মাসিক হওয়ার পরও কি গর্ভবতী হয়

কিছু কিছু নারীদের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে গর্ভাবস্থায় যোনি পথে রক্তপাত হয়ে যায়। তবে এটি খুব অল্প ক্ষেত্রেই শোনা যেয়ে থাকে যে গর্ভবতী মায়ের মাসিকের মত থেমে থেমে রক্ত প্রবাহ হচ্ছে। আমরা হয়তো তখনই ভেবে নেই যে হয়তোবা বাচ্চাটা নষ্ট হয়ে যাবে কারণ আমাদের চিন্তাভাবনা হলো একজন মা যখন গর্ভবতী হবেন তখন তার কিছুতেই আর মাসিক হবে না।

গর্ভাবস্থায় জনি থেকে রক্ত বের হলে সেটা কখনোই মাসিক নয় বরং অন্য কিছু। এটি আমরা অনেকেই জানিনা এবং মানতেও চাই না। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করতে এসেছি মাসিক হওয়ার পরও কি গর্ভবতী হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য নিয়ে। চলুন এ বিষয়ে আজকে আমরা ভালোভাবে জেনে আসি।

মাসিক কখন হয়

নারীদের মাসিক তখনই হয় যখন একজন নারী গর্ভধারণ করেন না। এটি আমাদের সবারই জানা কথা। প্রতিমাসে আপনার জড়াইতে রক্তের পরিপূর্ণ ঘন আসতর তৈরি করে থাকে যাতে সহবাসে বা অন্য কোনভাবে নিষিদ্ধ ডিম্বা যেন এখানে আটকাতে পারে। যদি কোন মাসে আপনি গর্ভধারণ না করে থাকেন তাহলে আপনার শরীর এই টিস্যু ও রক্তের আস্তর দেহ থেকে বের করে দেয়। এই বের হয়ে যাওয়ায় মাসিক বা ম্যেরিস্ট্রিয়াল পিরিয়ড বা সংক্ষেপে পিরিয়ড বলা হয়ে থাকে যেটি সাধারণভাবে প্রত্যেকটি নারীর ক্ষেত্রে ঘটে থাকে।

একজন মেয়ে যখন বয়সন্ধিকাল এ চলে আসে তখন থেকেই সে মেয়েটির মাসিক বা পিরিয়ড শুরু হয়ে যায়। এবং এই মাসিক বা পিরিয়ড প্রতি মাসেই নিয়ম অনুযায়ী হয়ে থাকে। যাদের প্রতি মাসে নিয়ম অনুযায়ী মাসিক বা পিরিয়ড হয়না তাদের অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা রয়েছে।

যখনই কোন ডিম্বানু জরায়ে দেয়ালে আটকে যায় আপনার হরমোন এই রক্ত ও টিস্যুর অন্তরকে শরীর থেকে বের না করার সংকেত দেয় কারণ এটা ডিম্বাণুতে থাকা সম্ভাব্য মানবসন্তানের আবাসস্থল।

যদি আপনার গর্ভাবস্থায় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই আস্তরণ এখানেই থেকে যায় তাই এজন্যই এ সময় আপনার মাসিক হওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। এবার হয়তো আমাদের অনেকের মানে প্রশ্ন জাগবে যে তাহলে কেন গর্ভবতী মায়েদের রক্ত প্রবাহ হয়ে থাকে। হ্যাঁ অবশ্যই এটি সবারই মনে প্রশ্ন জাগার একটি কথা।

একজন গর্ভবতী মায়েদের বিভিন্ন কারণে রক্ত প্রবাহ হয়ে থাকতে পারে। এর মাঝে কিছু অবস্থান নিয়ে চিন্তিত হবার কারণ রয়েছে। কোন কোন মায়েদের ক্ষেত্রে গর্ভবতী হওয়ার পরও প্রতি মাসে পিরিয়ড হয়ে থাকে তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে এটি যদি সামান্য পরিমাণে হালকা হালকা হয়ে থাকে তাহলে ভয়ের কোন কারণ নেই। তবে এটি যদি পিরিয়ডের মতই বেশি পরিমাণে রক্তপাত হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ নিতে হবে।

গর্ভাবস্থায় রক্ত প্রবাহের কারণ

অনেক নারী রায় বলে থাকেন যে তাদের মাসিকের তারিখের সপ্তাহখানেক আগে তারা হালকা রক্ত যেতে দেখেন যেটাকে অনেকে স্পোটিং বলে থাকে। আসলে স্বাভাবিকভাবে তারা একে আগেভাগে মাসিক হয়ে যাচ্ছে বলেই ধারণা করে নেন।

তবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে এই রক্তপাত মাসিকের তুলনায় বেশ সামান্য এবং এক বা দুইদিনে শেষ হয়ে যায়। সাধারণত একে ইমপ্ল্যান্টেশন ব্লিডিং বলা হয়ে থাকে। নিষিদ্ধ ডিম্বাণু যারা দেওয়ালের আজ তরে আটকে যাওয়ার কারণে এই সময় রক্ত প্রবাহ ঘটায় এরকম ধারণা থেকেই নামকরণ করা হয়ে থাকে।

এছাড়াও অনেক ক্ষেত্রেই একজন গর্ভবতী মায়ের রক্তপাত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। যেমন গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে যেহেতু সহবাস করা নিষেধ রয়েছে অনেক মায়েদের ক্ষেত্রে একেবারেই এটি করা ঠিক নয় এরপরেও যদি তারা এ সময়ে সহবাস করে থাকে তাহলেও রক্তপাত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।

ডাক্তার কর্তৃক প্রত্যক্ষ পরীক্ষার সময় জনি থেকে রক্তপাত হতে পারে।

এছাড়াও কোন পরীক্ষার উদ্দেশ্যে সার্ভিস বা জরায়ুর মুখ থেকে নমুনা সংগ্রহের সময় যেহেতু গর্ভাবস্থায় সার্ভিসের রক্ত প্রবাহ বেশি থাকে তাই এর জন্য রক্তপাত হতে পারে। এছাড়াও মিসকারেজ ,একটা পিক প্রেগনেন্সি ,গর্ভফুল বা প্লেস সেন্টার কোন সমস্যা এবং সংক্রমণ থেকেও রক্তপাত হতে পারে। তবে এরকম কিছু হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়া উচিত।