তিন মাসের গর্ভবতী

প্রত্যেকটা মেয়েদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় হল তার গর্ভাবস্থা। এ সময়ে যেমন একটি মায়ের আনন্দ থাকে ঠিক তেমনি উদ্বেগ অথবা ভয়েরও কিছু কারণ থাকে সবমিলিয়ে অনুভূতির মিশেলে আচ্ছন্ন থাকে গর্ভবতী মায়ের মন। গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে বেশিরভাগই অনুভূতিগুলো বুঝতে দেরি হলেও গর্ভাবস্থার মাঝে এবং শেষের দিকের অনুভূতিগুলো একজন মায়ের মাঝে যেন ফুটে ওঠে। নতুন প্রাণের আগমনের খবর যেন মায়ের জীবনকে নতুন জীবন হিসেবে গড়ে তোলে।

এই খুশির খবর শুধু মা না, পরিবারের সকলের কাছেই যেন আনন্দের মুহূর্ত। সন্তানের জন্যও এই সময়টি বিশেষভাবেই গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রথম থেকে একজন গর্ভবতী মায়ের বেশ সচেতনতার সাথে সতর্ক থাকা অত্যন্ত বেশি জরুরী। আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন তিন মাসের গর্ভবতী সম্পর্কে। গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস যেহেতু সন্তানের একদম প্রথম দিকের একটি সময় তাই এ সময়ে মাকে হতে হবে একটু বেশি সতর্ক।

তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনেক মায়েরা এ সময়টিতে বুঝে উঠতে পারেন না যে সে গর্ভবতী। অনেক মায়ের ক্ষেত্রে তার গর্ভাবস্থার লক্ষণগুলো প্রথম থেকেই ফুটে ওঠে এবং মা সেগুলো উপলব্ধি করতে পারেন তবে কিছু কিছু মায়েদের ক্ষেত্রে আবার গর্ভাবস্থার প্রথমদিকে মা কিছুই উপলব্ধি করতে পারে না। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে গর্ভাবস্থ ার তৃতীয় মাস সম্পর্কে জেনে আসি।

তিন মাসে গর্ভবতী মায়ের যত্ন

প্রথমে একজন মাকে নিশ্চিত হতে হবে যে সে অন্তঃসত্ত্বা কিনা। এখন প্রেগনেন্সি কেক দিয়ে ঘরে বসে যে পরীক্ষা করা হয় তার মধ্যে প্রায় ৯৫% পরীক্ষায় সঠিক হয় তাই নিশ্চিন্ত হওয়া এখন অনেক সহজ একজন মা ঘরে বসে প্রেগনেন্সি কিটের মাধ্যমে নিশ্চিত হতে পারেন তার গর্ভাবস্থায় শুরু হয়েছে কিনা সে সম্পর্কে।

নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে একজন মায়ের সাবধানে চলাফেরা করা উচিত। এছাড়াও প্রথম তিন মাসে অ্যালকোহল ক্যাফে ইন ধূমপান থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ এই সময় এসব জিনিস অন্য যে কোন কিছুর চেয়ে বেশি ক্ষতি করতে পারে গর্ভের সন্তানের।

প্রথম তিন মাসের দিকে যেহেতু একজন মা বুঝতে পারেন যে সে অন্তঃসত্তা তাই তখন থেকেই তাকে সব সময় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে যাতে করে পুরা গর্ভাবস্থার সময়টি সে নিরাপদে এবং সুস্থ থাকতে পারে।

গর্ভাবস্থার তৃতীয় মাসে কিছু লক্ষণ

একজন মা যখন গর্ভাবস্থার তৃতীয় মাসে পা রাখেন তখন সে মায়ের বেশ কিছু লক্ষণ লক্ষ্য করা যায়। অন্তঃসত্ত্ব হবার কারণে শরীরে বেশ কিছু হরমোনের পরিবর্তন ঘটে থাকে একজন গর্ভবতী মায়ের। যার কারনে বমি বমি ভাব মাথা ঘোরা খেতে না পারা শারীরিক দুর্বলতা ইত্যাদি এই লক্ষণগুলো একজন মায়ের শরীরে ঘটবে।

তবে সবার ক্ষেত্রে যে এই একই লক্ষণগুলো হয় তা কিন্তু নয় অনেক মায়ের মধ্যে এসবের কোনটি হয় বা কখনো কখনো একটিও উপসর্গ দেখা যায় না। তবে এমন কিছু হলে ভয় পাবার কিছু নাই। যেসব মায়েদের ক্ষেত্রে বেশি বমি হয় সকালের দিকে সেসব মায়েদের লেবু পানি খেতে হবে আর মাথা বেশি ঘুরালে শুয়ে বিশ্রাম নিতে হবে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলে এই সমস্যাগুলো ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে আসে।

এছাড়াও হরমোন জনিত পরিবর্তনের কারণে এ সময় ধীরে ধীরে স্তনের আকার পরিবর্তন হওয়া শুরু হয়ে থাকে যার ফলে স্থানে হালকা বা তীব্র ব্যথা হতে পারে। এটিও গর্ভবতী মায়েদের একটি সাধারণ লক্ষণ এতে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। প্রত্যেকটি গর্ভবতী মায়ের মনে রাখতে হবে যে এই পরিবর্তনগুলো তার সন্তানের জন্য বিশেষভাবে জরুরী।

যখন একজন মা এই পরিবর্তনগুলো লক্ষ্য করেন তখন সে নিশ্চিত হতে পারবেন যে তার গর্ভের সন্তান সুস্থ এবং ভালো রয়েছে। তাই গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস থেকেই যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে সন্তান এবং মাকে সুস্থ রাখার জন্য।