ফ্যাটি লিভার ২ মানে কি

অনেকেই আছে যারা ফ্যাটি লিভার সম্পর্কে জানেনা। সাধারণত ফ্যাটি লিভার হচ্ছে আমাদের যকৃতে অর্থাৎ লিভারে চর্বির অতিরিক্ত পরিমাণ। আমি আপনাদের বিষয়টি ভালোভাবে বোঝাচ্ছি। ছোটবেলায় যখন আমরা জন্মগ্রহণ করি তখন আমাদের লিভারের সাইজ থাকে একেবারে ছোট। আমরা যখন বড় হতে শুরু করি তখন শরীরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এবং খাওয়ার উপর নির্ভর করে আমাদের এই লিভারের সাইজ আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পায়। প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যাওয়ার পরে এই লিভারের আকৃতি একটি বড় আকার ধারণ করে।

এই লিভারের একটি ওজন থাকে। আমরা প্রতিদিন যে খাবারগুলো খাই সেই খাবারগুলো এই লিভার হজম করে। লিভার বিভিন্ন ধরনের মাংসপিণ্ড এবং শরীরের বিভিন্ন উপাদানের মাধ্যমে তৈরি হয় কিন্তু সেখানে চর্বির একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ থাকে। লিভারের যে ওজন আছে সেই ওজনের তুলনায় চর্বির পরিমাণ স্বাভাবিক অবস্থানে থাকে 5% অথবা ১০% থাকলে। কিন্তু যদি সেই চর্বির পরিমাণ 10% অতিক্রম করতে শুরু করে তাহলেই সেটাকে বলা হয় ফ্যাটি লিভার।

ফ্যাটি লিভারের কারণে প্রচুর কষ্ট করতে হয় রোগীকে বিশেষ করে খাওয়ার ক্ষেত্রে এবং সেটা হজম করার ক্ষেত্রে। আজকে আমরা ফ্যাটি লিভার সম্পর্কে অনেক তথ্য জানবো এবং ফ্যাটি লিভারের বিভিন্ন পর্যায় সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব এই আর্টিকেল থেকে।

ফ্যাটি লিভার ২ এর পরীক্ষা

সাধারণত ফ্যাটি লিভার পরীক্ষার জন্য সবার প্রথমে যে পরীক্ষা করা হয় সেটা হচ্ছে আলট্রাসনোগ্রাফি। হঠাৎ করে পেটের সমস্যার কারণে যদি চিকিৎসকের কাছে যাওয়া হয় এবং তিনি যদি আলট্রাসনোগ্রাফি করে দেখেন তার ফ্যাটি লিভারের সমস্যা হয়েছে তাহলে অবশ্যই সেটা খারাপ একটা দিক। তারপরে তিনি তাকে কিছু নিয়ম এবং কিছু সামান্য ঔষধ দিয়ে বলেন একমাস এটা কন্টিনিউ করতে যদি ভালো হয় তাহলে ভালো যদি ভালো না হয় তাহলে আবার আসতে।

রোগীর যদি এই চিকি সাথে কোন কাজ না হয় তাহলে পরবর্তীতে চিকিৎসা করে তাকে একটি অন্য পরীক্ষা দেন যে পরীক্ষার মাধ্যমে তার শরীরে থাকা ফ্যাটি লিভারের সমস্যার স্টেজ নির্ণয় করা যায়। এখানে তিনটি পর্যায়ে আছে এই তিনটি পর্যায়ের মধ্যে প্রথম যে পর্যায়ে আছে সেটাকে বলা হয় ফ্যাটি লিভার ১ এবং দ্বিতীয় যে পর্যায়ে আছে সেটাকে বলা হয় ফ্যাটি লিভার ২ এবং ৩ নাম্বার যে পর্যায়ে আছে সেটা অত্যন্ত সাংঘাতিক যেটা হচ্ছে ফ্যাটি লিভার তিন।

ফ্যাটি লিভার ২ অত্যন্ত সাংঘাতিক পর্যায়ে থাকে এই অবস্থাতে রোগীর পাকস্থলীতে প্রচুর পরিমাণে চর্বি জমা থাকে যেগুলো পাকস্থলী স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে বাধা দান করে। এখানে অবশ্যই রোগীকে বাধ্যতামূলকভাবে ডায়েট করতে হয় তা না হলে যেকোনো সময় তার বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। শুধুমাত্র ডায়েট করলে চলবে না এই অবস্থাতে আরো কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়।

ফ্যাটি লিভার ২ এর চিকিৎসা

ফ্যাটি লিভার ২ এর চিকিৎসার ক্ষেত্রে রোগীদের সামান্য কিছু ওষুধ দেওয়া হয়। এই ওষুধগুলোর মাধ্যমে রোগের পাকস্থলী স্বাভাবিক প্রক্রিয়া চলমান থাকে এবং শরীরের অন্যান্য সমস্যা গুলোকে দূরে রাখা যায়। তবে এর মাঝখানে রোগীকে যে জিনিসগুলো করতে বলা হয় সেটা হচ্ছে নিয়মিত একটি সঠিক ডায়েটের মধ্যে খাবার খাওয়া। যে খাবারে একেবারে জিরো পার্সেন্ট তেল চলবে থাকবে এবং মসলা থাকবে জিরো পার্সেন্ট।

এরপরে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে বলা হয় সেটা হচ্ছে নিয়মিত শরীর চর্চা। সঠিক সময়ে সঠিকভাবে শরীরচর্চা করলে সেটা আপনার শরীরের চর্বি কমাতে সাহায্য করবে এবং সেটা ফ্যাটি লিভার কমাতে সাহায্য করবে। সঠিক পরিমাণে পানি পান করাও ফ্যাটি লিভার কমানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ফ্যাটি লিভার ২ অত্যন্ত সাংঘাতিক একটি পর্যায়ে তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই পর্যায়ে রোগীরা রোগ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নিজেকে আরো বেশি অসুস্থ করে ফেলে। অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আপনাকে একটি ডায়েট চার্ট তৈরি করে নিতে হবে এবং আপনার শরীরের অবস্থার ওপর বিবেচনা করে আপনাকে আস্তে আস্তে শারীরিক ব্যায়াম শুরু করতে হবে।