গর্ভবতী মায়ের রোজা রাখার বিধান

আমরা মুসলিম। আর রোজা রাখা হল আমাদের ফরজ ইবাদত। রমজান মাসে অনেক গর্ভবতী মা রোজা রাখেন। আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন গর্ভবতী মায়ের রোজা রাখার বিধান সম্পর্কে। আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব গর্ভবতী মায়ের রোজা সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য। রমজানে গর্ভবতী মায়েদের করণীয় বিষয়ে আজকের আর্টিকেলে বিশেষভাবে আলোচনা করা হবে।

আপনারা যারা গর্ভবতী মায়েরা রয়েছেন তাদের জন্য আমাদের আজকের আর্টিকেলটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। রোজার সময় গর্ভবতী মায়েদের বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। রমজান মাসে রোজা রাখা মুসলমানদের জন্য আল্লাহ তাআলা ফরজ করে দিয়েছেন।

তবে অসুস্থ বা সফলরত অবস্থায় রোজা না রাখার ব্যাপারেও আমাদের ইসলামে বলা রয়েছে। তবে আপনি যদি অসুস্থ অবস্থায় রোজা না রাখতে পারেন তাহলে ছুটে যাওয়ার রোজাগুলো পড়ে আপনাকে রাখতে হবে এটি আমাদের ইসলামের কথা।

গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রেও এমন একটা নির্দেশনা রয়েছে রোজার সময় গর্ভবতী নারী না খেয়ে থাকার কারণে পেটের সন্তান বা মায়ের ক্ষতি হতে পারে সে ক্ষেত্রে গর্ভবতী নারীরা রমজানে রোজা না রেখে পরে রেখে নিতে পারবেন। তবে যেহেতু আমরা মুসলমান এবং রোজা আমাদের ফরজ তাই রোজার কোন মাফ নেই। অসুস্থ অবস্থায় বা কোন কারণবশত রোজার না রাখতে পারলে পরে সে রোজা গুলো করে দিতে হবে।

গর্ভবতী মায়েদের অনেক সময় সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয় না। বেশিরভাগ গর্ভবতী মায়েদের এখন গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস ধরা পড়ে সে ক্ষেত্রে তাদের সময় মত তিন বেলা ইনসুলিন নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। আর রোজার সময় যদি সে মা রোজা থাকেন তাহলে রোজা অবস্থায় সে তো ইনসুলিন নিতে পারবে না।

দেখা যায় ইফতারের পর সুগার বেড়ে গেছে অনেকের আবার দিনের বেলায় সুগার খানিকটা কমে যায়। সেক্ষেত্রে গর্ভবতী নারীদের শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে কতটুকু খাওয়া উচিত সে বিষয়ে পুষ্টিবিদদের পরামর্শ নিতে হবে। আর গর্ভবতী নারীদের দিনের বেলা একেবারে হাঁটা নিষেধ।

কেউ চাইলে রাতে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ঘরের মধ্যে হাঁটাচলা করতে পারেন। কারণ গর্ভবত নারীরা মুখে খাওয়ার ওষুধ সেবন করলে তা অনেক সময় অনাগত সন্তানের ক্ষতি হতে পারে এ ক্ষেত্রে শুধু ইনসুলিন নিলেই ভালো।

গর্ভাবস্থায় রোজা

গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মা রোজা রাখলে তার নিজের স্বাস্থ্য অথবা সন্তানের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায় এজন্যই একজন গর্ভবতী মায়ের রোজা রাখাটা অনেক কষ্টকর হয়ে ওঠে। তাই এ সময় গর্ভবতী মায়েদের রোজা না রাখা জায়েজ আছে। তবে এই রোজাগুলো পরবর্তীতে কাজা পালন করে দিতে হবে।

গর্ভবতী ও দুগ্ধ পান কারিণী নারীর জন্য কোন ওজন ছাড়া রমজান মাসে রোজা না রাখা জায়েজ নয়। যদি ওজরের কারণে রোজা না রাখে তাহলে রোজা কাজা করতে হবে।আল্লাহ তাআলা বলেছেন তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অসুস্থ হবে অথবা সফরে থাকবে সে অন্য দিনগুলোতে এ সংখ্যা পূর্ণ করবে সুরা বাকারা।

চিকিৎসকদের মতে গর্ভাবস্থায় রোজা রাখা

গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিক এর চেয়ে দ্বিগুণ ক্যালরির প্রয়োজন হয় বলে একজন গর্ভবতী মাকে দিনে ৬ বার বা তারও বেশি খেতে বলা হয়ে থাকে। সাধারণত শীতকালের চেয়ে গ্রীষ্মকালে রোজা রাখলে দীর্ঘ সময় পানাহার থেকে বিরত থাকতে হয়। এই দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকা একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য খুবই কষ্টকর একটি ব্যাপার।

এছাড়াও গরমে গর্ভবতী মা প্রচুর ঘেমে ডিহাইড্রেশন বা পানি শূন্যতায় ভুগতে পারেন। রোজা রাখার ফলে অনাগত শিশুটি অপুষ্টি ও কম ওজন নিয়ে জন্মাতে পারে এমনকি মা মূত্রনালীর ইনফেকশনেও ভুগতে পারেন তাই এ সময় রোজা রাখা ঠিক নয়। তবে অবশ্যই মা সুস্থ হওয়ার পর সময় করে সে কাজা রোজা গুলো তুলে নিতে পারেন।