আমাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গাতে বিভিন্ন অঙ্গের অবস্থান। আমাদের শরীরের লিভারের পেছনের দিকে ছোট্ট একটি অঙ্গ রয়েছে যেটাকে দেখতে একেবারে কলার মত মনে হয়। সাধারণত এটা থেকে বিভিন্ন ধরনের পাচন হরমোন নিঃসরণ হয় এবং সেটা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি অঙ্গ তার কারণ হচ্ছে এটাতে যদি কোন ধরনের সমস্যা হয় তাহলে এই হরমোন গুলো ঠিকঠাক ভাবে আমাদের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারবে না যার কারণে আমাদের শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাবে।
সাধারণত লিভারের ওপর অত্যাধিক খারাপ প্রভাব পড়তে থাকলে সাধারণত সেই প্রভাব প্যানক্রাইটিস তৈরি করতে পারে। সাধারণত পেনকাইটিস এই লিভারের সঙ্গে সম্পর্কিত অর্থাৎ আপনার লিভার যত ভালো থাকবে এই অঙ্গটি ততই ভালো থাকবে যদি লিভার ব্যবস্থা খারাপ হয় তাহলে সেই খারাপের প্রভাব এর উপর করতে পারে।
প্যানক্রাইটিস রোগের লক্ষণ
সাধারণত যে প্রাথমিক লক্ষণ বা উপসর্গ গুলো দেখে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার প্যানক্রাইটিস হয়েছে সেই উপসর্গগুলো এখন আমরা আপনাদের বলব। সাধারণত এই রোগ হলে সবার প্রথমে যে সমস্যাটা বেশি বোঝা যায় সেটা হচ্ছে পেটে ব্যথা। সাধারণত এই রোগের বিভিন্ন ধরনের স্টেজ আছে যেই স্টেজের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ের পেটের যে ব্যথা গুলো হয় সেটা রোগের পক্ষে কোনভাবে সহ্য করে নেওয়া যায়। তবে গুরুতর পর্যায়ে এর যে ব্যথা আছে সেটা রোগের পক্ষে সহ্য করার ক্ষমতা থাকে না এবং এটাকে আগুনের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
সাধারণত এই ব্যথা প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে দেখা দিতে পারে এবং এটা একেবারেই পেটের মাঝখানে শুরু হয়। এই ধরনের ব্যথার সঙ্গে যদি হঠাৎ করে রোগীর বদহজম বা হজমে সমস্যা তৈরি হয় তাহলে সেটা আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। এছাড়াও রোগীর প্রচুর পরিমাণে বমি হওয়া এবং নড়াচড়া করার সঙ্গে সঙ্গে বমি উঠে আসার প্রবণতা দেখা দিতে পারে এই সমস্যার কারণে।
আমি এমন রোগীকে দেখেছি যারা কিছুই খায় না তারপরেও এই সমস্যার কারণে পেটে ব্যথা এবং বমি আছে। অনেক সময় রোগীর ক্ষেত্রে ওজন কমে যেতে পারে অর্থাৎ এই অবস্থাতে অনেক রোগী খাবার দাবার ছেড়ে দেয় এবং যার কারণে সুস্থ শরীরে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই একেবারে রোগা পাতলা হয়ে যেতে পারে।
প্যানক্রাইটিস সমস্যা হলে কি করবেন
এই সমস্যায় সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা হচ্ছে ডাক্তারি চিকিৎসা। এখানে প্রথমে নিশ্চিত করতে হবে এটা কোন পর্যায়ের সমস্যা তার কারণ হচ্ছে ওই অঙ্গটি যদি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে সেটা ক্যান্সারের রূপান্তরিত হতে পারে যার চিকিৎসা করা অনেক বড় ব্যাপার।
তবে যদি স্বাভাবিক পর্যায়ে রোগে ধরা পড়ে এবং সবকিছু ঠিক থাকে তাহলে কিছু অভ্যাস এবং কিছু ঔষধের মাধ্যমে এটাকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এটা একেবারেই স্বাভাবিক ঔষধের মাধ্যমে সুস্থ করা যায় তাই এখানে কোন জটিল চিকিৎসার প্রয়োজন নেই যদি প্রাথমিক পর্যায়ে সমস্যা থাকে।
প্যানক্রাইটিস প্রতিরোধে করণীয়
এই সমস্যা প্রতিরোধে সবাইকে আগে থেকে সচেতন হতে হবে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য আগে থেকে সচেতনার মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে খাদ্যের অভ্যাস। যারা খাদ্যে যত বেশি তেল ব্যবহার করবে তাদের এই সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা তত বাড়বে। যদি খাবারে তেলের পরিমাণ কমানো যায় এবং অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার বর্জন করা যায় তাহলে খুব সহজেই এই সমস্যার প্রতিরোধ করা যায়।
এছাড়াও সব সময় নিজের পাকস্থলীকে সুন্দর রাখতে পারলেই মূলত পেনক্রাইটিস থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। এছাড়াও যদি এই রোগীকে আক্রান্ত হয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন তার কারণ হচ্ছে অন্য কোন চিকিৎসাতেই এর সমাধান করা যাবে না। খাবারের অভ্যাস এবং পুরো রেস্ট সামান্য কিছু ঔষধ পারে এই অবস্থা থেকে রোগীকে পুরোপুরি সুস্থ করতে।