ডায়াবেটিস বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় রোগ বললেই চলে। এই জাতীয় রোগ কি আমরা কোনভাবেই হারাতে পারছি না এবং প্রত্যেকের শরীরে আসতে আসতে ডায়াবেটিস বাসা বাঁধছে। সাধারণত রক্তে অতিরিক্ত সুগার নির্দেশ করে ডায়াবেটিস অর্থাৎ আমরা যখন আমাদের শরীরের অভ্যন্তরে শর্করাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না এবং সেটা অত্যন্ত বেশি পরিমাণে চিনি উৎপাদন করে এবং সেটা অযথাই শরীরে মজুদ থেকে পড়ে থাকে তখন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে আমরা। এই ডায়াবেটিসের আবার বেশ কয়েকটি ধরন আছে মনে করুন টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস অথবা টাইপ টু ডায়াবেটিস।
টাইপ টু ডায়াবেটিস সাধারণত এমন এক ধরনের ডায়াবেটিস যেটাকে বিপাকীয় রোগ হিসেবে ধরা হয়। রক্তে অতিরিক্ত পরিমাণে শর্করা ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা কে কমে দেয় এবং শরীরের অভ্যন্তরে ইনসুলিনের ঘাটতি তৈরি হয় তার কারণ হচ্ছে ইনসুলিন তখন নিজে থেকে শরীরের অভ্যন্তরে তৈরি হয় না। এই ধরনের ডায়াবেটিস কে বলা হয় টাইপ টু ডায়াবেটিস যার কারনে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে আসে এবং অত্যাধিক কৃষ্ণা ও ঘনঘন প্রস্রাব এবং ওজনরা সে সম্ভাবনা তৈরি হয় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে। টাইপ টু ডায়াবেটিসের রোগীদের ক্ষেত্রে ক্ষুধা বৃদ্ধি এবং ক্লান্তি অনুভব এবং বিভিন্ন স্থানে খাদ্য তৈরি হলে সেটা ভালো হতে প্রচুর সময় লাগা এগুলো হচ্ছে ভালো উদাহরণ।
টাইপ ওয়ান এবং টাইপ টু ডায়াবেটিসের মধ্যে পার্থক্য
আমরা উপরে খুব সুন্দর ভাবে টাইপ টু ডায়াবেটিসের ধারণা আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম কিন্তু এখন আমরা আপনাদের সামনে পরিষ্কারভাবে একটি বিষয় তুলে ধরব সেটা হচ্ছে টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস এবং টাইপ টু ডায়াবেটিসের মধ্যে কি পার্থক্য আছে সে সম্পর্কে যাতে আপনারা একেবারে ক্লিয়ার ভাবে বুঝতে পারেন।টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসের কথা বলতে গেলে বলতে হয় যে সাধারণ ডায়াবেটিস যেটা আছে সেটাকে টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস বলা হয়। এই ডায়বেটিসে আক্রান্ত রোগীদের শারীরিক সক্ষমতা টাইপ টু ডায়াবেটিস এর আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে তুলনামূলক শক্তিশালী থাকে এবং এদের ডায়াবেটিসের পরিমাণ কম থাকে। টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের সাধারণত অল্প ঔষধের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা যায় এবং টাইপ টু আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে ঔষধ ছাড়াও ইনসুলিন ব্যবহার করতে হয় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য।
টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের শরীরের অভ্যন্তরে ইনসুলিন নিজে থেকেই তৈরি হয় এবং সেই ইনসুলিন শরীরের অভ্যন্তরে নিজে নিজে ছড়িয়ে তার কার্যকারিতা দেখায়। কিন্তু যাদের ডায়াবেটিস টাইপ টু পর্যায়ে চলে গেছে তাদের শরীরের অভ্যন্তরে ইনসুলিন তৈরি হতে বাধা সৃষ্টি হয় এবং যার কারণে শরীরের বাইরে থেকে ইনসুলিন দেওয়া হয়।টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা স্বাভাবিক অবস্থানে থাকে এবং তারা কাজ করে আরাম পায় এবং তারা এক কথায় সুস্থ জীবন যাপন করতে পারে। কিন্তু যাদের টাইপ টু ডায়াবেটিস হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা দেয় যেমন ক্ষুধামন্দা সৃষ্টি হওয়া অনেকের ক্ষেত্রে শারীরিক দুর্বলতা তৈরি হতে পারে অনেকের ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্থানে ক্ষত হলে সেটা সরে উঠতে বিলম্ব হতে পারে।
টাইপ ২ ডায়াবেটিসের লক্ষণ গুলো কি কি
যাদের ডায়বেটিস হয়েছে তাদের অবশ্যই নিয়মিত চিকিৎসা নিতে হবে। কিন্তু যখন চিকিৎসা নিতে নিতে এমন কিছু অনুভূতি আপনার শরীরে আসে যেমন মনে করুন হঠাৎ করে আপনার ক্ষুধা মন্দার সৃষ্টি হল তাহলে আপনি ধরে নিতে পারেন আপনার ডায়াবেটিসের অবস্থা খারাপ। এই সাধারণ পর্যায় থেকে এক ধাপ খারাপ হয়ে যাওয়াকেই টাইপ টু ডায়াবেটিস বলা হয়েছে এবং এখানে বেশ কিছু লক্ষণ পাওয়া যাবে।যেমন মনে করুন ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া টাইপ টু ডায়াবেটিস এর লক্ষণ। অতিরিক্ত ওজন কমে যাওয়ার টাইপ টু ডায়াবেটিসের লক্ষণ। ওষুধ খাওয়ার ফলেও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না আসা টাইপ টু ডায়াবেটিসের একটি লক্ষণ। শরীরের বিভিন্ন স্থানে সামান্য সমস্যা থেকে ক্ষত তৈরি হওয়া এবং সেই ক্ষত দেরিতে সেরে ওঠা টাইপ টু ডায়াবেটিসের লক্ষণ।