জন্ডিস হলে করণীয়

জন্ডিস রোগ অত্যন্ত স্বাভাবিক একটি রোগ তবে এটার চিকিৎসা সঠিক সময় না পড়লে এটা অস্বাভাবিক রোগে রূপান্তর হতে পারে। সাধারণত বিভিন্ন কারণে রক্তে যদি বিলুবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে যায় তাহলে সেটাকে জন্ডিস হিসেবে ধরা হয়। এই জন্ডিস চিকিৎসার বর্তমানে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু হয়েছে তাই ঘরে বসে না থেকে আপনি যদি চিকিৎসার আওতায় আসেন তাহলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে পুরোপুরি সুস্থ হতে পারবেন।

আমরা নিচে জন্ডিস রোগের জন্য কি কি চিকিৎসা ব্যবস্থা বর্তমানে চালু রয়েছে সে সম্পর্কে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করব তা আশা করছি আপনারা বিস্তারিত আলোচনা করার ক্ষেত্রে আমাদের সঙ্গে থাকবেন শেষ পর্যন্ত। তার আগে আমরা জানার চেষ্টা করব জন্ডিস ধরা পড়ার জন্য কোন কোন টেস্টের প্রয়োজন রয়েছে এবং কিভাবে সেটা করতে হবে সে সম্পর্কে।

জন্ডিস রোগের পরীক্ষা

সাধারণত জন্ডিস রোগের প্রথম যে পরীক্ষা করতে হয় তার নাম হচ্ছে বিলিরুবিন। এই বিলিরুবিনের পরিমাণ যদি স্বাভাবিক অবস্থানে থাকে অর্থাৎ জন্ডিস হয়েছে কিন্তু একেবারে স্বাভাবিক অবস্থানে থাকে তাহলে কোন ধরনের চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে না এবং অন্য কোন পরীক্ষা করার প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু যদি এই বিলের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায় তাহলে সেই ক্ষেত্রে অন্যান্য পরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে তার কারণ হচ্ছে এটা সঙ্গে অন্যান্য অঙ্গের বিভিন্ন সম্পর্ক রয়েছে যেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

বিলিরুবিনের মাত্রা অনেক বেশি হলে এই টেস্টের পাশাপাশি লিভার ফাংশন টেস্ট করানো হয়। তার কারণ হচ্ছে রক্ত যখন বিলিরুবিন বেড়ে যাবে তখন বিভিন্ন এনজাইম এর সংখ্যাও বেড়ে যেতে পারে আর যার কারণে লিভার ফাংশনে সেটা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে তাই সেই হিসাবে অবশ্যই লিভার ফাংশন পরীক্ষা করে দেখতে হবে।

মাত্রা অত্যাধিক হলে সাধারণত হেপাটাইটিস ভাইরাস এর সমস্যা ও তৈরি হতে পারে তাই এই ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যাতে করে হেপাটাইটিস টেস্ট করানো হয়। যদি কোনভাবে হেপাটাইটিস টেস্ট মিস হয়ে যায় এবং এই ভাইরাস শরীরে থাকে তাহলে সেই রোগীর অবস্থার অবনতি হতে শুরু করবে যেটা অনেক মারাত্মক।

বিলিরুবেন অবস্থা আরো যদি খারাপ হয় সে ক্ষেত্রে রোগীর পেটের আলট্রাসনোগ্রাফি করানো হয় তার কারণ হচ্ছে এই আল্টাসনোগ্রাফির মাধ্যমে রোগের লিভারের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের ঔষধ বা ড্রাগের কারণে জন্ডিস হয়েছে কিনা এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে একটি টেস্ট রয়েছে যেই টেস্টের নাম হচ্ছে গামা জি টি টেস্ট। অনেক রোগীদের ক্ষেত্রে এই টেস্ট করানোর প্রয়োজনীয়তা পড়ে।

জন্ডিসের লক্ষণ ও উপসর্গ

জন্ডিস রোগের উপসর্গগুলো একেবারেই কমন অর্থাৎ উপসর্গ গুলো খুব সহজে বোঝা যায় মনে করুন কারো জন্ডিস হয়েছে সেটা তাকে দেখে বোঝা যাচ্ছে না এটা হতে পারে না। সবার প্রথমে রোগী যেটা বুঝতে পারে সেটা হচ্ছে তার প্রস্রাবের রং পরিবর্তন হওয়া। সাধারণত রোগের প্রস্তাবের রং পরিবর্তন হলে ধারণা করে নেওয়া হয় তার জন্ডিস হয়েছে।
তবে একটা দুইটা উপসর্গের মাধ্যমে এটা বোঝা যায় না এর জন্য প্রয়োজন আরো কিছু উপসর্গ যেমন মনে করুন তার শরীরের রং পরিবর্তন অর্থাৎ শরীরের রং হলুদ হয়ে যাওয়া এবং চোখের রং হলুদ হয়ে যাওয়া। অনেক রোগের ক্ষেত্রে মুখের ভেতরেও হলুদ হয়ে যেতে পারে আবার হালকা হালকা জ্বর এবং বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া জন্ডিসের আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। হঠাৎ করে শরীরের ওজন কমে যাওয়া জন্ডিসের একটি বড় লক্ষণ।

জন্ডিসের চিকিৎসা

সবার প্রথমে খেয়াল রাখতে হবে জন্ডিসের সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে কিনা অর্থাৎ জন্ডিস যদি প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে তাহলে আপনাকে খুব বড় চিকিৎসা করতে হবে না। জন্ডিস চিকিৎসায় সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে রেস্ট করা। আপনাকে কিছুদিন একেবারে রেস্ট করতে হবে এবং একেবারে সাধারণ খাবার বা হালকা খাবার গুলো খেতে হবে। এর পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খুবই অল্প পরিমাণে ঔষধ খেতে হবে।