সাধারণত কিডনির সমস্যা নির্ণয়ের জন্য সবার প্রথমে যে রক্তের পরীক্ষা চিকিৎসকেরা করতে বলেন সেটা হচ্ছে ক্রিয়েটিনিন। এই পরীক্ষার মানে বেশ কিছু পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় তাই অনেকেই প্রশ্ন করেন সাধারণত এই পরীক্ষার আদর্শ মান কি হতে পারে এবং এই পরীক্ষার রেজাল্ট কত হলে ডায়ালাইসিস করার প্রয়োজনীয়তা পড়ে। আজকের এই আর্টিকেল থেকে আমরা এই বিষয়ে জানার চেষ্টা করব এবং সুস্থ এবং স্বাভাবিক পুরুষ ও নারীর ক্ষেত্রে এই পরীক্ষার মান কত হলে স্বাভাবিক সে সম্পর্কে আপনাদের জানাবো।যদি রক্তে ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করা হয় তাহলে মেয়েদের ক্ষেত্রে এর মান স্বাভাবিক অবস্থানে থাকবে ০.৫ থেকে ১.১ এর মধ্যে। যদি পরীক্ষার মানে এর থেকে বেশি হয় তাহলে সেটা অস্বাভাবিক তবে এর মধ্যে থাকলে একেবারে স্বাভাবিক এটা নিয়ে কোন চিন্তাই করতে হবে না।
একজন সুস্থ স্বাভাবিক পুরুষের ক্ষেত্রে এর মান ০.৬ থেকে ১.২ এর মধ্যে হতে পারে। পরীক্ষার মান যদি এর মধ্যে থাকে তাহলে অবশ্যই কোনো চিন্তা করার কারণ নেই তার কারণ হচ্ছে কিডনির কোন সমস্যা নেই কিডনি একেবারে ঠিক আছে। তবে এর মান যদি এর থেকে বেশি হয় তাহলে কিডনির সমস্যা থাকতে পারে এবং তার জন্য আরো অন্যান্য পরীক্ষার প্রয়োজন আছে।
অনেকে জানতে চেয়েছেন ডায়ালাইসিস করার জন্য এর মান কত হওয়া প্রয়োজন রয়েছে। ডায়ালাইসিস অনেক জটিল একটি প্রক্রিয়া এবং এই প্রক্রিয়ায় অনেক রোগী মৃত্যুবরণ করেন। ডায়ালাইসিস শুধুমাত্র তখনই করা হয় যখন কিডনির অবস্থা খুব খারাপ অবস্থাতে থাকে এবং কিডনিয়ে আক্রান্ত রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। ডায়ালাইসিস করার ক্ষেত্রে অবশ্যই একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে সেটা হচ্ছে সঠিক সময় রোগীর ডায়ালাইসিস হচ্ছে কিনা। ডায়ালিসিস করার জন্য এর মান ৫ এর বেশি হতে হবে।
কিডনি সমস্যা হলে কি কি পরীক্ষা করতে হয়
কিডনির সমস্যা অত্যন্ত জটিল একটি সমস্যা। যারা কিডনির সমস্যায় পড়ে আছেন তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই একটি বিষয় খেয়াল করতে হবে সেটা হচ্ছে সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে কিনা। আমার দেখা অনেক এমন রোগী আছে যারা কিডনির সমস্যা থাকা সত্ত্বেও সঠিক সময় সঠিক চিকিৎসা করতে না পারার কারণে মৃত্যুবরণ করেছে। চিকিৎসা না করতে অনেকের অনেক ধরনের কারণ আছে কেউ ইচ্ছে করেই করেন না আবার কার সমর্থক নেই।
সাধারণত কিডনি পরীক্ষা প্রাথমিক পর্যায়ে প্রস্রাবের ইনফেকশন টেস্ট এবং ক্রিয়েটিনিং টেস্ট করানো হয়। এই টেস্টের রেজাল্ট এর উপর নির্ভর করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় এটা যদি ভালো থাকে তাহলে কিডনি ভালো আছে এবং এটা যদি খারাপ থাকে তাহলে কিডনির অবস্থা খারাপ তখন উন্নতমানের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের রোগীদের বিভিন্নভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয় এবং এই পরীক্ষার মধ্যে থাকবে আলট্রাসনোগ্রাফি।
আল্টাসনোগ্রাফির মাধ্যমে এটা নিশ্চিত করা হয় রোগীর কিডনিতে কোন ইনফেকশন হয়েছে কিনা অথবা রোগীর কিডনিতে কোন পাথর আছে কিনা যদি এগুলো থাকে তাহলে আল্ট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে সেটা ধরা পড়ে। এরপরে আরো সঠিক জানার জন্য এক্সরে করা হয় যার মাধ্যমে কিডনির বিভিন্ন ধরনের সমস্যা খুব সহজে ধরা পড়ে যেমন কিডনি ফুলে উঠেছে কিনা এবং কিডনিতে কোন পাথর আছে কিনা এমন কোন সমস্যা।
এই সমস্যাগুলো চিহ্নিত করার পরে যখন রিপোর্ট চিকিৎসকের কাছে যান তখন চিকিৎসক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন কিভাবে তাকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে। তিনি প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু ঔষধের মাধ্যমে তার রোগ সারানোর চেষ্টা করে যদি সেটা সম্ভব না হয় তাহলে আরো বড় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয় এতে আরো বড় বড় পরীক্ষা করতে হয়। এই বড় পরীক্ষার মধ্যে আই ভি ইউ টেস্ট হচ্ছে একটি। আশা করছি কিডনির পরীক্ষা সম্পর্কে ভালো একটি ধারণা আপনার এখান থেকে সংগ্রহ করতে পারলেন।