গর্ভাবস্থার শেষের তিন মাসে একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য বেশ আবেগের হলেও কষ্টেরও বটে। গর্ভাবস্থায় শেষ তিন মাসের সর্তকতা একজন গর্ভবতী মা ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জেনে রাখা বিশেষভাবে জরুরী। গর্ভাবস্থার শেষের তিন মাস মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি সময় এ সময়টাতে একজন গর্ভবতী মাকে কিছুটা সতর্ক থাকতে হয় এর পাশাপাশি খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে বিশেষ যত্ন নিতেও হয়।
আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন গর্ভবতী মায়ের শেষ তিন মাসের খাদ্য তালিকা সম্পর্কে। তাই আমরা আজকে নিয়ে এসেছি আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নতুন একটি আর্টিকেল। আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসের সর্তকতা অর্থাৎ এই সময়টাতে তাকে কোন কোন বিষয়গুলো এড়িয়ে চলতে হবে সে সম্পর্কে এবং এর পাশাপাশি আমরা আরও আলোচনা করব গর্ভবতী মায়ের শেষ তিন মাসের খাদ্য তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য।
গর্ভাবস্থায় শেষ তিন মাসের সতর্কতা
একজন গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসে এসে বিশেষ যত্ন ও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। গর্ভবতী মায়ের গর্ভধারণ থেকে প্রসবের সময় পর্যন্ত সময়টাকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। সাধারণত প্রথম মাস থেকে তিন মাস পর্যন্ত সময় কে বলা হয় ফার্স্ট ট্রাইমিস্টার, চার মাস থেকে ছয় মাস পর্যন্ত সময়টাকে বলা হয় সেকেন্ড ট্রাই মিস্টার, এবং সপ্তম মাস থেকে প্রসবকাল পর্যন্ত যে সময়টা সেটাকে আমরা ট্রাই মিস্টার বলে থাকি।
একজন গর্ভবতী মাকে তার গর্ভের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব সময় সতর্ক থাকতে হয়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন গর্ব অবস্থায় প্রথম তিন মাস এবং শেষের তিন মাস গর্ভবতী মায়েদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ সময়ে গর্ভপাত হওয়ার আশঙ্কা এবং ঝুঁকি দুটোই বেশি থাকে তাই এ সময়টাতে মাকে ভীষণভাবে যত্ন এবং সতর্ক থাকতে হবে।
গর্ভাবস্থায় মানসিক পরিবর্তন
একজন মা যখন বুঝতে পারেন সে গর্ভবতী তখন থেকেই তার মোট সুইং হতে পারে। মানসিক পরিবর্তন গর্ভাবস্থায় হওয়াটা স্বাভাবিক। বিশেষ করে শেষের তিন মাসে হরমোনের পরিবর্তনের পাশাপাশি মানসিক পরিবর্তন ঘটে থাকে তাছাড়া গর্ব অবস্থায় ঘুমের ব্যাঘাত মানসিক পরিবর্তনের একটি প্রধান কারণ।
এর জন্য সাধারণত মেজাজ খিটখিটে হয়ে যেতে পারে অল্পতেই হতাশ হয়ে যেতে পারে এসব হল মানসিক সমস্যা। তবে ভয়ের কিছু নেই সাধারণভাবে সন্তান জন্মের পরপরে এ সমস্যাগুলো থেকে মা রক্ষা পাবে।
গর্ভবতী মায়ের শেষ তিন মাসের খাদ্য তালিকা
একজন গর্ভবতী মায়ের শেষ তিন মাসে খাদ্য তালিকা টা একটু ভিন্ন রকম হওয়া উচিত কারণ এই সময়টাতে শিশুর ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পায় ফলে তার পুষ্টির চাহিদাও বেড়ে যায় আর এজন্যই গর্ভবতী মাকে এ সময়ে পুষ্টিকর খাবার গুলো বেশি বেশি খেতে হয়।
গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসে এসে রক্তস্বল্পতা হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায় তাই এ সময়ে বেশি বেশি আয়রন যুক্ত খাবার খেতে হবে যেমন বাদাম, কলা, ডাবের পানি, পালং শাক, মটরশুঁটি, মসুর ডাল, সবুজ শাকসবজি ও বিভিন্ন রকমের ফলমূল। এছাড়াও সর্বাধিক পরিমাণে আয়রন শোষণের প্রয়োজন ভিটামিন সি। এর পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে।
গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসে এসে শিশুর হাড়কে মজবুত করার জন্য প্রয়োজন ক্যালসিয়াম। তাই এ সময়ে ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবারগুলো মাকে বেশি বেশি খেতে হবে। এছাড়াও এ সময়ের প্রয়োজন বাড়তি ক্যালোরি কিসমিস খেজুর ইত্যাদি শুকনো ভল জোগান দেবে বাড়তি ক্যালরির।
এছাড়াও মাছ, ডিম, ডাল ও অন্যান্য প্রোটিন জাতীয় খাবার গুলো মাকে এ সময়ে বেশি বেশি খেতে হবে। গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসে এসে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাইবার কুষ্ঠ কাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে তাই ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারগুলো প্রতিদিনের খাবার রুটিনে থাকতে হবে। খাবারগুলো হল সবুজ শাকসবজি মটরশুটি নারকেল কাজুবাদাম চিনা বাদাম ইত্যাদি।