কিডনি রোগীর খাবার

আপনারা যারা বহুদিন থেকে কিডনি রোগে ভুগছেন এবং যারা সদ্য বুঝতে পেরেছেন যে আপনার কিডনি রোগ হয়েছে তাদের জন্যই মূলত আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে। আমাদের আর্টিকেলে আমরা বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নের উত্তর গুলো দিয়ে থাকি। আপনারা অনেকেই রয়েছেন যারা আমাদের আর্টিকেলগুলো নিয়মিত পড়েন তারা অবশ্যই জানেন যে আমাদের আর্টিকেলগুলো আপনাদের কতটা প্রয়োজনে আসে।

যাইহোক আমরা আজকে আলোচনা করতে এসেছি কিডনি রোগের খাবার সম্পর্কে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো নিয়ে। দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগের চিকিৎসায় একমাত্র উপায় হল সঠিক তথ্য অর্থাৎ সঠিক খাবার খাওয়া। রক্তে ইলেকট্রোলাইট সেট পরিমাণ হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ইউরিয়া ও ইউরিক এসিডের পরিমাণ রক্ত ও ইউরিনে এলবুমিনের পরিমাণ এবং ক্রিয়েটিন এর মাত্রা ভেদে পদক্ষে সাজাতে হয়। ঠিক সেই জন্য একজন কিডনি রোগে কোন খাবার এবং কি পরিমানে খাবেন এ বিষয়ে জেনে রাখা অবশ্যই প্রয়োজন।

অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে একজন কিডনি রোগী সঠিকভাবে খাবার দাবার না খাওয়ার জন্য আরও অসুস্থতায় ভোগেন এবং মৃত্যুর দিকে ঢেলে যান। ঠিক সেই জন্য আমরা যদি কিডনি রোগের সঠিক খাবার দাবার গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে রাখতে পারি তাহলে অবশ্যই অনেক উপকারে আসতে পারে।

কিডনি রোগীর খাবার

একজন কিডনি রোগের মোট ক্যালরি চাহিদার বেশিরভাগই কার্বোহাইড্রেট এর মাধ্যমে পূরণ করা হয়ে থাকে। তাই খাবারে অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ করতে হয় বলে কার্বোহাইড্রেটকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়ে থাকে একজন কিডনি রোগীর জন্য। এছাড়াও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে শর্করার মাত্রা বিবেচনা করে কার্বোহাইড্রেট হিসাব করা হয়ে থাকে। তাই এসব রোগীর ক্ষেত্রে ভাত ময়দা, রুটি চিড়া সুজি চালের গুড়া সেমাই ইত্যাদি খাওয়া উত্তম।

কিডনি রোগীর জন্য ক্যালরি

একজন কিডনি রোগের জন্য সাধারণত ক্যালরি চাহিদা অন্যান্য রোগীদের তুলনায় বিশেষ ক্ষেত্রে বাড়ানো হয়ে থাকে। অর্থাৎ কিডনি রোগীদের জন্য ক্যালোরির সংখ্যা বেশি হওয়া প্রয়োজন। তাই সাধারণত প্রতি কেজি ওজনের জন্য রোগী ভেবে ৩০ থেকে ৩৫ কিলো ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন। অবশ্যই খাবার খাওয়ার মাধ্যমে এসব মাথায় রাখতে হবে যে যে খাবারগুলো খাচ্ছি সেগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালরি রয়েছে কিনা।

প্রোটিন জাতীয় খাবার কিডনি রোগীর জন্য

একজন কিডনি রোগীর জন্য প্রোটিন নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরী। দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগীদের জন্য প্রতি কেজি ওজনের মধ্যে পয়েন্ট পাঁচ থেকে পয়েন্ট আট গ্রাম প্রোটিন বরাদ্দ করা হয়ে থাকে। এ প্রোটিনগুলো সাধারণত ডাল বাদাম কাঁঠালের বিচি সিমের বিচি ইত্যাদি তে বেশি পাওয়া যায় তাই এইসব খাবারগুলো একজন কিডনি রোগীকে অবশ্যই বর্জন করতে হবে।

তাই একজন কিডনি রোগীকে প্রতিদিনে দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা ডিমের সাদা অংশ মাছ মুরগির মাংস ও দুধ বা দই ইত্যাদি থেকে হিসাব করে বেছে নিতে হবে এবং নিয়মিত খেতে হবে।

কিডনি রোগীর জন্য সবজি

কিডনি রোগীর যেসব সবজি খাওয়া প্রয়োজন সেগুলো সম্পর্কে আমরা এখন আলোচনা করব। একজন কিডনি রোগীর রক্তে পটাশিয়াম ইউরিক এসিডের মাত্রা ফসফরাস ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে সবজি হিসাব করা হয়ে থাকে। তাই অতিরিক্ত পিউরিন ও পটাশিয়াম সমৃদ্ধ শাকসবজি পিসি ও গাঢ় লাল রঙের শাকসবজি অবশ্যই একজন কিডনি রোগীর জন্য এড়িয়ে যেতে হবে। কিডনি রোগীদের জন্য চাল কুমড়া চিচিঙ্গা ইত্যাদি পানীয় সবজি খুবই উপকারী তাই একজন কিডনি রোগীর এসব কাঁচা সবজিগুলো খাওয়া খুবই প্রয়োজন। এছাড়াও কাঁচা সবজির সালাদ সবজির স্যুপ ইত্যাদি কিডনি রোগীদের এড়িয়ে চলতে হয় এগুলো একজন কিডনি রোগীর জন্য অনেকাংশেই ক্ষতিকারক।

এছাড়াও কিডনি রোগীদের জন্য ফল খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্ক সহকারে খেতে হবে। কিছু কিছু ফল রয়েছে যেগুলো কিডনি রোগীদের জন্য খাওয়া একেবারে উচিত নয়। তবে আপেল পাকা পেঁপে পেয়ারা ইত্যাদি এই ফলগুলো কিডনি রোগীদের জন্য বেশ উপকারী ফল।

আশা করি আমাদের আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনারা জেনে নিতে পেরেছেন কিডনি রোগীর খাবার সম্পর্কে সকল তথ্যগুলো।