গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের ঔষুধ

প্রতিটি বিবাহিত নারীদের মাঝেই স্বপ্ন থাকে মা হওয়ার। মা হলে যেন একজন মেয়ের জীবনে পূর্ণতা পায়। যে নারীরা মা হতে পারেন না তাদের ব্যর্থতার যেন কোন শেষ নেই। তাই মা হওয়া একজন মেয়ের কাছে অন্যরকম এক ভালো লাগার অনুভূতি যা বলে প্রকাশ করার মতো নয়। নিজের জীবনের অংশ একটি সন্তান ধীরে ধীরে যখন সেই ছোট্ট শিশু দেহের ভেতর তার অস্তিত্ব জানান দেয় হবু মায়ের কাছে এর চেয়ে সুখের মুহূর্ত আর কিছুই হতে পারে না।

আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের ঔষধ সম্পর্কে। তাই আপনাদের প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আমরা হাজির হয়েছি আমাদের আর্টিকেল এর মাধ্যমে। আমাদের আর্টিকেল পড়লে আপনারা এই প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।

গর্ভধারণের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু করে 12 সপ্তাহ পর্যন্ত সময়কে ধরা হয় গর্ভকালীন সময়ে ফাস্ট ট্রাই মিস্টার। এ সময় একজন গর্ভবতী মায়ের বিশেষ যত্ন এবং সতর্কতার সাথে দিনগুলো পার করা উচিত। কারণ গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসে একজন গর্ভবতী মায়ের বেশ কিছু ঝুঁকি থাকে যা থেকে তার গর্ভের সন্তান মিসকারেজ হয়ে যেতে পারে।

অধিকাংশ গর্ভপাত এই প্রথম তিন মাসে হয়ে থাকে এজন্য প্রথমদিকের এই সময়টা সবচাইতে ঝুঁকিপূর্ণ। বমি বমি ভাব ববি হওয়া কোষ্ঠকাঠিন্য কিংবা প্রচন্ড গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে থেকে। এছাড়াও এই সময়টিতে এসে একজন গর্ভবতী মায়ের ডাইবেটিক্স হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

মাথা ঘোরা বা পেটে প্রচন্ড ব্যথাও হতে পারে গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে। তাই এ সময়ে ঝুঁকি এড়াতে সিঁড়ি বেয়ে ওঠা ভারী জিনিস বহন করা কিংবা ঠান্ডা লাগে এমন কাজ না করা ভালো। এছাড়াও কাপড় ধোয়া ঘর ঝাড়ু দেওয়া বা মশার মতো কাজগুলো থেকে দূরে থাকতে হবে একজন গর্ভবতী মায়ের।

গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস দূরের জার্নি করা একেবারেই ঠিক নয় এতে গর্ভের শিশু বিশেষ ক্ষতির পাশাপাশি গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনাও রয়ে যায়। রাস্তা খারাপ থাকলে সম্ভব হলে ধীরে ধীরে হেঁটে যাওয়া যেতে পারে এতে ক্ষতির সম্ভাবনা কম। তাই গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে বিশেষ যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া

একজন গর্ভবতী মায়ের প্রথম থেকে শুরু করে পুষ্টিকর খাবার পরিমান মত খাওয়া উচিত এতে করে শিশুর বিকাশ ভালোভাবে বৃদ্ধি হয়। গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে এসে অনেক মায়েরায় ভালো করে খাওয়া দাওয়া করতে পারেনা এরপরও যতটুকুই পারুক না কেন ততটুকুই চেষ্টা করতে হবে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার জন্য।

ফল এবং বেশি বেশি সবুজ শাকসবজি এ সময় থেকেই খেতে হবে যাতে কোন জন্মগত সমস্যা না থাকে সেজন্য এগুলি আপনার শিশুকে সুরক্ষা দিবে। এর পাশাপাশি শ্বেতসারযুক্ত খাবার খেতে হবে যেমন রুটি ভাত ভুট্টা এবং আলু এসব খাবার আপনার শক্তি যোগাবে। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিম ডিম ডাল মুরগি মাছ এবং মাংস এসব খাবার শরীর গড়ে তুলতে সাহায্য করে। এছাড়াও গর্ভাবস্থার প্রথম দিক থেকেই দুধ ডিম দই থানা ছোলা এগুলো নিয়মিত খাওয়া প্রয়োজন।

তিন মাসের গর্ভবতী মায়ের ঔষধ

প্রথম তিন মাসে একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য বিশেষ কোনো ওষুধের প্রয়োজন পড়ে না। তবে প্রথম তিন মাসে ফলিক অ্যাসিড নিয়মিত খাওয়া প্রয়োজন। কারণ বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন ফলিক এসিড হল প্রেগনেন্সির সুপারহিরো।

ফলিক এসিড না খেলে গর্ভের সন্তান বিভিন্ন সমস্যায় ভুগতে পারে। এমনকি এর ফলে আপনার গর্ভের সন্তান ত্রুটি নিয়েও জন্মগ্রহণ করতে পারে। তাই তিন মাসের গর্ভবতী মায়ের জন্য প্রথম থেকেই ফলিক এসিড খাওয়া প্রয়োজন। এর পাশাপাশি অবশ্যই প্রতিদিন নিয়ম করে দুধ ডিম কলা সবুজ শাক-সবজি এবং ফলমূল খাওয়া একজন গর্ভবতী মায়ের বিশেষভাবে দরকার।