আপনাদের সকলকে স্বাগতম জানাই আমাদের আজকের এ আর্টিকেলে। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। আজকের আলোচ্য বিষয় হল কিডনি রোগীদের নিয়ে। কিডনি রোগী কি মাছ খেতে পারবে সেই বিষয়ে আমরা সকল তথ্যগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করব। আপনারা যারা কিডনি রোগীদের এই তথ্যগুলো সম্পর্কে জানতে চান তারা আমাদের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন এবং আমাদের সাথেই থাকুন।
বিশেষ করে কিডনি সমস্যা ধরা পড়ার পর অনেকেই প্রোটিন বা আমিষ জাতীয় খাবার খাওয়া একেবারে ছেড়ে দেন আবার অনেকেই রয়েছেন যারা প্রোটিন বা আমিষ জাতীয় খাবার গুলো অনেকাংশেই আগের তুলনায় কমিয়ে দেন। তবে আমিষ জাতীয় খাবার অত্যধিক কমিয়ে দিলে পুষ্টি হীনতায় ভুগতে হবে একজন কিডনি রোগীকে। আর একজন রোগী যখন পুষ্টিহীনতায় ভোগেন তখন তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং সেই রোগী তখন মৃত্যু ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে থাকে।
তাই অবশ্যই আমাদেরকে জানতে হবে যে একজন কিডনি রোগীর জন্য কি কি প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। না জেনে শুনে কোন নিয়ম-কানুন মানা আসলেই ঠিক নয়। কিডনির কার্যক্ষমতা বুঝে প্রোটিন গ্রহণের মাত্রা ঠিক করা উচিত এতে করে কিডনি কার্যক্ষমতা কতটুকু আছে তা রক্তের পরীক্ষা দিয়ে নির্ণয় করা সম্ভব। তো চলুন আজকে আমরা জেনে আসি কিডনির রোগী কি মাছ খেতে পারবে সে সম্পর্কে।
একজন কিডনি রোগীর কিডনির সমস্যা যদি মৃদু হয় তাহলে সেই রোগী স্বাভাবিক খাবার নিয়মিত খেতে পারবেন। অর্থাৎ একজন রোগী তার ওজন যদি 60 কেজি হয়ে থাকে তাহলে সেই রোগিটি প্রতিদিন ৪৮ গ্রাম প্রোটিন খেতে পারবেন এতে করে তার রোগ এর কোন সমস্যা হবে না। এর কারণ হলো প্রত্যেকটি রোগীর শরীরে প্রোটিন থাকা আবশ্যক।
সঠিক পরিমাণে যদি প্রোটিন না থাকে তাহলে সেই রোগিটি পুষ্টিহীনতায় ভুগবে এবং এতে করে তার রূপ প্রতিরোধ ক্ষমতা আগের তুলনায় অনেকাংশে কমে যাবে আর এর জন্য সেই রোগিটি আরো অসুস্থ হয়ে যাবে এমনকি সেই রোগীটি মৃত্যুর দিকে ঢলে পড়বে। তবে অবশ্যই মনে রাখবেন যে কিডনির সমস্যা থাকলেও একজন মানুষ দিনে একটা ডিম দুপুর ও রাতের খাবারের দুই টুকরা মাছ বা মাংস অথবা তিনবার চার টেবিল চামচ ডাল খেতে পারবেন অনায়াসেই। এছাড়াও রেড মিট মানে গরু বা খাসির মাংসের পরিবর্তে মুরগির মাংস ও মাছ খাওয়া একজন কিডনি রোগীর পক্ষে ভালো।
কিডনি রোগীর জন্য ফল ও শাকসবজি
একজন কিডনি রোগীর জন্য যেসব ফল ও শাকসবজি খাওয়া প্রয়োজন সে সকল ফল ও শাকসবজি গুলোর তালিকা আমরা আমাদের আর্টিকেলের এই অংশে শুধুমাত্র আপনাদের জন্য আলোচনা করছি। কিডনি রোগীদের সবসময় যে নানা ধরনের ফল বা শাকসবজি খাওয়া নিষেধ এ ধারণাটি আমাদের মধ্যে অনেকাংশেরই রয়েছে। তবে এ ধারণাটি একেবারেই ভুল।
শুধু কারো রক্তে যদি পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি থাকে বা কিডনির জিএফ আর যদি ৩০ এর কম হয় তাহলে পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার কম খেতে হবে সেই রোগীর ক্ষেত্রে। তবে ডাবের পানি কলা খেজুর শুকনা ফল আলু টমেটো শসা এবং ফলের রসে পটাশিয়াম বেশি থাকে। তাই এ খাবারগুলো একটু কম খাওয়ায় উচিত।
এছাড়াও আপেল পেয়ারা আঙ্গুর নাশপাতি জাম ও তরমুজ এ ফলগুলোই পটাশিয়াম তুলনামূলকভাবে কম থাকার কারণে এই ফলগুলো একজন কিডনি রোগী পরিমাণ মতোই খেতে পারবেন প্রতিদিন। তবে একজন কিডনি রোগীর জন্য সবথেকে ভালো হয় শাকসবজি সেদ্ধ করে পানি ফেলে দিয়ে তারপর রান্না করে ওই শাকসবজি নিয়মিত খাওয়া। এভাবে একটু কষ্ট করে যদি একজন কিডনি রোগী সমস্ত নিয়মগুলো মেনে সঠিকভাবে খাওয়া-দাওয়া চালিয়ে যেতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনার রোগের অনেক অংশেই কমে যাবে।