার হওয়ার জন্য সবথেকে বেশি দায়ী ধূমপান। ধূমপান কতটা ক্ষতিকারক জিনিস আমরা সকলে অবগত আছি যদি জীবনের বেশিটা সময় ধরে এই ধূমপান একনাগারে আমরা খেয়ে যাই তাহলে অবশ্যই সেটা আমাদের গলাতে ক্ষতি করবে বা ইনফেকশন করবে এটা স্বাভাবিক। এবং সেটা আস্তে আস্তে গলা হয়ে ফুসফুস পর্যন্ত ছড়িয়ে যেতে পারে এবং ক্যান্সারের রূপান্তর নিতে পারে।