গর্ভাবস্থায় বমি হওয়ার কারণ

আপনাদের সকলকে স্বাগতম জানাই আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে। আপনারা যারা গর্ভবতী মায়েরা রয়েছেন তাদের জন্যই মূলত আমাদের আজকের আর্টিকেলটি তৈরি করা হয়েছে। গর্ভাবস্থায় বমি হওয়া খুবই স্বাভাবিক একটি লক্ষণ। বেশিরভাগ মায়েদেরই গর্ভকালীন সময়ে খাবারে অরুচি মাথা ঘোরা এবং বমি বমি ভাব হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক।

খুব কম মায়েদের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে তাদের গর্ভকালীন সময়ে বমি হয় না। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় রক্তে নানা ধরনের হরমোনের পরিমাণ অনেক আংশিক আগের তুলনায় বেড়ে যাওয়ার কারণে এর মধ্যে বিটা এইচ সির পরিমাণ অনেক বেশি বেড়ে যায় মূলত সেই কারণে গর্ভাবস্থায় বমি হয়ে থাকে। তবে অনেকের ধারণা রয়েছে যে ভিটামিন বি ওয়ান বি সিক্স এবং আমিষের অভাব থাকলে বমির সমস্যাটা বেশি হয়ে থাকে। তাই আমরা বলে থাকি যা গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব অথবা বমি হওয়াটা খুবই পরিচিত একটি সমস্যা।

অধিকাংশ গর্ভবতী নারীরা এই সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে তবে সাধারণত এটি তেমন গুরুতর কোন সমস্যা নয়। কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করে সহজে বমি বমি ভাব এবং বমি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয় তবে এ বিষয়ে আমাদের জেনে রাখা জরুরী।

গর্ভাবস্থায় কখন থেকে বমি বমি ভাব হয়ে থাকে

গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব অথবা বমি করার যে প্রবণতা রয়েছে তাকে আমরা সাধারণত ভাবে ইংরেজিতে মর্নিং সিকনেস বলে থাকি। মর্নিং সিকনেস এর সাথে প্রায় প্রত্যেকটি মা এর পরিচিত রয়েছে। নামে মর্নিং বা সকাল থাকলেও আসলে দিনের যে কোন সময়ই গর্ভাবস্থায় আপনার বমি বমি ভাব হতে পারে এবং বমি হতে পারে। তবে সাধারণত গর্ভাবস্থার প্রথম দিক এর দিকে বেশি এ সমস্যাটি দেখা দিতে পারে।

তবে ১২ থেকে ১৪ সপ্তাহের মধ্যে অর্থাৎ তিন থেকে চার মাসের মধ্যে এই বমি বমি ভাবটা নিজে থেকেই কমে আসে। খুব কম মায়েদের গর্ভাবস্থার পুরো সময়টি জুড়ে এই বমি বমি ভাব অথবা বমি হতে পারে তবে সবার ক্ষেত্রে তা হয় না। গর্ভধারণের পর থেকে অনেকের বমি বমি ভাব অথবা বমি দেখা দিতে পারে তাই অনেকে মনে করেন যে এটি হয়তো গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ। তবে সব গর্ভবতী নারীরায় বমির সমস্যা সম্মুখীন হয় না সেটাও খুব স্বাভাবিক তাই এ নিয়ে দুশ্চিন্তা করার মত কিছুই নেই।

গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব হলে কি করব

গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব অথবা বমি যদি বেশি হয়ে থাকে তাহলে কমানোর জন্য কোন সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই বললেই চলে। এর কারণ হলো প্রতিটি গর্ভাবস্থায় একে অপরের থেকে আলাদা তাই একই চিকিৎসায় যে সবার সমস্যার সেরে যাবে এটি কিন্তু ভাবা যাবে না। তবে হ্যাঁ আমরা চাইলে খাদ্য তালিকায় এবং দৈনন্দিন জীবনে সহজ কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমে এই সমস্যা অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করতে পারব। এর জন্য আমাদের কিছু খাবার খেতে হবে।

অতিরিক্ত বমি কমানোর জন্য আদায়যুক্ত খাবার খাওয়া ভালো। গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব এবং বমি কমাতে আদা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে এমনকি একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গর্ভকালীন বমি ভাব ও বমি উপশম এ আদা একটি ঔষধের সমান কার্যকর। এছাড়াও অতিরিক্ত বমি হলে কাঁচা আদা চিবিয়ে খেতে হবে অথবা সালাত কিংবা ছোলা মাখা খাওয়ার সময় পেঁয়াজ মরিচের সাথে আদা কুচি মিশিয়ে নিতে হবে।

এছাড়াও গরম পানিতে শুধু আদার কুচি দিয়া আগা চা বানিয়ে খেলেও কিন্তু বমিটা অনেকাংশেই কমে যায়। আর মর্নিং সিকনেস অর্থাৎ সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর যদি বেশি শরীর খারাপ হয়ে যায় এবং বমি বমি ভাবটা বেশি হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই মাথায় রাখবেন যে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরই হালকা কিছু খাবার খেয়ে পানি খেতে হবে কারণ খালি পেটে বেশিক্ষণ থাকলে গর্ভাবস্থায় বমি হওয়ার সম্ভাবনাটা অনেকাংশে বেড়ে যায়।