হরমোন আমাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। আমরা যারা হরমোনের সঠিক উপকারিতা সম্পর্কে অবগত নই তারা অবশ্যই আজকের এই আর্টিকেল থেকে হরমোনের সঠিক উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারব। আমরা এমন অনেক রোগী দেখেছি যাদের হরমোন জনিত সমস্যা আছে। এই সমস্যাগুলো দীর্ঘদিন ধরে সেই রোগীকে কষ্ট দেয় তবে যদি আমরা প্রথম থেকেই হরমোনের বিভিন্ন কার্যকারিতা এবং কোন হরমোন কিভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে অবগত হয় তাহলে সেটা আমাদের জন্যই ভালো হবে।
মানব শরীরে যে কয় ধরনের হরমোন পাওয়া যায় সেই হরমোন গুলোর কার্যকরতা সম্পর্কে আজকে আমরা জানার চেষ্টা করব আমাদের এই আর্টিকেল থেকে। মানব শরীরে বিভিন্ন ধরনের হরমোন রয়েছে সে হরমোন গুলো কিভাবে কাজ করে সেটা সংক্ষিপ্ত আলোচনা নিচে খুব সুন্দর ভাবে আমরা তুলে ধরলাম।
বিভিন্ন হরমোনের কাজ কি
থাইরয়েড হরমোন আমাদের কাছে অত্যন্ত পরিচিত একটি হরমোন। এটাকে সংক্ষেপে অনেকেও টিএসএইচ নামে চেনেন। সাধারণত আমাদের শরীরে যে থাইরয়েড গ্রন্থি রয়েছে সেই থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে এই হরমোন নিঃসৃত হয় এবং পুরো শরীরে এই হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে। তাই এর কাজ হচ্ছে এটা।মানব শরীরের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন হচ্ছে থাইরক্সিন থাইরয়েড গ্রন্থি বা বি এম আর নিয়ন্ত্রণ হরমোন। এটা মানব শরীরের বি এম আর নিয়ন্ত্রণ করতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে।
আমাদের শরীরে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন আছে যে হরমোনকে অ্যান্টিডাই ইউরেটিক হরমোন হিসেবে ডাকা হয়। এই হরমোনকে সংক্ষেপে বলা হয় এ ডি এইচ। এটি সাধারণত পিটুইটারি বৃক্ক ও মুত্র নিয়ন্ত্রণ করে।সোমাটো ট্রাফিক হরমোন সংক্ষেপে এসটিএইচ আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি হরমোন। এই হরমোনের যে প্রধান কাজ সেটা হচ্ছে পিটুইটারি বৃদ্ধির নিয়ন্ত্রক করা।এছাড়াও মানব শরীরে আরো যে হরমোন গুলো পাওয়া যায় তার মধ্যে রয়েছে ফলিক্যাল সিমুলাতিং হরমোন। সংক্ষেপে এফ এইচ এবং এটা পিটুইটারি ফলিকল নিয়ন্ত্রক করে।
এই হরমোন গুলো আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যদি এই হরমোন আমাদের শরীরে সঠিক পরিমাণে না থাকে তাহলে অবশ্যই বিভিন্ন লক্ষণের মাধ্যমে আমরা সেটা বুঝতে পারব। আর বুঝতে পারার সঙ্গে সঙ্গে বাড়িতে বসে না থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি তার কারণ হচ্ছে সঠিক সময় সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে হরমোনের সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়।
হরমোন বেড়ে গেলে কি হয়
স্বাভাবিকভাবে শরীরে কোন উপাদান যদি বৃদ্ধি পায় তাহলে তার খারাপ প্রভাব আমাদের শরীরে পড়ে। তবে সেই বৃদ্ধি পাওয়া উপাদান যদি হরমোন হয় তাহলে তো সেটা খুব ভালোভাবেই প্রভাব ফেলে আমাদের শরীরের উপর। হরমোন গুলোর কার্যকারিতা আমরা উপরে সুন্দরভাবে উল্লেখ করেছি সেই হরমোন গুলো যদি আমাদের শরীরে অতিরিক্ত মাথায় হয়ে যায় তাহলে সেটা অবশ্যই বিরুপ প্রভাব ফেলবে।একটি উদাহরণ দিতে চাই থাইরয়েড হরমোন যেটা থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে বের হয়ে আসে। এই হরমোন যদি আমাদের শরীরে বেশি হয়ে যায় তাহলে দেখা দেয় যে হরমোনের বৃদ্ধির কারণে গলগন্ড রোগ হয়। আবার এই হরমোন যদি কম হতে শুরু করে তাহলে মেয়েদের মাসিকের সমস্যা এবং গর্ভবতী হওয়ার সমস্যা দেখা দেয়।
হরমোন কম হলে কি হয়
হরমোন কম হলে যেমন সমস্যা হয় হরমোন বেশি হলেও সমস্যা হয়। স্বাভাবিকভাবেই যাদের হরমোনের সমস্যা আছে তাদের শরীরে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় যেমন অল্প বয়সেই উচ্চ রক্তচাপ। এছাড়াও কিছু কিছু রোগীর ক্ষেত্রে বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে অনিয়মিত মাসিক থেকে শুরু করে গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসার সমস্যাগুলো দেখা দেয়।
হঠাৎ করে মোটা হয়ে যাওয়া অনেকের ক্ষেত্রে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফুলে ওঠা থেকে শুরু করে আরো জটিল জটিল সমস্যা হতে পারে হরমোনের সমস্যার কারণে। অবাঞ্ছিত লোম বৃদ্ধি পাওয়া হরমোনের সমস্যার অন্যতম লক্ষণ তাই এই বিষয়গুলো নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।