একজন মায়ের সবথেকে মনে রাখার মত সময় হলো তার গর্ভাবস্থা। একজন মায়ের জীবনে সবথেকে আনন্দের মুহূর্ত হয়তোবা এই সময়টি। তাই একজন মা যখন জানতে পারেন যে সে গর্ভবতী হয়েছে ঠিক তখন থেকেই সেই মায়ের শরীরের যত্ন নিয়মিতভাবে নেওয়া উচিত।অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় গর্ভবতী মায়েদের রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। একজন গর্ভবতী মায়ের যদি রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় অর্থাৎ গর্ভবতী মায়ের শরীরে যদি রক্ত কম থাকে তাহলে শুধু মানা শিশির ও এক্ষেত্রে অনেক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
তাই অবশ্যই একজন গর্ভবতী মাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খেয়াল রাখতে হবে যে তার শরীরের রক্তের পরিমাণটি ঠিকমতো রয়েছে কিনা। একজন গর্ভবতী মা যদি চেকআপের মাধ্যমে জানতে পারেন যে তার শরীরে রক্তের পরিমাণ কম রয়েছে তাহলে অবশ্যই তাকে সেভাবেই নিয়ম অনুযায়ী খাবার দাবার মেইনটেইন করে নিতে হবে।
যাতে করে তার শরীরে রক্তের পরিমাণ ঠিকঠাক মতো হয়ে যায়। তাই একজন গর্ভবতী মায়ের অবশ্যই গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন এতে করে মা ও সন্তান উভয়ের জন্য একান্ত প্রয়োজনীয়। এজন্য অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে খাবারে যাতে যথেষ্ট পরিমাণে প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম থাকে। এইজন্য বেশি বেশি দুগ্ধ যাক খাদ্যদ্রব্য রোজকার খাদ্য তালিকায় থাকতেই হবে। এছাড়াও আমিষের পরিমাণটিও থাকতে হবে খাদ্য তালিকায়।
গর্ভবতী মায়েদের জন্য তার প্রতিদিনের খাবার তালিকায় ডাল সয়াবিন বাদাম জাতীয় খাদ্যদ্রব্য গুলো থাকা অতি প্রয়োজনীয় এ জাতীয় খাদ্যদ্রব্যে রয়েছে সাইবার প্রোটিন আয়রন ফলিক ও ক্যালসিয়াম এ সমস্ত কিছুই শিশুর বেড়ে ওঠার জন্য বিশেষভাবে প্রয়োজনীয়।
গর্ভবতী মায়ের যা খেলে রক্ত বাড়বে
একজন মা যখন গর্ভবতী হন ঠিক তখন সেই মায়ের এবং গর্ভের সন্তানের জন্য বিশেষ পুষ্টির প্রয়োজন থাকে। আর ঠিক এর জন্য গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিনের খাবার তালিকায় থাকতে হবে ফলমূল, শাকসবজি, এবং আমিষ জাতীয় খাবার।গর্ভধারণের প্রথম থেকে যথেষ্ট লৌহ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত যেমন কচু শাক, কাঁচা কলা, পেয়ারা, সিম, মটর ডাল, বাঁধাকপি, কলিজা, গোস্ত, খোলসহ মাছ যেমন, চিংড়ি মাছ। এছাড়াও চিকিৎসকের পরামর্শে প্রথম তিন মাসের পর থেকে নিয়মিত আইরন ট্যাবলেট সেবন করা প্রত্যেকটি গর্ভবতী মায়েদের উচিত।
সাধারণত প্রথম তিন মাসে প্রতিটি মায়েদের মাসিক বন্ধ থাকার কারণে রক্তশূন্যতা ততটা প্রকট হয়ে ওঠে না এবং এ সময়ে আইরন খেলে বমি ভাব অথবা ক্ষুধামান্দ বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে না তবে গর্ভকালীন কয়েকবার রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা দেখা অবশ্যই দরকার। রক্তশূন্যতা তীব্র আকার ধারণ করলে প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি করে আইরন ইনজেকশন এমনকি রক্ত পরিসঞ্চালনেরও দরকার হতে পারে একজন গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রে।
তাই অবশ্যই গর্ভাবস্থায় থাকা কালে একজন গর্ভবতী মায়ের দায়িত্ব ও কর্তব্য চেয়ে পুরো নয় মাসের মধ্যে তিন থেকে চারবার হিমোগ্লোবিনের মাত্রা দেখে নেওয়া। এছাড়াও রক্তশূন্যতার কিছু লক্ষণও রয়েছে। একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরে যখন রক্ত কম থাকে তখন শরীর দুর্বল লাগে এবং সামান্য পরিশ্রমে খুবই ক্লান্তির অনুভব হয়ে থাকে।এছাড়াও সারাক্ষণ মাথা ঝিমঝিম করা ফ্যাকাসে বিবর্ণ মুখ ও চোখ সাদা হয়ে যাওয়া এবং যিহবা ও মুখে ঘা পর্যন্ত দেখা দিতে পারে।তাই রক্তশূন্যতা বেশি হলে বুক ধরফর করা শ্বাসকষ্ট এবং পাও ফুলে যেতে পারে একজন গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রে।
তাই অবশ্যই হিমোগ্লোবিন এর মাত্রা দেখার পর যদি একজন গর্ভবতী মা বুঝতে পারেন যে তার শরীরে রক্তের পরিমাণ কম তাহলে অবশ্যই উপরের উল্লেখিত খাবার গুলো নিয়মিতভাবে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন। এতে করে প্রতিটি গর্ভবতী মা যেমন সুস্থ থাকবে ঠিক তেমনি তার গর্ভের সন্তানও থাকবে সুস্থ।
প্রত্যেকটি গর্ভবতী মায়েদের একটি স্বপ্ন থাকে আর সেটি হল তার গর্ভাবস্থার পুরোটাই যেন সে সুস্থ স্বাভাবিকভাবে কাটাতে পারে এবং তার গর্ভের সন্তান যেন সুস্থভাবে জন্ম দিতে পারে। তাই বলবো সুস্থ সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য অবশ্যই নিয়মিতভাবে পুষ্টিকর খাবার খান এবং নিজে ভাল থাকুন আর সুস্থ স্বাভাবিক সন্তান জন্ম দিন।