থাইরয়েড রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

আমাদের শরীরে কতই ধরনের না অসুখ-বিসুখ আছে সেটা আমরাই নিজেই জানিনা। আমাদের শরীরে কিছু হরমোন আছে যে হরমোনগুলো আমাদের শরীরের বৃদ্ধি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবহার করা হয়। আরেকটা বিষয় হলো এই হরমোন যদি আমাদের শরীরে কমে যায় অথবা বেড়ে যায় তাহলে সেই কাজগুলো স্বাভাবিকভাবে ব্যাহত হয় যার কারণে আরো অন্যান্য সমস্যা তৈরি হতে পারে।

আমাদের শরীর হচ্ছে একটি নিয়ম আর আমরা যতবার এই নিয়মকে ভঙ্গ করব আমাদের শরীর ততবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে শরীরের বিষয়টি একটু আলাদা সে সবসময় চেষ্টা করে যত বাধা বিপত্তি আসুক না কেন পুনরায় শরীরকে সুস্থ করতে নিজে নিজেই। তবে যদি আমরা পরিস্থিতি খুব খারাপ করে ফেলি তাহলে সেই ক্ষেত্রে শরীরের করার কিছু থাকে না। আজকে আমরা জানার চেষ্টা করব থাইরয়েড রোগের বিভিন্ন উপসর্গ সম্পর্কে।

কিভাবে বুঝবেন থাইরয়েডের সমস্যা হয়েছে

সাধারণত কিছু লক্ষণ আছে যে লক্ষণগুলো আপনি যদি একটু মনোযোগ সহকারে দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন থাইরয়েড রোগ হয়েছে কিনা। আপনি যদি এই লক্ষণগুলো খুব ভালোভাবে ফলো করেন তাহলেই আপনার মাথায় ঢুকে যাবে। প্রথমে মেয়েদের ক্ষেত্রে কি ধরনের সমস্যা হয় সে সম্পর্কে একটু বলি। হঠাৎ করে নিয়মিত মাসিক অনিয়মিত মাসিকের রূপান্তর হয় থাইরয়েড রোগের কারণে। সবকিছু ঠিক ছিল কিন্তু হঠাৎ করে এই সমস্যার উৎপত্তি হল কোন কিছু বুঝতে না পারলে আপনি যদি হরমোন টেস্ট করেন তাহলে দেখবেন সমস্যা হয়েছে।

বিবাহিত জীবনে সবকিছু ঠিক ছিল কিন্তু যখন বিবাহিত জীবনে আপনি একটি সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন তখন দেখবেন আপনার সন্তান গ্রহণে অনেক সমস্যা হচ্ছে। এই অবস্থাতে মেয়েরা যখন একজন গাইনি চিকিৎসকের কাছে যান চিকিৎসকেরা তার কথাবার্তা শোনার পরে সবার প্রথমে যে পরীক্ষা করতে বলেন সেটা হচ্ছে থাইরয়েড হরমোন পরীক্ষা। এই উপসর্গগুলো থাকলে স্বাভাবিকভাবে তাকে এই পরীক্ষা করাতে বলবে।

এছাড়াও সকলের ক্ষেত্রে আরও যে উপসর্গ গুলো দেখা দেয় সেগুলো হচ্ছে হঠাৎ করে ওজন বৃদ্ধি পাওয়া। কোত্থেকে কেন জানিনা এত গরম লাগে থাইরয়েড বৃদ্ধি পেলে রোগী নিজেই বুঝতে পারে না। হঠাৎ করে উচ্চ রক্তচাপ ধরা পড়া থাইরয়েড বৃদ্ধির অন্যতম একটি লক্ষণ।অনেকের ক্ষেত্রে থাইরয়েড বৃদ্ধির কারণে গলগন্ড রোগ দেখা দিতে পারে। উপরে যে লক্ষণ গুলো আমরা বললাম সেগুলো অত্যন্ত সাংঘাতিক। তার কারণ হচ্ছে এই সমস্যাগুলো শরীরে থাকলেই যেকোনো ধরনের সমস্যার কারণে এগুলো হতে পারে ধারণা করে নেয়া হয় তবে যদি থাইরয়েডের কারণে হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই সেটা সাংঘাতিক।

থাইরয়েড টেস্ট করার নিয়ম

থাইরয়েড টেস্ট করার ক্ষেত্রে খুব একটা নিয়ম আপনাকে মেনে চলতে হবে না। সাধারণত এই টেস্টের ক্ষেত্রে কোন ধরনের প্রস্তুতি প্রয়োজন পড়ে না অর্থাৎ আপনি বা রোগী যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থাতেই টেস্ট করার জন্য শুধুমাত্র ব্লাড স্যাম্পল প্রদান করলেই হয়। তাই এখানে যারা ভাবছেন থাইরয়েড পরীক্ষার জন্য অনেক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হয় তাদেরকে বলব কোন ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হয় না।

থাইরয়েড রোগের প্রতিকার

সাধারণত এই রোগের প্রতিকার হিসেবে নিয়মিত চিকিৎসা একমাত্র উপায়। এছাড়াও থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগেই নিজেকে একটি সুন্দর লাইফস্টাইলের মধ্যে আনার চেষ্টা করুন যেখানে এমনিতেই আপনার শরীরে থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণ হবে। শুধুমাত্র যে থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণ হবে সুন্দর লাইফস্টাইল এর মাধ্যমে এমন নয় এর পাশাপাশি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ থাকবে। এই তিনটা জিনিস যদি কারো নিয়ন্ত্রণে থাকে তাহলে সে সুস্থভাবে তার জীবনের বেশিরভাগ সময় পার করতে পারবে। আশা করছি থাইরয়েড সম্পর্কে অনেক তথ্যই আপনারা আমাদের এই ছোট্ট আর্টিকেল থেকে সংগ্রহ করতে পেরেছেন যেটা বিপদের সময় আপনাদের কাজে আসবে।