গর্ভবতী হওয়ার পর কি মাসিক হয়

আমরা আজকে নিয়ে এসেছি গর্ভবতী মায়েদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করতে। আজকের আর্টিকেলে আমরা বিশেষভাবে আলোচনা করব গর্ভবতী হওয়ার পর কি মাসিক হয় সে সম্পর্কে। আপনারা অনেকেই এটি সম্পর্কে আমাদের কমেন্ট করেছেন তাই আমরা আপনাদের কমেন্টের ভিত্তিতে আপনাদের প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আজকে হাজির হয়েছি।

একটি ঋতুচক্র বাদ যাওয়ার কারণে বেশিরভাগ মায়েরাই হয়তো সন্দেহ করে থাকতে পারেন যে আপনি গর্ভবতী। গর্ভাবস্থা এবং পিরিয়ডের জৈবিক বোঝাপড়াটা হলো এই যে আপনার এই দুটির মধ্যে একটি হবে এবং একই সাথে দুটি হবে না। কিন্তু এ ব্যাপারে একটি দুটো না রয়েছে সেটি হল অনেক ক্ষেত্রে অনেক মায়েদের দেখা যায় যে গর্ভবতী হওয়ার পরও প্রতিমাসে নিয়মিত ভাবে মাসিক হয়ে থাকে তবে সেটি আগের তুলনায় খুব কম পরিমাণে।

এটি সাধারণত ১০০ জনের মধ্যে দুই একজন মায়ের হতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পিরিয়ড মিস হওয়া মানেই মায়েরা মনে করেন যে সে গর্ভবতী। এটি বেশিরভাগ মায়েদের ক্ষেত্রে ঘটে থাকে। বেশিরভাগ মায়েদেরই গর্ভবতী হয়ে গেলে দীর্ঘ নয় মাস আর কোন পিরিয়ড হয় না। তো চলুন আমরা ভালোভাবে জেনে নিই গর্ভবতী হওয়ার পর কি মাসিক হয় সে সম্পর্কে সকল তথ্যগুলো।

গর্ভবতী অবস্থায় পিরিয়ড বা মাসিক

গর্ভবতী অবস্থায় পিরিয়ড বা মাসিকগুলি হয় এই প্রশ্নের সঠিক উত্তরটি হল, না। আপনি গর্ভবতী হলে তখন আপনার শরীরের পক্ষে স্বাভাবিক ঋতুস্রাব বা মাসিক চক্র শুরু করা সম্ভব নয়। আপনি যদি গর্ভবতী হন তবে এর অর্থ হল আপনার ডিম্বানুগুলি নিষিদ্ধ হয়ে গেছে এবং আপনার জরায়ুতে প্রস্তুত হয়েছে  একটি শিশুর জন্য। পিরিয়ড বা মাসিকগুলি কেবল তখনই হয়ে থাকে যখন আপনার ডিম্বাণুগুলি অনিশ্চিত্ত থাকে এবং একটি শিশুর জন্য আপনার জরায়ু টিকেও প্রস্তুত করার প্রয়োজন হয় না।

পিরিয়ড বা মাসিকের দেখা গর্ভাবস্থায় কেন হতে পারে না?

প্রত্যেকটি মেয়েদের প্রতি মাসে জরের মধ্যে তার টিস্যু বা কলা এবং রক্তের প্রবাহের মাধ্যমে অস্তরণটি পুরু হয়ে ওঠে ও বিকশিত হয়ে জড়ায়েতে ডিম্বানোর বাসা বাধার অপেক্ষা করে এবং তার মধ্য দিয়ে একটি শিশুর বিকাশ হতে থাকে। তবে যদি কোন নিষিদ্ধ ডিম্বানু জরায়ুতে না পৌঁছায় তবে টিস্যু এবং রক্তের এই আস্তরনটি স্থলই তো হয়ে প্রবাহিত হয়ে দেহ থেকে নিঃশ্রান্ত হয় আর সেই প্রক্রিয়াটি মাসিক বা ঋতু সাব হিসেবে পরিচিত।

একটি মেয়ের ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণুটি নির্গত হয়ে যাওয়ার পরে হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং সে ক্ষেত্রে আবার এটিরও ইঙ্গিত দেয় যে আজ ধরনটি স্থলিত হওয়ার সময় হয়ে গেছে। ঠিক তখনই কিন্তু যখন একটি নিষিক্ত ডিম্বানু নিজে থেকে জরের মধ্যে প্রতিস্থাপিত হয়ে থাকে তখন আপনার দেহের হরমোন গুলি ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে শুরু করে এবং ভ্রুনের সুরক্ষা এবং লালন পালনের জন্য জরায়ুর ভেতরের আস্তরণ টিকে অক্ষত রাখতে পারে যা জরায়ুকে প্রণোদিত করে তোলে।

আর সেক্ষেত্রে মোটামুটি প্রায় নয় মাসব্যাপী আপনার গর্ভাবস্থাটি পুরোপুরিভাবে সম্পূর্ণ হওয়ার পরে কেবল আজ ধরনটি স্থলতা হয়ে থাকে সুতরাং তাহলে আপনি গর্ভবতী হলে নিয়মিত ঋতুস্রাব পাওয়া কখনোই সম্ভব হয়ে উঠবে না।

গর্ভবতী অবস্থায় মাসিক হলে করণীয়

আমাদের মধ্যে অনেক ক্ষেত্রেই বিভিন্ন মায়েদের গর্ভবতী অবস্থায় মাসিক হয়ে থাকে। তবে এটি আগের তুলনায় অনেক কম রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে। এটিও একটি স্বাভাবিক উপসর্গ বলেই ধরা হয়। তবে গর্ভবতী অবস্থায় এরকম উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিতে হবে।

কারণ কিছু কিছু ক্ষেত্রে গর্ভবতী মায়েদের এভাবে অল্প অল্প রক্তক্ষরণ হওয়ার মাধ্যমে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং অনেক ক্ষেত্রে গর্ভবতী মায়েরা অসুস্থ হয়ে পড়ে এতে গর্ভের সন্তানের বিশেষভাবে বিভিন্ন রকমের ক্ষতি হতে পারে এমনকি গর্ভে সন্তান নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই গর্ভবতী অবস্থায় কম বা বেশি রক্ত ক্ষরণ দেখলে অবশ্যই আপনার বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করুন।