ইউরিক অ্যাসিডের লক্ষণ

আমাদের রক্তে বিভিন্ন ধরনের উপাদান থাকে এবং সেই উপাদান গুলো যথেষ্ট পরিমাণ মাপে থাকে। এই উপাদান গুলোর পরিমাপ যত কম বেশি হবে ততই আমরা বেশি অসুস্থ হব। অর্থাৎ সঠিক পরিমাপে কোন উপাদান আমাদের শরীরে যদি না থাকে বা তার থেকে বেশি থাকে তাহলে স্বাভাবিকভাবেই আমরা অসুস্থ হতে পারি। আজকে আমরা কথা বলবো আমাদের শরীরের রক্তে থাকা ইউরিক এসিড নিয়ে। এই ইউরিক অ্যাসিড আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান সেটা আমরা সকলেই জানি।

কিন্তু ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ যখন আমাদের শরীরে বেড়ে যায় তখন কোন কোন উপসর্গ দেখা দেয় এবং কোন কোন সমস্যার কারণে আমরা বুঝতে পারবো আমাদের শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বেড়েছে সে বিষয়ে আলোচনা করব। সাধারণত ইউরিক অ্যাসিড বেড়েছে এমন কিছু লক্ষণ খুবই সহজে বোঝা যায় যেমন শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথার সৃষ্টি হতে পারে। আমরা যদি সহজ ভাষায় বলি বিভিন্ন ঘাটে ব্যথার সৃষ্টি হতে পারে এবং পেশিতে টান ধরতে পারে। অনেক রোগীদের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে শরীরে ইউরিক এসিড বৃদ্ধির কারণে পা ফুলে যায় এবং পায়ের পাতা ফুলে যাওয়ার মতন লক্ষণ দেখা দেয়।

শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বেড়েছে কিনা বুঝবেন কিভাবে

এছাড়াও বিশেষজ্ঞদের মতেই ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি পেলে তার প্রভাব পড়তে পারে কিডনিতে। যদি অতিরিক্ত মাত্রায় ইউরিক এসিডের পরিমাণ শরীরে বৃদ্ধি পায় তাহলে কিডনিতে বিভিন্ন ধরনের জটিল সমস্যার তৈরি হতে পারে। এর ফলে কিডনির নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন প্রসবের সময় জ্বালাপোড়া একটি বড় কারণ। অনেক সময় প্রস্রাবের রং পরিবর্তন অর্থাৎ হঠাৎ করে প্রস্রাবের রং বদলে গেলে এই সন্দেহ আসতে পারে।

এছাড়া অনেক রোগীদের ক্ষেত্রে মাথা ঘোরা বা বমি বমি ভাব ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। হঠাৎ করে প্রস্রাবের দুর্গন্ধ অনেকে বেশি হয় এমন রোগীদের ক্ষেত্রেও ইউরিক অ্যাসিড টেস্ট করে দেখা গেছে যে তাদের এই সমস্যার মূল কারণ হচ্ছে রক্তে ইউরিক এসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি। এই উপসর্গগুলো যদি রোগীর শরীরে পাওয়া যায় তাহলে সেখান থেকে যে কেউ ধারণা করে নিতে পারে ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি হয়েছে।

রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বাড়ার কারণ

সাধারণত যারা অত্যাধিক মাত্রায় মদ্যপান করেন তাদের রক্তে ইউরিক এসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। তা আমরা বলতে পারি বিশেষজ্ঞদের মতে যারা প্রচুর পরিমাণে মদ পান করে তাদের শরীরে রক্তে ইউরিক এসিডের পরিমাণ স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। এ ছাড়া কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় যে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং লাইফস্টাইনের কারণে ইউরিক এসিডের বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেক রোগীদের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে অথবা অসময়ে ঘুমের অভ্যাস থাকলেও ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি পেতে পারে।

আমরা আরো জানতে পেরেছি যে হৃদরোগ ও কিডনির অসুখ এছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ সমস্যা ও আরো অন্যান্য এই ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত হলে রোগীর রক্তে ইউরিক এসিডের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। কম পরিমাণে পানি খাওয়ার কারণে ও রক্তে ইউরিক এসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে তাই এ সকল বিষয়ে আমাদের সকলকে সবসময় সতর্ক থাকতে হবে।

ইউরিক অ্যাসিড টেস্ট

ইউরিক অ্যাসিড টেস্ট যারা করতে চাচ্ছেন তারা খুব কাছের নিকটস্থ হাসপাতাল থেকে এই টেস্ট করিয়ে নিতে পারেন। তবে টেস্ট করার আগে আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে এই টেস্টের প্রয়োজন আপনার কাছে আছে কিনা অর্থাৎ একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে আপনাকে জানতে হবে ইউরিক টেস্ট করার প্রয়োজনীয়তা আপনার আছে কিনা। ইউরিক অ্যাসিড টেস্ট করাতে খুব বেশি খরচ হয় না এবং কোন ধরনের প্রস্তুতির প্রয়োজন হয় না শুধুমাত্র ব্লাড স্যাম্পল প্রদান করতে হয় এবং এক ঘন্টার মধ্যে এই টেস্টের রিপোর্ট পাওয়া যায়। তাই চাইলে আপনারা যে কোন সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ইউরিক অ্যাসিড টেস্ট করিয়ে নিতে পারেন।