চন্দ্রগ্রহণের সময় গর্ভবতী ২০২৩

সমাজে কিছু  কুসংস্কার রয়েছে যেগুলো আগের দিনের মানুষেরা বেশি মেনে চলেন। যেমন অনেকেই বলেন যে জমজ কলা খেলে নাকি যমজ সন্তানের জন্ম হয়। তবে এটি যে একেবারেই ভুল একটি ধারণা সেটি হয়তো অনেকেই বুঝতে চান না। ঠিক সেরকমই আরেকটি বিষয় রয়েছে সেটি হল চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণ।

আমাদের সমাজের অনেক মানুষেরাই বিশ্বাস করে থাকেন যে চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণের সময় গর্ভবতী নারীদের অনেক কিছু মানিয়ে চলতে হয়। যেমন অনেকেই বলে যে চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণের সময় একজন গর্ভবতী মাকে কোন মাছ মাংস বা তরি তরকারি এ জাতীয় কোন কিছু কাটাকাটি করা যাবে না কারণ যদি এ সময় একজন গর্ভবতী মা কিছু কাটাকাটি করেন তাহলে তার গর্ভস্থ সন্তানের বিকলাঙ্গ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এই ধারণাগুলো যে সম্পূর্ণ ভুল এটি আমাদের জেনে রাখতে হবে।

উপরে উক্ত দুইটি ধারণায় হলো অমূলক এবং সম্পূর্ণ কুসংস্কার। ইসলামী শরিয়াতে এমন বিশ্বাসের কোন সুযোগ নেই। ইসলাম পূর্ব জাহিলি যুগের মানুষের বিশ্বাস ছিল এগুলো তবে এখনকার যুগে এসে যদি এগুলো আমরা বিশ্বাস করি তাহলে মুসলিম হিসেবে পরিচয় দেয়া আমাদের উচিত নয়।

আমরা যেহেতু মুসলিম সেহেতু আমাদের ইসলামের নিয়ম কানুন গুলোই মেনে চলতে হবে। তাই ইসলামে দৃষ্টিতে চন্দ্রগ্রহণ এবং সূর্যগ্রহণ সম্পর্কে যে হাদিসগুলো রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে আমাদের জেনে নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন।

ইসলামী শরীয়তে চন্দ্রগ্রহণের এবং সূর্য গ্রহণের কিছু ব্যাখ্যা

ইসলামী শরীয়াতে চন্দ্রগ্রহণ এবং সূর্য গ্রহণ নিয়ে কিছু আলোচনা আমাদের আর্টিকেলের এই অংশে আমরা করব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের ভুল বিশ্বাস খণ্ডন করে বলেন চন্দ্র বা সূর্যগ্রহণ কারো জন্ম মৃত্যুর কারণে হয় না এগুলো আল্লাহর নির্দেশনাবলীর দুইটি নিদর্শন মাত্র।

যখন তোমরা তা সূর্য গ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ দেখবে তখন নামাজে নিমগ্ন হবে। চন্দ্রগ্রহণ এবং সূর্য গ্রহণ আল্লাহ তায়ালার অশেষ একটি নিয়ামতের মধ্যে পড়ে। তাই চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণ নিয়ে যেসব কুসংস্কার রয়েছে সেগুলো থেকে আমরা বিরত থাকবো।

চন্দ্রগ্রহণ এবং সূর্য গ্রহণ এর সময় গর্ভবতী মায়েদের করণীয়

আপনারা অনেকেই এই প্রশ্নটি আপনাদেরকে করেছেন চন্দ্রগ্রহণ এবং সূর্য গ্রহণের সময় একজন গর্ভবতী মায়ের যেসব করেনি ও রয়েছে সে সম্পর্কে আমাদের আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আলোচনা করব।

চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণ এর সময় একজন গর্ভবতী মায়ের বেশি বেশি আল্লাহ তায়ালার ইবাদত জিকির এবং নামাজ আদায় করা প্রয়োজন। কারণ আমাদের সমাজে যেসব কুসংস্কার গুলো রয়েছে চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণ এর সময় সেগুলো থেকে আমাদেরকে বিরত থাকতে হলে অবশ্যই এ সময়টিতে বেশি বেশি আল্লাহর ইবাদত করতে হবে।

একজন গর্ভবতী মায়ের এসময়ে লম্বা কেরাত ও লম্বা রুপো সিজদার মাধ্যমে নামাজ আদায় করা দরকার।চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণ হল আল্লাহর নির্দেশনাবলীর দুটি নিদর্শন মাত্র। মুসলিম শরীফের ৯০১ নম্বর হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন যখন তোমরা চন্দ্রগ্রহণ দেখবে তখন তার শেষ হওয়া পর্যন্ত বেশি বেশি আল্লাহর জিকির করবে।

অর্থাৎ সূর্য ও চন্দ্র গ্রহনের সময় একজন প্রকৃত মুমিনের কর্তব্য হল সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণ দূরীভূত হওয়ার আগ পর্যন্ত নামাজ জিকির কোরআন তেলাওয়াত ইত্যাদি নেক আমলের মধ্যে মশগুল থাকা। গর্ভবতী নারীদের জন্য এসব একই করণীয় রয়েছে। তাই আমাদের সমাজের যেসব কুসংস্কার রয়েছে যেসব প্রচলিত রেওয়াজ রয়েছে সেগুলোর কোন ভিত্তি নেই ইসলামের দৃষ্টিতে।

তাই আমাদের সমাজের মানুষের উচিত দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো। সমস্ত রকমের কুসংস্কার বাদ দিয়ে মন থেকে আল্লাহর জিকির করা আল্লাহর ইবাদত করা এবং বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করা একজন নেক মুমিনের দায়িত্ব ও কর্তব্য।

আশা করি আপনারা আমাদের আর্টিকেল থেকে জেনে নিতে পেরেছেন চন্দ্রগ্রহণের সময় একজন গর্ভবতী মায়ের কি করা উচিত সে সম্পর্কে সকল তথ্যগুলো। আরো কিছু জানার থাকলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন আমরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করব আপনাদের সকল প্রশ্নের উত্তর গুলো নতুন নতুন আর্টিকেলের মাধ্যমে দেওয়ার জন্য।