আমাদের শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই সমান ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তবে এমন একটি অঙ্গ আছে যেটা বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এই অঙ্গের যদি কোন সমস্যা হয় তাহলে সেটা সবথেকে বড় সমস্যা বলে ধরা হয়ে থাকে। আর এটাকেই বলা হচ্ছে হার্ট আর হার্টের রোগ নির্ণয়ের জন্য সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতির নাম হচ্ছে ইকো কার্ডিওগ্রাম। সাধারণত ইকো কার্ডিওগ্রাম আল্ট্রাসনোগ্রাম এর মতো একটি পরীক্ষা যেখানে হৃদপিন্ডের ভাল্বের বিভিন্ন ধরনের রোগ নির্ণয়ের জন্য এটা ব্যবহার করা হয়।
শুধুমাত্র এই রোগ নয় এর পাশাপাশি জন্মগত হৃদপিন্ডের কোন সমস্যা আছে কিনা এবং হৃদপিন্ডের মাংসপেশীর কোন রোগ আছে কিনা সেটা নির্ণয়ের জন্য ইকো কার্ডিওগ্রাম করা হয়। মানব শরীরের হৃদপিন্ডের বাইরে যে পর্দা রয়েছে এবং পেড়িকার্ডিয়া গ্রামের যে রোগ রয়েছে সেই রোগ নির্ণয়ের জন্য ইকোকার্ডিওগ্রাম করা হয়। হৃদপিন্ডের বাইরে পানি ও ধমনীর রোগ নির্ণয়ের জন্য এই টেস্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং অত্যন্ত জনপ্রিয়। এক কথায় যদি বলি হার্টের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা নির্ণয়ের জন্য সবথেকে ভালো এবং সব থেকে নির্ভরযোগ্য প্রাথমিক পর্যায়ের টেস্ট হচ্ছে ইকো কার্ডিওগ্রাম। চলুন এই ইকো কার্ডিওগ্রাম টেস্ট সম্পর্কে আরো খুঁটিনাটি অনেক তথ্য জানার চেষ্টা করি আমাদের এই ছোট্ট আর্টিকেলের মাধ্যমে।
ইকো টেস্ট কিভাবে করে
ইকো টেস্ট কিভাবে করে এরকম প্রশ্ন অনেকের রয়েছে আজকে আমরা জানার চেষ্টা করব এই ইকো টেস্ট করার পদ্ধতি সম্পর্কে। সাধারণত উচ্চ কম্পাঙ্কের শব্দ তরঙ্গ বা আল্ট্রাসাউন্ডের প্রতিধ্বনি ব্যবহার করে ইকো কার্ডিও টেস্ট করা হয়। আপনারা আল্ট্রাসনোগ্রাফির কথা হয়তো আগে শুনেছেন এই আল্ট্রাসনোগ্রাফি করা হয়ে থাকে মানুষের পেটের বিভিন্ন স্থানে কিন্তু ইকো কার্ডিওগ্রাম থেকে এমন এক ধরনের আলট্রাসনোগ্রাফি যেটা হার্টের ওপর করা হয়। হার্ট এর ওপরে উচ্চ কম্পাঙ্কের শব্দ ও তরঙ্গ বাড়াটা সাউন্ড এর ব্যবহার করে প্রতিধ্বনি তৈরি করা হয় এবং সেই প্রতিধ্বনির সঠিক পরিমাপের উপর নির্ভর করে হৃদপিন্ডের বিভিন্ন ধরনের সঞ্চালন ও ভাল্ব এবং প্রকোষ্ঠের বর্তমান অবস্থা এবং তাদের কাজ কর্মের একটি ধারণা নেওয়া হয়।
হৃদপিন্ডের সংকোচন এবং সম্প্রসারণ এর মাধ্যমে রক্ত প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করা হয় এই পরীক্ষায় যাকে সাধারণত ইকো নামে ডাকা হয় এবং যার পুরো নাম হচ্ছে ইকোকার্ডিওগ্রাম। হৃদরোগের বর্তমান অবস্থা বোঝার জন্য মূলত এই ধরনের চিকিৎসা করা হয় এবং তার ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। যারা সাধারণত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন অথবা হৃদরোগ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাদের জন্য এই ইকো কার্ডিওগ্রাম পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইকো টেস্ট করার প্রস্তুতি
যেহেতু এটা অনেক বড় একটি টেস্ট সেহেতু অবশ্যই অনেকেই জানতে চান এই টেস্ট করা কোন প্রস্তুতির প্রয়োজন আছে কিনা। সাধারণত যদি হার্টের কোন সমস্যা দেখা দেয় তাহলে বেশিরভাগ রোগের ক্ষেত্রে সময় পাওয়া যায় এই টেস্ট করানোর জন্য কিন্তু যারা ইমারজেন্সি রোগী আছেন তাদের ক্ষেত্রে কোন ধরনের প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই তাদের জন্য সরাসরি ইকো কার্ডিওগ্রাম টেস্ট করানো যায়। স্বাভাবিক খাবার খেয়ে টেস্টের জন্য যেতে হবে এবং যদি রোগীর রোগের জন্য কোন নিয়মে ওষুধ খেয়ে থাকেন তাহলে সে ওষুধ খাওয়া যাবে। তবে ইকো টেস্ট করার আগে ইসিজি করিয়ে নেওয়া হয়।
যারা গুরুতর অসুস্থ রোগী এবং ইমারজেন্সি তাদের ক্ষেত্রে এই ইসিজি করার ও কোন প্রয়োজন পড়ে না। তাই সহজ ভাষায় বলতে গেলে এই টেস্ট করানোর জন্য পূর্বে থেকে খুব বেশি প্রস্তুতি আপনাকে গ্রহণ করতে হবে না স্বাভাবিক অবস্থাতেই আপনি এই টেস্ট করাতে পারেন তাই এখানে এ বিষয়ে কোনো দুশ্চিন্তা করার কোন প্রয়োজন নেই।
ইকো টেস্ট এর রিপোর্ট
ইকো টেস্টার রিপোর্ট সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান ইকো টেস্টের রিপোর্ট সঠিকভাবে পড়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে যথেষ্ট ভালোভাবে জ্ঞান রাখতে হবে ।তবে সাধারণ মানুষের পক্ষে এই রিপোর্ট পড়া সম্ভব নয় তাই একজন চিকিৎসকের হাতেই রিপোর্টের সকল দায়-দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া উচিত।