লিভার জন্ডিস হলে করণীয়

একজন সুস্থ মানুষ অসুস্থ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সে বুঝতে পারে সে অসুস্থ হয়েছে। সাধারণত অসুস্থতা আমাদের শরীরে হুট করে আসে না সেটা বলে করেই আমাদের শরীরে আসে কিন্তু আমরা সেটা বুঝতে পারি না বা উপলব্ধি করতে পারিনা। আপনাকে একটা উদাহরণ দিচ্ছি মনে করুন আপনার জ্বর এসেছে কিন্তু আপনি একটু খেয়াল করলে বুঝতে পারবেন সে জ্বর আসার কয়েক ঘন্টা আগে থেকে আপনার শরীর ব্যথা এবং মাথা ব্যথার মতন সমস্যা তৈরি হচ্ছিল। কিন্তু আপনি সেটাকে অবহেলা করেছেন এবং কিছু মনেই করেননি একটু পর দেখছেন ঠিকই আপনার শরীরে জ্বর চলে এসেছে তখন আপনাকে ঠিকই বিছানায় শুয়ে থাকতে হয়েছে।

সব রোগের ক্ষেত্রেই একই ঘটনা ঘটে আজকে আমরা কথা বলছি লিভার জন্ডিস নিয়ে। লিভার জন্ডিস সাধারণত এমন একটি সমস্যা যেই সমস্যাতে রক্তে বিলিরুবিনের পরিমাণ মাত্রাধিক হয়ে যায় যার কারণে লিভার তার কার্যক্ষমতা ছেড়ে দেয় এবং যার ফলে লিভারে জন্ডিসের আক্রান্ত হয়। শুধুমাত্র এখানে এই ঘটনা ঘরে না এর সঙ্গে আরও বড় কিছু ঘটতে পারে যেমন লিভার ইনফেকশন। তবে যদি প্রাথমিক অবস্থা থেকে আরো এই সমস্যা ধরা পড়ে তাহলে সে কি প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারে এবং কোন ধরনের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিতে পারে সেই সম্পর্কেই মূলত আজকের এই আর্টিকেল।

লিভার জন্ডিসের প্রাথমিক লক্ষণ

সাধারণত লিভার জন্ডিস যদি কারো ধরা পড়ে তাহলে কিভাবে সে বুঝবে অবশ্যই কিছু প্রাথমিক লক্ষণ আছে যেগুলো বোঝা যায়। সাধারণত পেটের যে পেশীগুলো রয়েছে সেগুলোতে প্রচন্ড ব্যথা হবে এই সমস্যার কারণে এবং এটা হচ্ছে প্রাথমিক লক্ষণ এর মধ্যে একটি লক্ষণ। আস্তে আস্তে এই ব্যাথা পুরো পেটে হয়ে যেতে পারে যেটা রোগী নিজে উপলব্ধি করতে পারবেন।

এই অবস্থাতে রোগীকে কোন কিছুই খেতে ভালো লাগে না কিন্তু যদি হঠাৎ করে কোন কিছু সেই রোগী খায় তাহলে বমি হয় এবং বমি অতিরিক্ত হতে থাকে। এ অবস্থাতে পেটে জ্বালাপোড়া অথবা বদ হজম সৃষ্টি হয় যেগুলো রোগীকে অবশ্যই বুঝতে হবে। অনেক রোগীদের ক্ষেত্রে আরও বড় ধরনের সমস্যা হয় যেমন হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া। যদি আপনি খেতে না পারেন স্বাভাবিকভাবেই আপনার ওজন কমে যাবে তাই এই অবস্থাতে রোগীর খাওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এছাড়াও ক্লান্তি এবং মানসিক দিক দিয়ে রোগীকে অনেক দুর্বল করে দেবে এই লিভার জন্ডিস। অনেক সময় রোগীদের পায়খানা সমস্যা ও তৈরি হতে পারে। কোন কোন সময় স্বাভাবিক আবার কোন কোন সময় হঠাৎ করে ডায়রিয়া আবার কোন কোন সময় কোষ্ঠকাঠিন্য এরকম অনিয়মিত ঘটনা ঘটতে পারে।

লিভার জন্ডিস এর চিকিৎসা

আপনি যদি লিভার জন্ডিসের চিকিৎসা করাতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে সাভার প্রথমে একজন ভালো লিভার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। এই অবস্থাতে সাধারনত চিকিৎসকেরা হেপাটাইটিস বি নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন ভ্যাকসিন বা ঔষধ দিতে পারেন। এটা করা অত্যন্ত জরুরি তার কারণ হচ্ছে হেপাটাইটিস বি আক্রান্ত হলে সেটা ক্যান্সারের রূপান্তরিত হতে পারে।

এছাড়াও লিভারের বায়োপসি টেস্ট করানো যেতে পারে যার মাধ্যমে রোগ সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানা যায়। সবকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরে যদি স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে তাহলে অবশ্যই নির্দিষ্ট কিছু ঔষধ আছে যেই ঔষধ গুলোর নিয়মিত সেবনে সেই ব্যক্তি এই সমস্যা থেকে পুরোপুরি সুস্থ হতে পারবেন। তবে চিকিৎসা চলাকালীন একটি বিষয়ে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে সেটা হচ্ছে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে সেই ব্যক্তিকে।

পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কোন ধরনের কাজ বা কোন ধরনের কার্যকলাপের মধ্যে যাওয়া যাবে না এমনকি সম্ভব হলে মানসিক দিক দিয়েও কোন চিন্তা ভাবনা করা যাবে না। খাবারের ক্ষেত্রে অবশ্যই বিধি নিষেধ আসবে সেটা চিকিৎসকের কাছ থেকে আপনাকে জেনে নিতে হবে।