গর্ভবতী মায়ের যত্ন

আপনারা যারা গর্ভবতী মায়ের যত্ন সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন তাদের জন্যই আমাদের আজকের এই আর্টিকেল। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করতে এসেছি গর্ভবতী মায়ের যত্ন সম্পর্কে বিশেষ তথ্য নিয়ে।

একজন গর্ভবতী মা যখন জানতে পারেন যে সে গর্ভবতী ঠিক তখন থেকে নিয়মিত খাবারদাবার নিয়মিত যত্ন এবং সতর্কতার প্রয়োজন পড়ে। গর্ভাবস্থায় আপনার শরীর যথেষ্ট পরিমাণে আয়রন পাচ্ছে কিনা সে দিকেও খেয়াল রাখা প্রয়োজন। এছাড়াও গর্ভাবস্থার প্রথম থেকে ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া এবং ফলিক এসিড খাওয়া একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য বিশেষভাবে দরকার।

একজন মা যখন জানতে পারে সে গর্ভবতী তখন থেকে একজন গাইনি ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। নিয়মিত চেকআপ করা নিয়মিত আল্ট্রাস সাউন্ড এর মাধ্যমে একজন গর্ভবতী মা জেনে নিতে পারেন তার গর্ভের সন্তান সম্পর্কে বিশেষ তথ্যগুলো।

এছাড়াও প্রেগনেন্সির প্রথম কয়েক মাস আপনি সব ধরনের ব্যায়ামি করতে পারেন তবে এ সময় হার্ট এটাই সবথেকে ভালো ব্যায়াম। আর যেটাই করুম না কেন অবশ্যই কোন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ব্যায়াম বা হাঁটাচলা করতে হবে।

এর কারণ হলো একজন গর্ভবতী মায়ের জীবনে ব্যাপকভাবে পরিবর্তন আসে গর্ভের প্রথম থেকেই। শুধু তার শরীর নয় তার মনেও বেশ কিছু পরিবর্তন দেখা যায়। গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস একজন মায়ের বিভিন্ন রকমের কষ্ট সহ্য করতে হয়।। খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে মায়ের শরীরের বিশেষ পরিবর্তন এবং হরমোনের পরিবর্তনের কারণে অরুচি মাথা ঘোরা বমি ভাব এর সাথে মেজাজ খিটখিটে হাওয়া গুলো একটি গর্ভবতী মায়ের জন্য সাধারণ উপসর্গ।

গর্ভবতী মায়ের যত্ন

একজন গর্ভবতী মায়ের পুরো নয় মাস বিভিন্ন রকমের যত্ন ও পরিচর্যা রয়েছে যেগুলো মেনে চললে একজন মা একটি সুস্থ সন্তানের জন্ম দিতে সক্ষম হন। তাই একজন মা এবং তার পরিবারের লোকজনদের বিশেষভাবে দায়িত্ব ও কর্তব্য একজন গর্ভবতী মাকে এ সময়ে বিশেষভাবে যত্ন ও পরিচর্যা করা এবং তার পাশে থাকা।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া

গর্ভবতী মায়ের যত্নের অন্যতম একটি হল পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়া। একজন গর্ভবতী মাকে একটি সুস্থ সন্তান জন্ম দেবার জন্য কিছুটা বাড়তি বিশ্রাম ও ঘুমানোর প্রয়োজন রয়েছে। দিনে দুই ঘন্টা ঘুমসহ দৈনিক ন্যূনতম দশ ঘন্টা ঘুমানো মায়ের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। যদি দুপুরে ঘুমাতে নাও পারেন সেক্ষেত্রে পা উপরে তুলে সোফায় বা বিছানায় শুয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে হবে।

ক্যাফিন গ্রহণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা

একজন গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থা কালীন সময়ে বিশেষভাবে ক্লান্তি চলে আসে। আমরা সাধারণত ক্লান্তি দূর করার জন্য কফি খেয়ে থাকি তবে অবশ্যই একজন গর্ভবতী মাকে সতর্কতা থাকতে হবে যে এ সময়ে কফি বা কফিন জাতীয় কোন কিছুই একজন গর্ভবতী মায়ের খাওয়া উচিত নয়। দৈনিক ২০০ গ্রামের বেশি ক্যাফিন গ্রহণ করা একেবারেই ঠিক নয় অতিরিক্ত ক্যাফিন গ্রহণের ফলে কম ওজনের শিশুর জন্ম গ্রহণ করে থাকে এছাড়াও মিসক্যারেজের মত ঘটনা ঘটতে পারে তাই এ ব্যাপারে মাকে বিশেষভাবে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

গর্ভাবস্থায় দাঁতের যত্ন

অনেক গর্ভবতী মায়েদের দাঁত ও নারীর সমস্যায় ভুগতে হয় গর্ভাবস্থার সময়। হরমোন জনিত কিছু পরিবর্তনের কারণে একজন গর্ভবতী মায়ের দাঁত ও মাড়িতে কিছু প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে এ প্রতিক্রিয়ার ফলে প্রায় পঞ্চাশ থেকে 70% গর্ভবতী মা এর প্রদাহে আক্রান্ত হন। তাই এ সময় বিশেষভাবে দাঁতের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। একজন গর্ভবতী মায়ের সারা দিনে তিনবার ব্রাশ করা প্রয়োজন। খাবার শেষ করার পর ব্রাশ করে নিতে হবে।

মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখা

একজন গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থার সময় মানসিক চাপ ও উদ্বেগের পরিমাণ যদি স্বাভাবিকের থেকে বেশি হয় তবে তা গর্ভাবস্থায় বিষন্নতা ও অন্যান্য মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা সূচনা করতে পারে। তাই এ সময় একজন গর্ভবতী মাকে তার খাওয়া দাওয়া চলাফেরার পাশাপাশি হাঁটাহাঁটি নিয়মিত ভাবে করতে হবে। বেশি বেশি পানি পান করতে হবে। নামাজ কালামসহ আল্লাহর ইবাদত করতে হবে। এবং সারাক্ষণ হাসিখুশি থাকতে হবে।