ক্রিয়েটিনিন কেন বাড়ে

আমাদের শরীরে বিভিন্ন অঙ্গে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা মাঝে মধ্যে হয়ে থাকে। আমরা যখন বিভিন্ন লক্ষণের মাধ্যমে এই সমস্যাগুলো উপলব্ধি করতে পারি তখন অবশ্যই আমরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে চাই। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অবশ্যই আমাদের এমন কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হয় যে পরীক্ষার মাধ্যমে আমরা রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারি। সত্যিই আমাদের কোন সমস্যা আছে কিনা এবং সেটা কতটুকু সে সম্পর্কে জানতে বিভিন্ন টেস্ট করি।কিডনি আমাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ আর এই কিডনির সমস্যা আছে কিনা সেটা জানার জন্য সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং সব থেকে ভালো মানের টেস্ট হচ্ছে রক্তে ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা। যদি এখন কেউ প্রশ্ন করেন এটার মান কেন বাড়ে তাহলে সহজ কথায় আমরা সে প্রশ্নের উত্তরে বলতে পারি যে কিডনির সমস্যা বৃদ্ধি পেলেই এই ক্রিয়েটিনিন এর মান বৃদ্ধি পাবে।

কিডনির সমস্যা বলতে এখনো অনেকেই অনেক ধরনের উল্টাপাল্টা চিন্তা ভাবনা করতে পারেন। কিডনির সমস্যা বলতে যেকোনো ধরনের সমস্যাকেই বোঝাতে পারে যেমন ধরুন কিডনিতে পাথর হয়েছে এমন রোগীদের ক্ষেত্রে ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করলে সেটা বৃদ্ধি পাওয়া একেবারেই স্বাভাবিক ব্যাপার। যেকোনো ধরনের সমস্যার কারণেই এই মান বৃদ্ধি পেতে পারে তাই এখানে ভুল বোঝাবুঝির কোন কারণ নেই। আশা করছি বিষয়টি আপনারা বুঝতে পেরেছেন।

ক্রিয়েটিনিন বাড়লে কি হয়

রক্তে যদি ক্রিয়েটি নিন বেড়ে যায় তাহলে স্বাভাবিকভাবেই বুঝে নিতে হবে যে কোন রোগের কিডনিতে সমস্যা হয়েছে। এখন অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন কিডনিতে কি ধরনের সমস্যা হলে রক্তের ক্রিয়েটি নিন বেড়ে যায়। সাধারণত কিডনি আমাদের শরীরের সকল ধরনের তরলকে পরিশোধিত করে এবং এই কাজে সব সময় নিজেকে নিয়োজিত রাখে। আমরা সকলে অবগত আছি যে প্রত্যেক মানব শরীরে দুইটি করে কিডনি আছে। তবে সব থেকে বড় ব্যাপার হলো এই কিডনিগুলো আমাদের শরীরের এতটাই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যে যে কোন সময় কিডনি ড্যামেজ হলে রোগী ২৪ ঘন্টার মধ্যে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।যখন একজন রোগীর কিডনিতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয় যেমন মনে করুন কিডনিতে পাথর অথবা কিডনিতে ইনফেকশন এই ধরনের সমস্যা হয় অনেকের ক্ষেত্রে কিডনি ফুলে যাওয়ার মতন সমস্যা ও দেখা দেয় এ ধরনের সমস্যা হলে স্বাভাবিকভাবেই যদি রক্তে ক্রিয়েটিনিন এর পরিমাপ করা হয় তাহলে সেটা বেশি দেখা যাবে। তাহলে পরিষ্কারভাবে এটা নিশ্চিত হতে পারা যাবে যে অবশ্যই কিডনিতে সমস্যা হয়েছে।

ক্রিয়েটিনিন নিয়ন্ত্রণের উপায়

রক্তে ক্রিয়েটিনিন নিয়ন্ত্রণের প্রধান উপায় হচ্ছে কিডনিকে সুস্থ রাখা। কিডনিকে সুস্থ রাখতে হলে অবশ্যই আপনাকে নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং নিয়মিত চিকিৎসার মধ্যে থাকতে হবে যদি পূর্বে থেকে আপনার কিডনির কোন সমস্যা থাকে। তবে যদি পূর্বে থেকে কোন সমস্যা না থাকে তাহলে নিয়মিত কয়েকটি অভ্যাস আপনার কিডনি র রোগ প্রতিরোধে আপনাকে সাহায্য করবে।

যেমন মনে করেন প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করা এর পাশাপাশি যারা ধূমপান অথবা মদ্যপান করেন তাদেরকে এ অভ্যাস একবারে পরিত্যাগ করা। খাবার খাওয়ার সময় চেষ্টা করা যাতে করে হালকা খাবার খাওয়া যায় বেশি তৈলাক তো অথবা বেশি ভারী কাবার খেলে তার কিডনি সহ্য করতে পারে না এবং আস্তে আস্তে সমস্যার সৃষ্টি হয়। কিডনির পাথর হওয়ার জন্য লবণের সোডিয়াম অত্যন্ত দায়ী একটি জিনিস তা এখানে চেষ্টা করতে হবে লবণ খাওয়া কমানোর।

কিডনির সমস্যা হলে করণীয়

বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে যদি কিডনির সমস্যা ধরা পড়ে তাহলে সে সমস্যার সমাধান করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করায় সকলের লক্ষ্য। আপনাদের জানিয়ে রাখি কিডনি ড্যামেজ হওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে যে কোন রোগী মারা যেতে পারে তাই কিডনি রোগের ক্ষেত্রে কোন অবহেলা বা কোন দেরি করা যাবে না। যদিও আল্লাহ তাআলা আমাদের প্রত্যেককে দুইটি করে কিডনি দিয়েছে কিন্তু তারপরেও অবহেলার কারণেই প্রতিদিন কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে।