লিভার সিরোসিস থেকে মুক্তির উপায়

রিভার সিরোসিসের মুক্তির উপায় সম্পর্কে যদি বলতে হয় তাহলে দুটি কথা বলতে হবে। প্রথমে যেটা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সেটা হচ্ছে এই রোগের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং এ কে প্রতিরোধ করা। আমরা যদি এই কাজটা খুব সুন্দর ভাবে করতে পারি তাহলে দেখা যাবে যে বর্তমানে যতটা রোগী আছে ভবিষ্যতে তার থেকে কয়েকগুণ রোগী কমে গেছে এই সম্পর্কে। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে কোন রোগ হওয়ার আগেই তার প্রতিরোধ গড়ে তোলা এবং সেই রোগ হতেই না দেওয়া।

তবে যারা লিভার সিরোসিস রোগে আক্রান্ত হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে কি চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে সেটাও আমরা আজকে জানাবো। এবার ছিল শেষ আক্রান্ত হওয়ার পরে একজন রোগী কি চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারে সেটা নিয়ে আজকে আলোচনা করব। লিভার সিরোসিস এর চিকিৎসা সম্পর্কে যদি কিছু বলতে হয় তাহলে বলব যে সাধারণত এটা অত্যন্ত জটিল একটি প্রক্রিয়া এবং এই চিকিৎসার যে ফলাফল আছে সেটা আশানুরূপ নয়। লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার পরে অবশ্যই রোগীকে সবসময় সতর্ক অবস্থানে থাকতে হবে এবং কোনভাবেই নিয়মের বাইরে যাওয়া যাবে না।

লিভার সিরোসিস এর চিকিৎসা

লিভার সিরোসিসের ক্ষেত্রে যে চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে সেটা অত্যন্ত জটিল এবং এখানে যে পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হয় সেটা হচ্ছে উপসর্গ ভিত্তিক। সাধারণত লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার পরে রোগীর লিভারে পানি জমার সমস্যা বা রক্তভূমির সমস্যার মতন সমস্যা দেখা যায়। যখন এই সমস্যাগুলো দেখা যায় তখন চেষ্টা করা হয় রোগীর পেটের পানি শুয়ের মাধ্যমে বের করতে এবং এন্ডোস্কোপি করে খাদ্যনালীতে ভ্যারিসের খোলা রক্তনালী যা থাকে রক্তপাতের ঝুঁকি আছে এরকম বিশেষ পদ্ধতি সেগুলো থেকে রক্তপাত বন্ধ করা হয়। এভাবেই মূলত এখানে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

তবে লিভার সিরোসিসের প্রধান যে চিকিৎসা সেটা হচ্ছে লিভার প্রতিস্থাপন। আমরা এই রোগ সম্পর্কে কিছুই জানিনা তাহলে কিভাবে এই লিভার প্রতিস্থাপন সম্পর্কে আমরা প্রস্তুতি গ্রহণ করব এবং নির্ভর দাতা তৈরি করতে পারব এটা সত্যি হতাশার। সাধারণত লিভার প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া অনেক ব্যয়বহুল এবং বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আপনি লিভার দাতা খুঁজে পাবেন না। তাই বলা যেতে পারে এই চিকিৎসা অনেক জটিল।

লিভার সিরোসিস এর প্রতিরোধ

লিভার সিরোসিসের চিকিৎসার ক্ষেত্রে যে জটিলতা লক্ষ্য করা যায় শেষ জটিলতার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা যদি এর সঠিক প্রতিরোধ করে তুলতে পারি তাহলে হয়তো লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমে আসবে এবং এইভাবে আস্তে আস্তে আমরা লিভার সিরোসিসকে প্রতিরোধ করতে পারব। এটা অনেকাংশেই প্রতিরোধ করা সম্ভব এবং আমরা যদি এই রোগটাকে প্রতিরোধ করতে পারি তাহলে সেটা আমাদের জন্য অনেক বড় ধরনের একটি ঘটনা। চলো জানার চেষ্টা করি লিভার সিরোসিস প্রতিরোধ করার জন্য কি কি কাজ আমরা করতে পারি।

আমরা সকলে অবগত আছি হেপাটাইটিস বি ভারাস প্রতিরোধে বর্তমানে কার্যকার টিকা আছে। সাধারণত হেপাটাইটিস বি রোগে সংক্রমণ হওয়ার আগেই যদি আমরা এই টিকা গ্রহণ করতে পারি সেটা সত্যি অত্যন্ত ভালো একটি দিক যা এই লিভার সিরোসিস রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারে।

নিরাপদ রক্ত সঞ্চালন নিশ্চিত করা খুবই জরুরী লিভার সিরোসিসের প্রতিরোধ হিসাবে। অবশ্যই একজন রোগীর যখন রক্ত প্রয়োজন হয় তখন চেষ্টা করতে হবে যাতে তার শরীরে নিরাপদ রক্ত প্রবেশ করছে সেটা নিশ্চিত করা তা না হলে যে কোন সময় সেই রোগী লিভার সিরোসিস রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

এছাড়াও লিভার সিরোসিসের প্রতিরোধ হিসাবে আমাদের যে জিনিসগুলো খেয়াল করা উচিত সেটা হচ্ছে ডিসপসেবল সিরিঞ্জ ও রেজার ইত্যাদি ব্যবহার না করা।যারা মাদকাসক্ত আছেন এবং শিরায় মাদক গ্রহণ করে তাদের ক্ষেত্রে একই সেডেল যদি ভালো কেউ ব্যবহার করে তাহলে এখানে থেকে সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এছাড়াও নিরাপদ যৌন সম্পর্ক বা হেপাটাইটিস বি বা সি ভাইরাসের সংক্রমণ হলে সঠিক সময় চিকিৎসা না করা এবং আরো অন্যান্য খাদ্যাভ্যাসের কারণে মূলত এই লিভার সিরোসিস হতে পারে যেটা আমরা প্রতিরোধ করতে পারি।