আমাদের দেহের রক্ত কোষের লৌহ সমৃদ্ধ এক ধরনের প্রোটিনের নামই হল হিমোগ্লোবিন। মানব শরীরে রক্তের পরিমাণ ঠিক কতটুকু রয়েছে এবং শরীরের রক্তস্বল্পতা দেখা দিচ্ছে কিনা এটি দেখার জন্য হিমোগ্লোবিনের মাত্রা পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। তবে গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিনের মাত্রা দশ বা তার উপরে থাকা বিশেষভাবে একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরে প্রয়োজন। গর্ভবতী মায়েদের তার গর্ভাবস্থার সময় সব দিকে সঠিকভাবে খেয়াল রাখা দরকার। একজন গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিনের খাবার ঘুম গোসল এক কথায় সবকিছুই নিয়ম মেনে চলা দরকার। অবশ্যই মনে রাখতে হবে একজন সুস্থ স্বাভাবিক সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য গর্ভবতী মাকে তার গর্ভাবস্থার সময় সকল নিয়ম কানুন গুলো ভালোভাবে মেনে চলা অত্যন্ত প্রয়োজন।
আমাদের মধ্যে অনেক গর্ভবতী মায়েরায় রয়েছেন যারা গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত থাকা দরকার এটি সম্পর্কে সঠিকভাবে কোন ধারণা জানা নেই। ঠিক তাদের জন্যই আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি তৈরি করা হয়েছে। আজকের আর্টিকেল থেকে গর্ভবতী মায়েরা অনেক কিছুই জানতে পারবেন তার গর্ভাবস্থার সময়ে সঠিক কিছু নিয়মকানুন সম্পর্কে। গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত থাকা দরকার এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন যে গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের ১০ এর বেশি হিমোগ্লোবিন থাকলে কোন ভয় থাকে না। তো চলুন আমরা আমাদের আর্টিকেলের মাধ্যমে এই বিষয়টি নিয়ে সঠিকভাবে কিছু তথ্য জেনে আসি।
গর্ভাবস্থায় সঠিক পরিমাণে হিমোগ্লোবিন থাকা প্রয়োজন কেন
একজন গর্ভবতী মায়ের তার গর্ভাবস্থা কালীন সময়ে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা একটি অতি জরুরী পূর্ণ ক্ষেত্র। কারণ এই মাত্রার উপরেই গর্ভবতী মা এবং গর্ভস্থ সন্তানের স্বাস্থ্য নির্ভর করে থাকে তাই স্বাভাবিকভাবেই হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম থাকলে গর্ভপাত সহ নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে একজন গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রে। বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন একজন গর্ভবতী মায়ের ১০ এর বেশি হিমোগ্লোবিন থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন। তাহলে তার গর্ভের সন্তানের এবং সেই গর্ভবতী মায়ের তার গর্ভাবস্থার সময় কোন রকমের জটিলতা দেখা দেয় না। তবে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় কিছু কিছু মায়ের ১০ এর কম অর্থাৎ ৮ হিমোগ্লোবিন থাকে। এক্ষেত্রেও সে গর্ভবতী মায়ের অল্প কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তবে কিছু কিছু মায়ের ক্ষেত্রে দেখা যায় হিমোগ্লোবিন ৮ এর চেয়েও কম থাকে সেই মায়েদের বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন যে তারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছে। আর একজন গর্ভবতী মায়ের যদি ৮ এর নিচে হিমোগ্লোবিন থাকে তাহলে সে মাকে অবশ্যই হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য নিয়মিতভাবে পুষ্টিকর খাবার এবং তার সাথে কিছু ওষুধ খেতে হবে যাতে করে খুব তাড়াতাড়ি ওই সময়টাতে হিমোগ্লোবিন বেড়ে যায়। কারণ গর্ভাবস্থার সময় সঠিক পরিমাণে হিমোগ্লোবিন না থাকার কারণে একজন গর্ভবতী মায়ের এবং গর্ভের সন্তানের অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে এছাড়াও বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন হিমোগ্লোবিন পরিমাণের চাইতে বেশি কম থাকলে সে গর্ভবতী মা এবং শিশুর মৃত্যু হতে পারে। তাই অবশ্যই গর্ভবতী মায়েদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে যে তার গর্ভাবস্থার সময় হিমোগ্লোবিন সঠিক মাত্রায় আছে কিনা সে সম্পর্কে।
গর্ভাবস্থায় মায়েদের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ
আমাদের দেহের কোষগুলোকে সক্রিয় ও কর্ম ক্ষত রাখার জন্য রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ স্বাভাবিক থাকাটা অত্যন্ত জরুরি। তবে অনেক বিশেষজ্ঞ রায় বলে থাকেন যে সাধারণত নারীদের রক্তে হিমোগ্লোবিন একটু কম থাকে। আর গর্ভবতী অবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের এটি প্রকট হয়ে যায়। ঠিক সেই জন্য একজন গর্ভবতী মায়ের এক দুই মাস পর পরেই তার হিমোগ্লোবিন কত রয়েছে সেটি চেক করা বিশেষভাবে প্রয়োজন। আমাদের দেশের বেশিরভাগ নারীদের শিশু বয়স থেকেই হিমোগ্লোবিন কম থাকে। হিমোগ্লোবিন কম থাকলে একজন গর্ভবতী মা বিশেষ কিছু লক্ষণ দেখে খুব সহজে বুঝতে পারবে সেই লক্ষণগুলো হলো। হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার কারণে চেহারা ফ্যাকাসে দেখাবে এছাড়াও ক্লান্তি অনুভূত হবে। সামান্য পরিশ্রমে বেশি কষ্ট হবে খাবারে অরুচি হবে এবং মনোযোগের অভাব দেখা দিবে। এ লক্ষণ গুলো দেখা দিলে বোঝা যাবে সে মায়ের হিমোগ্লোবিন কম রয়েছে আর তখন হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য পুষ্টিকর খাবার বেশি বেশি খেতে হবে।