বাচ্চাদের মধ্যে যদি কোন বড় কোন রোগ থাকে তাহলে সেটা হচ্ছে নিউমোনিয়া। নিউমোনিয়া এমন একটি সমস্যা যেটা যেকোনো বয়সের বাচ্চাদের মধ্যে হুট করে আসতে পারে এবং এর সঠিক চিকিৎসা না হলে এটা বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে । আজকের এই আর্টিকেল থেকে আমরা নিউমোনিয়া সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব এবং নিউমোনিয়া তে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে সাধারণত কোন কোন উপসর্গ বা লক্ষণ দেখা যায় সেগুলো জানবো। তাহলে চলুন জানি আর লক্ষণ গুলো কি।
বাচ্চাদের যদি নিউমোনি হয় তাহলে অবশ্যই সেখানে কাশি হবে এবং কাশির সঙ্গে হলুদ বা সবুজ রঙের কফ উঠতে পারে। এটা নিউমোনিয়ার সাধারণ একটি লক্ষণ অবশ্যই আরো কিছু লক্ষণ আছে যে লক্ষণ গুলো আপনারা খুব সহজেই ধরতে পারলে খুব তাড়াতাড়ি বাচ্চার চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব হবে এবং তাকে সুস্থ করা যাবে।
এর পাশাপাশি যে সমস্যা তৈরি হতে পারে সেটা হচ্ছে শ্বাস-প্রশ্বাসের কষ্ট অর্থাৎ বাচ্চা যখন নিঃশ্বাস নেবে তখন তার বুকের মধ্যে শব্দ হবে এবং শাস্তিতে কষ্ট হবে। শ্বাস নেওয়ার সময় বা কাশির সময় বুকে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। সাধারণত এই উপসর্গগুলো যদি একইসঙ্গে দেখা যায় তাহলে অবশ্যই এটা সন্দেহজনক ব্যাপার।
অনেক বাচ্চাদের সময় শ্বাস নেওয়ার বুকের ভেতরে আওয়াজ সৃষ্টি হতে পারে এবং শরীরের তাপমাত্রায় 103 ডিগ্রি ফারেনহাইট এর ওপর থাকতে পারে। এর পাশাপাশি বুকে ব্যথা হতে পারে এবং সারা শরীরেও ব্যাথা হতে পারে যদি কোন বাচ্চার নিউমোনিয়া হয় তাহলে।
বাচ্চাদের নিউমোনিয়ার লক্ষণ
বাচ্চাদের নিউমোনিয়ার আরেকটি লক্ষণ হতে পারে ক্লান্তি অর্থাৎ বাচ্চারা অত্যন্ত ক্লান্তি অনুভব করবে এবং যে খেলাধুলা করছিল সেই খেলাধুলা তারা আস্তে আস্তে কমিয়ে দেবে এবং ক্লান্তিতে বসে থাকবে। বাচ্চার নিউমোনিয়া হওয়ার আরেকটি লক্ষণ হতে পারে খাবারের অরুচি অর্থাৎ তার খাওয়ার প্রতি আগ্রহ কমে যাবে এবং সে খেতে চাইবে না টানা তিন সপ্তাহের বেশি কাশি থাকবে।
যাদের নিউমোনিয়ার অবস্থা অনেক খারাপ তাদের ক্ষেত্রে কাশির সঙ্গে রক্তপাত হতে পারে এবং পুরো শরীরে যে শিরা গুলো রয়েছে সেই শিরা গুলোর ফ্যাকাসে নীল দাগ দেখা যেতে পারে। সাধারণত এই সমস্যাগুলো অত্যন্ত সাংঘাতিক তাই এই লক্ষণ গুলো দেখার সঙ্গে সঙ্গে নিজের শিশুকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে আসুন এবং চিকিৎসা করার যত দ্রুত সম্ভব।
নিউমোনিয়া দূর করার উপায়
এটা অনেক বড় একটি রোগ তাই চেষ্টা করতে হবে এই রোগ দূর করতে। এটা দীর্ঘদিন ধরে বাচ্চার শরীরে থাকতে পারে এবং যেকোনো সময় অঘটন ঘটাতে পারে তাই এটার জন্য আপনাকে অবশ্যই চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। ঘরোয়া পদ্ধতিতে সাধারণত নিউমোনিয়া দূর করা যায় না। নিউমোনিয়া চিকিৎসায় অবশ্যই আপনাকে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে এবং নিবিড় পরিচর্যায় এই চিকিৎসা করাতে হবে।
সাধারণত নিউমোনিয়া চিকিৎসায় ফুসফুসের প্রদাহের তীব্রতা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয় যাতে করে এটা আস্তে আস্তে না পারে এবং গোটা ফুসফুসের না ছড়িয়ে পড়ে। বাড়ি থেকে নিরাময় করার সম্ভব হলেও এর ভয়াবহতা অনেক বেশি তাই ডাক্তারের চিকিৎসা নেওয়ার জন্য হাসপাতালে আসা উচিত এবং এখানে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।
সাধারণত এখানে এন্টিবায়োটিক এর প্রয়োগ করা হয় যেটা অত্যন্ত মুখ্য একটি ব্যাপার এবং এন্টিবায়োটিক যত ভালো এবং যত তাড়াতাড়ি কাজ করবে ততটাই ভালো। অ্যান্টিবায়োটিক এর সঙ্গে কফ মেডিসিন ব্যবহার করা হয় এবং জ্বরের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ঔষধ দেওয়া হয়। সাধারণত অনেক সময় রোগীদের শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে যদি খুব বেশি কষ্ট হয় সেই ক্ষেত্রে অক্সিজেনের ব্যবহার করা হয় এবং অক্সিজেনের মাধ্যমে সে রোগীকে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সাহায্য করা হয়। এই ভাবেই সাধারণত বাচ্চাদের নিউমোনিয়া নিয়ন্ত্রণ করা হয়।