গর্ভবতী মায়ের জ্বর হলে করণীয়

একজন গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই যেমন আনন্দ ও উত্তেজনার সীমা থাকে না ঠিক তেমনি বিভিন্ন রকমের শরীর খারাপ হয়ে থাকে। এর মধ্যে একটি কমন শরীর খারাপ হলো গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের জ্বর আসা।

জ্বর আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার এক ধরনের প্রতিক্রিয়া। সাধারণভাবে কোন রোগ বা ইনফেকশন হলে তার লক্ষণ হিসেবে আমাদের গায়ে জ্বর আসে। ঠিক এমনই অন্যান্য সময়ের মতো গর্ভাবস্থাতেও জ্বর আসতে পারে। এটি একটি স্বাভাবিক সমস্যা।

বেশিরভাগ গর্ভবতী মায়েদেরই এই সমস্যায় পড়তে হয়। তবে কষ্টের বিষয় হলো গর্ভাবস্থার সময় জ্বর আসলেও সে গর্ভবতী মা জরের কোন রকমের ঔষধ খেতে পারে না তাই সে গর্ভবতী মায়ের একটু কষ্ট বেশি হয়ে থাকে। গর্ভাবস্থায় জোড় বা অতিরিক্ত তাপমাত্রা গর্ভের শিশুর উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।

তবে এ সময়ে ঘাবড়ে না গিয়ে জ্বর কমানোর ব্যবস্থা করা এবং দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কারণ গর্ভাবস্থায় জ্বর আসাটা একটি কষ্টের কারণ। আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন গর্ভবতী মায়ের জ্বর হলে কি করবেন? তো চলুন আমাদের আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমরা আজকে আলোচনা করতে এসেছি একজন গর্ভবতী মায়ের জ্বর হলে করণীয় কি শেষ সম্পর্কে বিশেষ কিছু তথ্য।

কিভাবে বুঝবেন আপনার জ্বর এসেছে

একজন গর্ভবতী মা গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। তার শরীর তখন অনেক অংশেই দুর্বল হয়ে পড়ে তাই মাঝে মাঝে তার গা গরম হতে পারে। আবার ঠান্ডা লাগতে পারে। তবে শুধু গা গরম অথবা ঠাণ্ডা লাগলে যা আপনার জ্বর এসেছে এটি কিন্তু কোন কথা নয়। তাই ঠিক যার এসেছে কিনা সেটি বোঝার জন্য সঠিকভাবে জেনে রাখা প্রয়োজন।

গর্ভাবস্থায় জর না আসলেও অনেকের গা গরম লাগতে পারে তাই গর্ভকালীন হরমোন গুলোর প্রভাবে এবং রক্ত প্রবাহ বেড়ে যাওয়ার কারণেই এমনটি হয়ে থাকে। এ কারণে জ্বর এসেছে কিনা সেটা বুঝে ওঠা কঠিন হতে পারে। তাই জ্বর এসেছে মনে হলে অথবা শরীর খারাপ লাগলে অবশ্যই থার্মোমিটার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মেপে দেখতে হবে। যদি একজন গর্ভবতী মায়ের জ্বর এসেই থাকে তাহলে সাধারণত কিছু লক্ষণ দেখা দিবে সেগুলো হল।

গা গরম লাগতে পারে তার সাথে শরীরে কাপুনি হতে পারে । হঠাৎ শীত শীত লাগতে পারে। ঠান্ডা লাগার কিছুক্ষণ পর আবার গরম লাগতে পারে। উজ্জ্বল বর্ণের হলে ত্বক লালচে দেখাতে পারে এবং শরীর দুর্বল লাগতে পারে।

এসব উপসর্গ দেখলে আপনি বুঝে যাবেন যে আপনার জ্বর এসেছে।

গর্ভাবস্থায় জ্বর মাপার পদ্ধতি

গর্ভাবস্থায় আপনার যদি মনে হয় যা আপনার জ্বর এসেছে তাহলে অবশ্যই থার্মোমিটার দিয়ে আপনার তাপমাত্রা মেপে দেখবেন। থার্মোমিটার তাপমাত্রা ১০০ পয়েন্ট চার ডিগ্রী ফারেনহাইট বা ৩৮° সেলসিয়াস কিংবা তার বেশি দেখালে ধরে নেওয়া হয় যে জ্বর হয়েছে। তবে জ্বর মাপার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি হলো থার্মোমিটারের সাহায্যে জ্বর মেপে দেখা।

হাতের কাছে থার্মোমিটার না থাকলে বুকে অথবা পিঠে হাত দিয়ে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কিনা সেটা বোঝার চেষ্টা করবেন। তাপমাত্রা যদি বেশি মনে হয় অথবা শরীরে কাঁকনি ওঠার মতো লক্ষণ থাকে সেটাকেই জ্বর হিসেবে ধরে নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

গর্ভাবস্থায় জ্বর হলে করণীয়

আমাদের আর্টিকেলের আমরা মূল আলোচনায় চলে এসেছি এখানে আমরা আলোচনা করব গর্ভাবস্থায় জ্বর আসলে কি করতে হবে সে সম্পর্কে। গর্ভাবস্থায় জ্বর আসলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। যেহেতু শরীরে কোন রোগ বা ইনফেকশন বাসা বাধার কারণে জ্বর হতে পারে তাই মূল কারণ খুঁজে বের করে সময় মত সঠিক চিকিৎসা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

এছাড়াও যদি তাপমাত্রা ১০২° ফারেনহাইট অথবা ৩৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা এর বেশি হয় তাহলে দেরি না করে সাথে সাথে ডাক্তার দেখাবেন। যদি তাপমাত্রা একশ দুই ডিগ্রী ফারেনহাইট অথবা ৩৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম হয় এবং একদিনের বেশি সময় ধরে জ্বর থাকে তাহলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

মনে রাখবেন গর্ভাবস্থায় কোন রকমের রিক্স নেওয়া উচিত নয়। তাই সব সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন এবং কোন সমস্যা হওয়ার সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিন সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন।।