গর্ভবতী গাভীর ক্যালসিয়াম

আপনারা যারা গর্ভবতী গাভীর ক্যালসিয়াম, ওষুধ, ট্যাবলেট এসব নিয়ে চিন্তিত ,আসলে গর্ভবতী গাভীকে কি ধরনের ক্যালসিয়াম খাওয়ানো উচিত বা কোন ওষুধ বা কোন ট্যাবলেট খাওয়ানো উচিত সে সম্পর্কে যদি না জেনে থাকেন ,তাহলে আমি বলব আপনারা ঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আমরা আজকে আমাদের আর্টিকেলের মাধ্যমে আলোচনা করতে এসেছি গর্ভবতী গাভীর ক্যালসিয়াম সম্পর্কে যাবতীয় সকল তথ্য নিয়ে।

আজকের আর্টিকেলে আমরা গর্ভবতী গাভীর ক্যালসিয়াম ওষুধ ট্যাবলেট সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে একটি ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। এছাড়াও আমরা আরও আলোচনা করতে চাই ক্যালসিয়ামের সাথে সম্পর্কিত ফসফরাস ও ভিটামিন ডি নিয়েও। গাভীর ক্যালসিয়ামের প্রয়োজনীয়তা ও অভাবজনিত সমস্যা ও সমাধানের উপায় নিয়ে বিশেষভাবে আপনাদের সাথে আলোচনা করার চেষ্টা করব।

গর্ভবতী গাভীর ক্যালসিয়াম

একটি গর্ভবতী গাভীর জন্য ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের বিশেষভাবেই প্রয়োজন। ক্যালসিয়ামের সাথে ফসফরাস শব্দটি সবসময়ই চলে আসে। ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস সকল গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি ও মাছের একটি গুরুত্বপূর্ণ মিনারেল বা খনিজ উপাদান। পোষা প্রাণীর শরীরে সবচেয়ে বেশি যে মিনারেল সমূহ সাপ্লিমেন্ট হিসেবে সরবরাহের প্রয়োজন পড়ে তা হল ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস। আমাদের দেশের বেশিরভাগ গরুর অভাবজনিত সমস্যা থাকে এই ক্যালসিয়ামে।

তবে একটি গর্ভবতী গাভীর ক্ষেত্রে ক্যালসিয়ামের অভাব যদি থাকে তাহলে সেই গাভীর গর্ভের বাচ্চার ও এ সমস্যা থেকে যাবে তাই অবশ্যই আমাদের গর্ভবতী গাভীর ক্ষেত্রে ক্যালসিয়ামের ঘাটতিটা পূরণ করতে হবে। গবাদি প্রাণীর খাদ্যে যথেষ্ট পরিমাণ এই মিনারেল দুটির অভাব থাকলে প্রাণের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও উৎপাদন দুটোই কমতে থাকে।। সর্বোপরি গরু নানা ধরনের শারীরিক সমস্যায় ভুগতে থাকে এই ক্যালসিয়ামের অভাবে।

ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস এর অভাবজনিত রোগ

ক্যালসিয়ামের অভাবে গবাদি পশুতে বিভিন্ন রোগ ও শারীরিক সমস্যা দেখা যায় এর মধ্যে বিশেষ কিছু সমস্যা আমরা আপনাদের মাঝে তুলে ধরব।

গাভীর শরীরে এর অভাবে দুগ্ধজ্বর বা মিল্ক ফিবার বা হাইপোক্যাল সেমিয়া রোগ দেখা যায়। তাই এসব রোগ থেকে একজন গর্ভবতী গাভীকে দূরে রাখার জন্য অবশ্যই তার শরীরে ক্যালসিয়াম ঘাটতি পূরণ করা আমাদের দায়িত্ব।

পূর্ণবয়স্ক প্রাণীতে ক্যালসিয়াম এর অভাবেম্যালাসিয়া বা অস্থি কমলতা রোগ দেখা যায়। এছাড়াও ফসফরাসের অভাবে গবাদি পশুর টিকা রোগ বা ক্ষুধামন্দা রোগ সহ দেখা দিতে পারে। এই মিনারেলের অভাবে গবাদি পশুর হাড়ের ভঙ্গরতা দেখা যায় এবং পশুর হাঁটতে ও পায়ের উপর ভর দিয়ে দাঁড়াতে বিশেষভাবে অসুবিধার সৃষ্টি হয়। এছাড়াও বাড়ন্ত গবাদিপশুর দৈহিক বৃদ্ধি কমে যায়, ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাসের অভাবে।গরু বা অন্যান্য প্রাণী তে প্রজনন ক্ষমতা কমে যায় এমনকি প্রজন্ম ক্ষমতা একেবারে নষ্ট হয়ে যেতে পারে এই ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের অভাবে।

গবাদি পশুর শরীরে ক্যালসিয়াম ফসফরাস ও ভিটামিন ডি এর প্রয়োজনীয়তা

গবাদি পশুর শরীরে ক্যালসিয়াম ফসফরাস ও ভিটামিন ডি এই তিনটি উপাদানের একটি নির্দিষ্ট ব্যালেন্স থাকার প্রয়োজন হয়। যদি একটি গাভীর মধ্যে এই তিনটি উপাদান প্রয়োজনমতো না থাকে তাহলে বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই দেখা দিতে পারে।

এর ব্যতিক্রম হলে খাদ্যে যথেষ্ট পরিমাণ ক্যালসিয়াম থাকা সত্ত্বেও গবাদি পশুর শরীর তা গ্রহণ করতে পারে না। এরকম অবস্থায় দেখা যায় পশুর শরীরে ৩.১মাত্রায় ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস থাকা দরকার। আর এই জন্য শুধু ক্যালসিয়াম সরবরাহ না করে সাথে খসফরাস ও ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট হিসেবে সরবরাহ করতে হবে একটি গর্ভবতী গাভীর জন্য। গরুর ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট ব্যবহার করা যেতে পারে।

গর্ভবতী গাভীর ক্যালসিয়াম এর প্রয়োজনীয়তা

একটি গর্ভবতী গাভীর জন্য সবচেয়ে বেশি যে মিনারেল বা খনিজ উপাদান এর প্রয়োজন পড়ে তা হল ক্যালসিয়াম। গাভীর বাছুরের হাড়ের গঠন মজবুত করতে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই গাভীর দুধে প্রচুর পরিমাণে এই দুইটি মিনারেল থাকে যা গাভীর শরীর থেকে বের হয়ে যায়।

ফলে স্বাভাবিকভাবে গাভীর শরীরে এই দুইটি মিনারেলসহ নানা ধরনের ভিটামিন ও মিনারেলের অভাব দেখা যায়। গাভী সচরাচর কাঁচা ঘাস ও সুষম দানা দ্বারা খাদ্য থেকে দরকারী মিনারেল গ্রহণ করে থাকে।