একজন নারী নির্দিষ্ট বয়সে মাসিক শুরু হয়ে যাবার পর থেকে প্রতিমাসে একটি করে ডিম্বাণু পরিপক্ক হয়ে থাকে। এটি প্রতিটি নারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এই ডিম্বানু সাধারণত দুই মাসিকের মাঝামাঝি সময়ে ডিমের থলি থেকে ডিম্ব বা হিনালিতে চলে আসে। এই সময়ে যদি একজন বিবাহিত নারীর যৌন মিলন হয়ে থাকে তাহলে পুরুষের শুক্রাণু জনি পথ দিয়ে ডিম্বাবাহী নালীতে গিয়ে পৌঁছায়। সেখানে ডিম্বানুর সাথে মিলিত হবার ফলে ভ্রুন ও তৈরি হয় একেই সাধারণভাবে গর্ভধারণ বলা হয়।
আজকের আর্টিকেলে আমাদের আলোচ্য বিষয় হলো দুই মাসের গর্ভবতী সম্পর্কে বিশেষ আলোচনা। দুই মাসের গর্ভবতী মায়েদের যেসব তথ্যগুলো রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে আমরা আজকে আমাদের আর্টিকেলে আলোচনা করতে আসছি আপনারা যারা এ বিষয়ে জানতে চান তারা অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
মায়ের দেহ থেকে পুষ্টি গ্রহণ করে ব্রণ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি লাভ করতে শুরু করে এবং মানব শিশুতে পরিণত হয়। মাতৃ গর্ভে ভ্রূণের বৃদ্ধিতে মায়ের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই সব অবস্থাতেই কমবেশি ঝুঁকিপূর্ণ রয়ে যায়। ঠিক সেই জন্যই গর্ভধারণের পর থেকে গর্ভবতী মায়ের শারীরিক ও মানসিক বিশেষ যত্নের প্রয়োজন পড়ে।
গর্ভবতী মায়ের পুষ্টি ও খাদ্য তালিকা
গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের পুষ্টি ও খাদ্য তালিকার দিকে বিশেষভাবে নজর রাখা প্রয়োজন। এটি শুধু মানা তার পরিবারের সকলেরই দায়িত্ব ও কর্তব্য এ সময় একজন গর্ভবতী মায়ের পুষ্টি ও খাদ্য তালিকা সম্পর্কে সতর্ক থাকা। গর্ভবতী মায়ের খাদ্য সুষম হতে হবে। অর্থাৎ সবকটি খাদ্য উপাদান সঠিক অনুপাতে পরিবেশন করতে হবে। গর্ভকালীন প্রথম তিন মাসের পর থেকে মাকে অতিরিক্ত 300 ক্যালোরির খাদ্য গ্রহণ করতে হবে তার গর্ভের সন্তানের বৃদ্ধির জন্য।
গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় মাসে গর্ভের বাচ্চার নিউরাল টিউব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য ফলিক অ্যাসিড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই গর্ভকালীন এর শুরুতে একজন চিকিৎসকের পরামর্শে এ ধরনের মাইক্রো নিউট্রিয়েন্সের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করার জন্য নির্দেশিত ওষুধ খেতে হবে। এছাড়াও পরবর্তী ছয় মাস আয়রন ক্যালসিয়াম ভিটামিন বি কমপ্লেক্স নিয়মিত ভাবে একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য প্রযোজ্য।
গর্ভবতী মায়ের যে সব বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে
একজন গর্ভবতী মায়ের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত তাকে কিছু বিষয়ের উপর সচেতন থাকতে হবে যাতে করে তার গর্ভের সন্তান এবং মা দুজনারি কোন ঝুঁকি না আসে। এর মধ্যে কিছু সচেতনতা আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করব।
পোশাক
একজন গর্ভবতী মায়ের সুতীর ঢিলেঢালা পোশাক পড়া উচিত। এ সময় একজন মায়ের শারীরিক পরিবর্তন সহ শরীরের অনেক কিছু পরিবর্তন হয় যার জন্য মায়ের সতি ঢিলেঢালা পোশাক পরলে অনেকটা স্বস্তি অনুভব করে। এছাড়াও এ সময়ে হিল জুতা পরিহার করতে হবে। আর এই সময়ে পেটিকোট টাইট করে না পড়ায় একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য ভালো।
ভ্রমণ
গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস এবং শেষের তিন মাসে ভ্রমণ নিয়ে অবশ্যই গর্ভবতী মাকে সচেতন হতে হবে। প্রথম তিন মাস এবং শেষ তিন মাস ভ্রমণ থেকে একজন মাকে বিরত থাকতে হবে কারণ এ সময়ে ভ্রমণ করলে সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা বেড়ে যায়। এমনকি এ সময়ে ভ্রমণ করলে সন্তান হয়ে যেতে পারে।
গোসল
একজন গর্ভবতী মাকে প্রতিদিন গোসল করা তার স্বাস্থ্যের এবং সন্তানের জন্য ভালো। তবে এ সময় লক্ষ্য রাখতে হবে গর্ভবতী মা যেন প্রতিদিন একই সময়ে গোসল করে তাহলে তার এবং তার সন্তানের ঠান্ডা লাগা থেকে মুক্তি পাবে।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা
একজন গর্ভবতী মাকে প্রথম থেকে শুরু করেই এ সময় একটু বেশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন তা থাকতে হবে। যেমন দাঁত ব্রাশ করা, চুল ,নখ, পোশাক পরিস্কার রাখা ভালো।
ব্যায়াম ও বিশ্রাম
প্রতিদিনের স্বাভাবিক কার্যক্রম ও সকাল সন্ধ্যা 30 মিনিট হাঁটতে হবে একজন গর্ভবতী মাকে সেটা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত। দিনে দুই ঘন্টা বিশ্রাম এবং রাতে আট ঘন্টা ঘুম গর্ভবতী মায়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।