একজন মা যখন গর্ভবতী হন তখন তার শরীরে আয়রনের পরিমাণ আগের তুলনায় বেশি প্রয়োজন হয়। একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য রক্তের পরিমাণটি আগের তুলনায় বেশি থাকাটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। গর্ভবতী মায়ের যদি রক্তের পরিমাণ কম থাকে তাহলে সেই গর্ভবতী মা এবং গর্ভের শিশু দুজনেরই ক্ষতির সম্ভাবনা থেকে যায়। এমনকি বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন যে একজন গর্ভবতী মায়ের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা যদি ১০ এর নিচে থাকে তাহলে সে গর্ভবতী মাকে রক্তশূন্যতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।
আর গর্ভবতী মায়ের তার গর্ভাবস্থার সময় যদি রক্তশূন্যতায় ভুগে থাকেন তাহলে তার গর্ভের সন্তানের মৃত্যু ঝুঁকেও থেকে যায়। তাই অবশ্যই আমাদের জেনে রাখা প্রয়োজন আমরা যারা গর্ভবতী মায়েরা রয়েছি তাদের গর্ভবতী হওয়ার পর হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক কতটা থাকা প্রয়োজন এবং কম থাকলে কি কি করতে হবে সেগুলো সম্পর্কে। আজকে আমরা আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিয়ে এসেছি নতুন একটি আর্টিকেল যার মাধ্যমে গর্ভবতী মায়েদের জন্য রয়েছে গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় সে সম্পর্কে যাবতীয় সকল তথ্য।
গর্ভাবস্থায় বেশিরভাগ মায়েদের এই রক্তশূন্যতায় ভুগতে হয়। আর এই রক্তশূন্যতা শরীরে দেখা দেয় আয়রনের ঘাটতির কারণে। গর্ভাবস্থায় রক্তশূন্যতা গর্ভকালীন জটিলতার অন্যতম একটি কারণ। এছাড়াও এই সমস্যাটি প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ গর্ভবতী নারীর হয়ে থাকে। তাই এটি সম্পর্কে আমাদের অনেক কিছু জানতে হবে। একজন গর্ভবতী নারীর রক্তে যদি হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ১০ এর কম থাকে সেক্ষেত্রে এই অবস্থা কে গর্ভকালীন রক্তশূন্যতা বলা হয়ে থাকে।
কেন গর্ভাবস্থায় রক্তশূন্যতা দেখা দেয়
সাধারণত গর্ভ অবস্থায় রক্তশূন্যতার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। এর মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য কারণ হলো আমরা এখন আপনাদের সাথে আলোচনা করব। গর্ভধারণের কারণে রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে কারণ এ সময় শরীরের জলীয় উপাদান অনেকাংশে আগের তুলনায় বেড়ে যায় তখন রক্তের লোহিত কণিকাগুলো কমে আসে তাই এ কারণেও গর্ভাবস্থায় রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে। গর্ভকালীন অবস্থায় আইরনযুক্ত খাবার যদি গর্ভবতী বা কম খায় তাহলেও রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে এছাড়াও গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত বমি হওয়ার কারণেও রক্তশূন্যতা হয়ে থাকে অনেক মায়েদের। তাই গর্ভাবস্থার আগে থেকেই রক্তস্বল্পতা থেকে প্রত্যেকটি মায়েদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। এছাড়া রক্তস্বল্পতা হওয়ার আরো একটি বড় কারণ হলো খাদ্যাভ্যাস।
অর্থাৎ সুষম এবং সঠিক খাবার না খেলে একজন গর্ভবতী মায়ের ঠিক ওই সময়ে রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে। আমরা লক্ষ্য করলেই দেখতে পাই যে এখনকার মায়েরা জ্যাঙ্ক ফুডের দিকে বেশি আগ্রহী হয়ে থাকেন আমরা স্বাভাবিকভাবেই জানি লাল শাক কচু শাক, ছোট মাছ ডিম শিং মাছ কাঁচকলা আনার এসবের মধ্যে আয়রন রয়েছে। তাই গর্ভবতী মায়েদের জাতের রক্তস্বল্পতা না দেখা দেয় এই জন্য গর্ব অবস্থায় মায়েদের এসব খাবারগুলো বেশি বেশি খেতে হবে। খাবার খাওয়ার পাশাপাশি অবশ্যই একজন গর্ভবতী মাকে খেয়াল রাখতে হবে তার হিমোগ্লোবিন ঠিক রয়েছে কিনা সেটি পরীক্ষা করতে।
হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার লক্ষণ সমূহ
একজন গর্ভবতী মায়ের যখন হিমোগ্লোবিন কমে যায় ঠিক তখন কিছু লক্ষণ রয়েছে যে লক্ষণ গুলো লক্ষ্য করলে ই বুঝতে পারবে যে তার হিমোগ্লোবিন কমে গেছে। গর্ভাবস্থায় রক্তশূন্যতার সাধারণত কিছু লক্ষণ হলো ক্লান্তি অনুভব ও দুর্বলতা মাথা ঘোরা, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হওয়া ,দ্রুত বা অনিয়মিত হৃদয় স্পন্দন ,বুক ব্যথা, হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া এবং ঠোঁটের কোণে ক্ষত হওয়া। স্বাভাবিকভাবে আমরা যদি এই লক্ষণগুলো নিজের শরীরের মধ্যে দেখে থাকি তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয়
অতিরিক্ত রক্তস্বল্পতা অর্থাৎ রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ যদি ৭ এর কম হয় তাহলে মা এবং গর্ভের শিশুর বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই আমাদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে গর্ভাবস্থায় যদি হিমোগ্লেনের মাত্রা সাত আসে তাহলে তৎক্ষণাৎ ভাবে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সে গর্ভবতী মাকে আয়রন জাতীয় খাবারের পাশাপাশি রক্ত দিতে হবে।