শিশুর জ্বর যদি হয় তাহলে কি করবেন এরকম চিন্তা ভাবনা সকল বাবা মায়ের মাথায় থাকে। সাধারণত হঠাৎ করেই শিশুর যদি গা গরম হয় তাহলে বাবা-মায়েরা দুশ্চিন্তায় পড়ে যায় এবং ভাবলে থাকে এই অবস্থাতে কি করা উচিত। আপনাদের এই অবস্থাতে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে তার কারণ হচ্ছে শিশুর জ্বর এসেছে কিনা সেটা সঠিকভাবে নির্ণয় করতে হবে। স্বাভাবিকভাবে যেকোনো সময় শিশুর মাথা গরম বা শরীর গরম থাকতে পারে কিন্তু তার মানে যে তার জ্বর এসেছে এটা ভুল ধারণা।
আপনাকে সবার আগে নির্বাচন করতে হবে আপনার শিশুর জ্বর এসেছে কিনা এবং এটা করার জন্য আপনাকে থার্মোমিটার ব্যবহার করতে হবে। থার্মোমিটার ব্যবহার করে আপনি যদি আপনার শিশুর বগলে চেক করেন তাহলে যদি সেই পরিমাপ ৯৯.৫° ফারেনহাইট অতিক্রম করে তাহলে সেটা জ্বর। কিন্তু যদি এটা এত না হয় কম হয় যেমন ৯৭.৫ অথবা ৯৮.৫ তাহলে এই অবস্থাতে কোনোভাবেই শিশুকে কোন ঔষধ খাওয়াবেন না। যদি এই জ্বরের পরিধি বাড়তে থাকে তাহলে সেই ক্ষেত্রে পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
শিশুর জ্বর হওয়ার সঠিক পরিমাপ
শিশুর জ্বর মাথাটা অত্যন্ত জরুরি ব্যাপার। সাধারণত অনেকেই ভুল করেন এই জ্বর করতে আবার অনেকেই সবথেকে বড় যে ভুলটা করেন সেটা হচ্ছে যার পরিমাপ না করেই চিকিৎসা শুরু করা। মানুষের শরীরের একটি স্বাভাবিক তাপমাত্রা আছে সেই স্বাভাবিক তাপমাত্রা অতিক্রম করলে সেটাকে সাধারণত জ্বর ধরা হয় কিন্তু সেটা যদি অতিক্রম না করে এমনিতেই যদি মাথা এবং কপাল গরম হয় তাহলে সেই ক্ষেত্রে সেটা জ্বর নয়। একটি শিশুর যদি শরীরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং বাবা-মা যদি সেটা বুঝতে পারে তাহলে অবশ্যই তাকে থার্মোমিটারের মাধ্যমে চেক করে নিতে হবে নিশ্চিতভাবে জ্বর হয়েছে কিনা সেটা জানার জন্য।
এই অবস্থাতে শিশুর শরীরের তাপমাত্রা যদি ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট অতিক্রম করে তাহলে সেটা জ্বর। তার আগে এটা জর নাই তবে ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট অতিক্রম করার সঙ্গে সঙ্গে শিশুকে প্যারাসিটামল এর মাধ্যমে এই জ্বর কমানোর চেষ্টা করতে হবে। স্বাভাবিকভাবেই আপনি প্যারাসিটামল খাওয়াতে পারেন তবে যদি দীর্ঘদিন ধরে এই জ্বর থেকে যায় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এই জ্বর নিয়ন্ত্রণের জন্য।
শিশুর জ্বর হলে চিকিৎসা
শিশুর জ্বর হলে প্রাথমিক চিকিৎসা হচ্ছে প্যারাসিটামল। এর জন্য যাদের পরিবারে শিশু বাচ্চা আছে তাদের অবশ্যই বাসাতে প্যারাসিটামল রাখতে হবে এবং প্যারাসিটামল সাপোজিটরি ব্যাকআপ হিসেবে রাখতে হবে। অবশ্য জ্বর হলে সবার প্রথমে সেটা পরিমাপ করে নিতে হবে এবং জ্বর হয়েছে কিনা নিশ্চিত হতে হবে এরপরে আপনি চাইলে তাকে প্যারাসিটামলের ডোজ দিতে পারেন। সাধারণত প্যারাসিটামলের নির্দিষ্ট কোন দোষ নেই আপনি যখন ইচ্ছে তখন দিতে পারেন প্রতি 6 ঘন্টা পর পর শিশুর জ্বর হলে।
তবে এই বিষয়ে সব থেকে ভালো পরামর্শ নিতে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে তার কারণ হচ্ছে তার সঙ্গে আপনি সরাসরি কথা বলছেন। সে আপনার বাচ্চার আরো অন্যান্য সমস্যা আছে কিনা সেটা উপলব্ধি করতে পারবে এবং সেই অনুযায়ী খুব ভালোভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে এই বিষয়ে।
শিশুর জ্বরের ঔষধ
শিশুর জ্বরের একমাত্র ঔষধ হচ্ছে প্যারাসিটামল। এক্ষেত্রে একেবারেই নবজাতক শিশু বা ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল ড্রপ ব্যবহার করা হয় এবং একটু বড় শিশুদের জন্য প্যারাসিটামল সিরাপ ব্যবহার করা হয়। কে কতটুকু ঔষধ খাবে সেটা নির্ভর করছে সেই শিশুর শারীরিক ওজনের ওপর তাই আগেই আপনাকে একজন একটি শিশুর ওজন মেপে রাখতে হবে অন্তত প্রতি 15 দিন পর পর ওজন মেপে রাখা উচিত। এভাবেই মূলত শিশুকে ঔষধ খাওয়াতে হবে যেটা একেবারে সঠিক পদ্ধতি।