চন্দ্রগ্রহণের সময় গর্ভবতী মহিলার করণীয় ইসলাম কি বলে

আমাদের সমাজে একটি কুসংস্কার রয়েছে সেটি হল চন্দ্রগ্রহণের সময় গর্ভবতী মহিলার বিশেষ কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হয়। তবে ইসলাম এ বিষয়ে বলে যেসব নিয়ম কানুন গুলো গর্ভবতী মায়েরা মেনে চলে আমাদের সমাজের মানুষের কথা মত সেগুলো সম্পূর্ণই মিথ্যা এবং কুসংস্কার। চাঁদ যখন পড়ি ভ্রমরত অবস্থায় কিছু সময়ের জন্য পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ে তখন পৃথিবীর কোন দর্শকের কাছে সূর্য আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হয়ে যায় এটি সাধারণত কিছু সময়ের জন্য হয়ে থাকে। এই ঘটটাকে আমরা সূর্যগ্রহণ বলে থাকি।

এছাড়াও আমাবশ্যার পরে নতুন চাঁদ ওঠার সময় এই ঘটনা বেশি ঘটে থাকে পৃথিবীতে প্রতি বছর অন্তত দুই থেকে পাঁচটি সূর্যগ্রহণ পরিলক্ষিত হয়ে থাকে এর মধ্যে শূন্য থেকে দুইটি সূর্যগ্রহণ পূর্ণ সূর্যগ্রহণ হয়। আরবিতে এর নাম কুসুফ।

আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলের মাধ্যমে আলোচনা করতে এসেছি চন্দ্রগ্রহণের সময় গর্ভবতী মহিলার করণীয় সম্পর্কে ইসলাম কি বলে সে সম্পর্কে বিশেষভাবে গর্ভবতী মায়েদের জন্য কিছু আলোচনা। আপনারা যারা এ বিষয়ে জানতে চান তারা আমাদের দেওয়া আর্টিকেলটি পড়ে নিন।

চন্দ্রগ্রহণ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে

ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গিতে সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণকে একটি ক্রান্তিকাল হিসেবে গণ্য করা হয়। গ্রহণ সূর্য ও চন্দ্রের উপর প্রযোজ্য আল্লাহ তায়ালার কুদরতের নিদর্শন  মাত্র এ ছাড়া আর কিছুই নয়। জাহিলি যুগের মানুষেরা ধারণা করতেন যে বিশ্বের কোন মহাপুরুষের জন্ম মৃত্যু অথবা দুর্যোগ দুর্ভিক্ষ প্রভৃতির মাত্রা দিতে এই গ্রহণ হয়ে থাকে।

তবে ইসলাম এ বিশ্বাসকে ভ্রান্ত ধারণা বলে আখ্যায়িত করেছে এবং গ্রহণকে সূর্য ও চন্দ্রের উপর একটি বিশেষ ক্রান্তিকাল বা বিপদের সময় বলে গণ্য করেছে। এজন্যই গ্রহনের সময় মুমিনদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে তারা যেন এ সময়ে অন্যান্য কাজকর্ম বন্ধ রেখে আল্লাহ তায়ালার তাজবি পাঠ করে দোয়া দরুদ বেশি বেশি পাঠ করে এবং নামাজ আদায়ের সহ প্রভৃতি আমলে মশগুল থাকে।

চন্দ্রগ্রহণ নিয়ে আমাদের সমাজের কিছু ধারনা

চন্দ্র এবং সূর্য গ্রহণ নিয়ে আমাদের সমাজে কিছু কুসংস্কার রয়েছে এবং কিছু ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যেগুলো ইসলাম একেবারেই সমর্থন করে না। আমাদের সমাজে এ কথা চালু আছে যে চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণ এর সময় গর্ভবতী নারী কোন কিছু কাটলে ফিরলে বাচ্চা ঠোঁট কাটা জন্মায় কোন কিছু ভাঙলে অথবা বাঁকা করলে সন্তান বিকলাঙ্গ হয়।

এছাড়াও আরো বলা হয়েছে যে আকাশের দিকে তাকালে চোখের আলো কমে যায় গ্রহণের সময় কিছু খেতেও হয় না। আসলে এগুলো সবই কুসংস্কার মাত্র। এগুলো মেনে চলা একেবারেই উচিত নয় গর্ভবতী মায়েদের। গ্রহণের সময় এসব কিছু করাতে কোরআন হাদিসের কোন সম্পর্ক নেই।

সূর্যগ্রহণ কালে গর্ভবতী মায়েদের করণীয়

চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণ এর সময় গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে কিছু করণীয় রয়েছে যা ইসলাম আমাদেরকে সমর্থন করে। চন্দ্রবাস সূর্য অন্য কোন সৃষ্ট বস্তু অদৃশ্য ভাবে কারোর উপর উপকার বা ক্ষতি করার ক্ষমতা রাখে এ ধরনের বিশ্বাস একেবারেই আমাদের রাখা যাবে না। এটা তাওহীদ পরিপন্থী বিশ্বাস। যে আল্লাহ তায়ালা ও শেষ দিবসে বিশ্বাস রাখে তার মনে রাখা উচিত আল্লাহ তাআলার অসংখ্য নিদর্শন এর মধ্যে চন্দ্র সূর্যের গ্রহণ এক একটি নিদর্শন।

তাই চন্দ্র বা সূর্যগ্রহণ নিয়ে যেসব কুসংস্কার গুলো আমাদের সমাজে বিরাজমান রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে একজন গর্ভবতী মায়ের এড়িয়ে চলায় উচিত। সূর্যগ্রহণের সময় গর্ভবতী নারী বা কারো জন্য জাগতিক কোন কাজ করা বা না করা নিয়ে কোন রকমের বিধি-নিষেধ একেবারে ইসলামের নেই। এ ব্যাপারে যা প্রচলিত রয়েছে তা কেবলই কুসংস্কার ও ভ্রান্ত বিশ্বাস এসব মানলে কিংবা বিশ্বাস করলে মারাত্মকভাবে গুনাহ হবে তাই অবশ্যই এগুলো সম্পর্কে আমাদেরকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়াও সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণের সময় একজন গর্ভবতী মাকে আল্লাহর বেশি বেশি ইবাদত জিকির এবং কোরআন তেলাওয়াত করতে হবে।