টাইফয়েড কেন হয়

সাধারণত টাইফয়েড অত্যন্ত সাংঘাতিক একটি রোগ। টাইফয়েডের সবথেকে বড় সমস্যা হলো যখন এটা কোন ধরনের উপসর্গ ছাড়াই কোন মানুষের শরীরে বসবাস করে। যাদের উপসর্গ গুলো দেখা যায় তারা সহজে বুঝতে পারেন এবং চিকিৎসা নেন এবং সহজেই সুস্থ হন কিন্তু যাদের উপসর্গ গুলো দেখা যায় না তারা বুঝতেও পারেন না এবং আস্তে আস্তে ভেতরে তারা অসুস্থ হয়ে অনেক দুর্বল হয়ে পড়েন। তবে অনেকের মনে একটি প্রশ্ন আছে সেটা হচ্ছে টাইফয়েড রোগ মূলত কেন হয়ে থাকে।

টাইফয়েড জ্বরের জন্য দুইটি ভাইরাস দায়ী এবং সেই দুইটি ভাইরাসের নাম হচ্ছে সালমনেলা টাইফি ও প্যারাটাইফি। যখন কারো রক্তে এই দুইটি জীবাণু পাওয়া যায় তখন নিশ্চিত ভাবে বলা যায় তার টাইফয়েড হয়েছে। তবে আরেকটি বিষয় এই জীবাণুগুলো কি পরিমাণে আছে তার ওপর নির্ভর করে টাইফয়েড স্টেজ নির্ধারণ করা হয় যদি অতিরিক্ত পরিমাণে থাকে তাহলে তার অবস্থা খারাপ যদি হালকা পরিমাণে থাকে তাহলে তার অবস্থা ভালো আছে।

সাধারণত প্রধান যদি কারণ খুঁজে বের করা হয় তাহলে দূষিত পানিও খাবার গ্রহণের মাধ্যমে এই জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে। আমরা যদি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে একটু যাচাই করি তাহলে দেখব যারা গ্রাম থেকে শহরের দিকে অগ্রসর হই এবং শহরে যাওয়ার পরে সেখানে দূষিত প্রাণী পান করে তখন সেখান থেকে টাইফয়েডের জীবন আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। অনেকের ক্ষেত্রে শহরে যাওয়ার কিছুদিন পরেই জ্বর আসে এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এটা বোঝা যায় যে তার টাইফয়েড হয়েছে তখন সে আবার বাড়িতে ফিরে আসে সুস্থ হওয়ার জন্য। এছাড়া শুধু পানিকে দায়ী করলে হবে না নিজের উদাসীনতা রয়েছে এখানে অর্থাৎ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকেন না যারা তাদের টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

টাইফয়েড জ্বর কতদিন থাকে

টাইফয়েড রোগে জ্বর যদি আসে তাহলে সেই জ্বর কতদিন থাকতে পারে এই প্রশ্ন অনেকেই করেছেন। টাইফয়েড জ্বরের যদি চিকিৎসা আপনি না করান তাহলে এটা আপনার শরীরে সারা জীবন থাকবে। তবে আপনি যদি টাইফয়েড রোগের চিকিৎসা করান তাহলে এন্টিবায়োটিক সেবনের সর্বোচ্চ পাঁচ দিনের মধ্যে এই জ্বর আপনার শরীর থেকে চলে যাবে। কিছু কিছু রোগের ক্ষেত্রে সাত দিন সময় লাগতে পারে তবে এর বেশি সময় কখনোই লাগবে না এরপরে জ্বর থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাওয়া যাবে তবে ভাইরাস শরীরে থেকে যাবে যেগুলা আস্তে আস্তে পরবর্তী চিকিৎসার মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যাবে।

টাইফয়েড জ্বর কি ছোঁয়াচে

আমাদের গ্রাম বাংলাতে অনেকের মধ্যে একটি ধারণা আছে সেটা হচ্ছে টাইফয়েড রোগ আছে। টাইফয়েড রোগকে ছোঁয়াচে বলতে গেলে সবার আগে আপনাকে জানতে হবে ছোঁয়াচে জিনিসটা কি। সাধারণ ভাষায় বলতে গেলে ছোঁয়াচে সাধারণত এমন কিছু জিনিস কে বোঝানো হয় যেটা সংস্পর্শে আসার সঙ্গে সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে। তার একটি ভালো উদাহরণ হতে পারে চর্মরোগ।কিন্তু টাইফয়েড জ্বরে এমন কিছুই দেখতে পাওয়া যায় না যেখানে সে রোগের আশেপাশে যারা আসেন তাদের শরীরে এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। সাধারণত এই ভাইরাস গুলো ছোঁয়াচে মতো ছড়ানো এই ভাইরাসগুলো পানির মাধ্যমে ছড়ায় যেটা রোগী সেবন করলে তার শরীরে প্রবেশ করতে পারে। তাই আমার প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে এটা টাইফার রোগ ছোঁয়াচে নয়।

টাইফয়েড জ্বর হলে কি খাওয়া উচিত

টাইফয়েড জ্বর হলে সাধারণত রোগীর খাওয়ার প্রতি আগ্রহ কমে যায় তাই এই অবস্থাতে এমন কিছু খাবার খেতে হবে যেগুলো প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার এবং অল্প খেলে রোগের শারীরিক পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করতে পারে। এক্ষেত্রে ও তরল এবং পাতলা জাতীয় খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন বেশি তার কারণ হচ্ছে বেশি আশযুক্ত খাবার খেতে গেলেও পাকস্থলীর উপর প্রভাব পড়তে পারে তাই চেষ্টা করতে হবে একেবারে হালকা খাবার খেয়ে এবং পুষ্টিকর খাবার খেয়ে রোগীকে সুস্থ রাখতে।